কলেজ শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদী মার্চ
Published: 23rd, January 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে আলোচিত ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পদায়নের পর থেকেই অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এবার একই দাবিতে প্রতিবাদী মার্চ করেছেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার কলেজের ডিগ্রি শাখার কলা ভবনের সামনে থেকে পরীক্ষা ভবন পর্যন্ত প্রতিবাদী মার্চ কর্মসূচি পালন করা হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকা কলেজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের খিচুড়ি খাইয়ে আলোচনায় আসেন তৎকালীন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যখন দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হল বন্ধ করা হয়, তিনি (অধ্যক্ষ) ছাত্রলীগ নেতাদের আবাসিক হলে থাকার ব্যবস্থা ও খাবারের ব্যবস্থা করেন। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ১২ আগস্ট অধ্যক্ষ ইউসুফ ও উপাধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন।
ভিক্টোরিয়া কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে ঢাকা কলেজের আলোচিত অধ্যক্ষ ইউসুফকে পদায়ন করা হয়। এর পর থেকে শিক্ষার্থীরা তাঁকে অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছেন। দেওয়া হয় স্মারকলিপি। বৃহস্পতিবার বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে দাওয়াত করেন শিক্ষকরা। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি কলেজের পরীক্ষা ভবনে আসেন। বিষয়টি জানাজানির পর শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন এবং কলা ভবন থেকে কলেজের পরীক্ষা ভবন পর্যন্ত প্রতিবাদী মার্চ কর্মসূচি করেন।
বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান পল্লব বলেন, ‘রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, ছাত্রলীগকে খিচুড়ি খাওয়ানো সেই অধ্যক্ষকে কেন অতিথি করা হলো। আমরা এর বিচার চাই।’
ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঁইয়া জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফকে বাংলা বিভাগের প্রধান করে এ কলেজে পদায়ন করা হয়। পরে বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা তাঁকে অপসারণ করতে লিখিত আবেদন দিয়েছে। তাই আবেদনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এখন আর তাঁর হাতে নেই, তা শিক্ষার্থীদের অনুধাবন করতে হবে।
তবে অধ্যাপক ইউসুফ বলেন, এককভাবে ছাত্রলীগকে খিচুড়ি খাওয়ানো ও রাতে হোস্টেলে থাকতে দেওয়ার তথ্য সঠিক নয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজউক চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল
আদালতের আদেশ অনুসরণ না করে ‘মিলেনিয়াম সিটি’ প্রকল্পের মাটি ভরাট অব্যাহত রাখায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন। অপর তিনজন হলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আদালত অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না।
আদেশের বিষয়ে পরে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না প্রথম আলোকে বলেন, মাটি ভরাটসহ মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকার জেলা প্রশাসকের। আদেশ অনুসারে তা প্রতিপালন না হওয়ায় চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনটি করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত রাজউক চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন।
এর আগে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত টোটাইল মৌজায় বিদ্যমান টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাটের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জনস্বার্থে গত বছর একটি রিট করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ জানুয়ারি হাইকোর্ট টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাট কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেন। একই সঙ্গে টোটাইল খাল ভরাট করে গড়ে ওঠা মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের সব কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
বেলা জানায়, হাইকোর্টের আদেশে টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ের বর্তমান অবস্থা তদন্ত, মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড কর্তৃক মাটি ভরাটের ফলে টোটাইল খালের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে, তা নিরূপণ এবং হাউজিং কোম্পানি কর্তৃক টোটাইল মৌজায় অবস্থিত জলাশয়, বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ও নিচু কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন প্রতিরোধ বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকার জেলা প্রশাসককে আদালতের আদেশ পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন ওই আদেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড আপিল বিভাগে আবেদন করে। বেলা জানায়, আপিল বিভাগ শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৯ এপ্রিল পক্ষগুলো মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মাটি ভরাটের সব কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। এর ফলে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পে নতুন করে মাটি ভরাটসহ কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ নেই। আদালতের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তা লঙ্ঘন করে সম্প্রতি মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড কর্তৃক অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পে মাটি ভরাটসহ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলমান রেখেছে এবং প্লট তৈরি করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে চটকদার বিজ্ঞাপন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার আকারে প্রচার করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করে।
আরও পড়ুনখাল ভরাট ও মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা২২ জানুয়ারি ২০২৪