Samakal:
2025-04-24@17:27:24 GMT

পৃথিবী এক প্রকাণ্ড কবরস্থান

Published: 23rd, January 2025 GMT

পৃথিবী এক প্রকাণ্ড কবরস্থান

অনেক আগে, ছোটবেলায়, একটা গানে শুনেছিলাম, এই পৃথিবী একটা পান্থশালা– যেখানে মানুষেরা আসে, বিশ্রাম নেয় এবং চলে যায়। তখন এর নিগূঢ় অর্থ তেমন বুঝিনি। আরেকটু বড় হলে পৃথিবীটাকে একটা গ্রহ হিসেবে দেখতে শিখলাম। বলা হয়েছিল, এই গ্রহটার কাজ হচ্ছে সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ করে, এখানে বসবাসরত মানুষদের আশ্রয় দেওয়া। কিন্তু শেখানো হয়নি যে এইই সেই গ্রহ, যেখানে সব প্রাণীরই জন্ম হয় এবং সব প্রাণীরই মৃত্যু হয়।
আরও পরে, যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেলাম, তখন অনুধাবন করলাম যে, এই পৃথিবী শুধুই একটা গ্রহ নয়– এ এক জীবন্ত স্মৃতিস্তম্ভ, এক স্মৃতির মিনার, এক নীরব কবরস্থান; যেখানে অগণিত মানুষের জীবন ফুরিয়েছে এবং নতুন জীবন শুরু হয়েছে। সহস্রাব্দ ধরে এই মাটি প্রাণীদের এক শেষ বিশ্রামের স্থান হিসেবে কাজ করেছে, যেই মাটির নিচে লুকিয়ে আছে তাদের শারীরিক অস্তিত্বের অবশেষ, যারা একসময় এর ওপর দিয়ে হেঁটে বেড়িয়েছে। আমাদের অনেকের পিতা-মাতাই এই পৃথিবীতে একসময় বিচরণ করেছেন, কিন্তু এখন তারা নেই। আছেন– তবে এই মাটির নিচে; অনেকে কবরে মিশে গেছেন, অনেকে ছাই হয়ে এই বাতাসেই, এই মাটিতেই, এই পানিতেই মিশেছেন।
আমরা যদি আমাদের পায়ের নিচের এই মাটির সাথে কথা বলতে পারতাম, তাহলে মাটি যেন ফিসফিসিয়ে বলতে পারত সেইসব গল্প, যা আমরা প্রায় সারাক্ষণই ভুলে থাকি, যা আমাদের মনে রাখতে বেগ পেতে হয়– সাফল্য ও পরাজয়ের গল্প, সৃষ্টি ও ধ্বংসের গল্প। যদি আমরা গভীর মনোযোগ দিয়ে এই ফিসফিসানিগুলো শুনি, তাহলে হয়তো আমরা এই গল্পগুলোর প্রতিধ্বনি কিছুটা হলেও শুনতে পারব। এমন করে ভাবলে, এই পৃথিবীকে আমার কাছে শুধু এক বাসস্থান মনে হয় না, বরং এক স্মৃতির কবরস্থান মনে হয়, মানব ইতিহাসের এক নীরব সংরক্ষক মনে হয়।
কল্পনা করুন, এই পৃথিবীর মাটিতে যাদের কবর হয়েছে, তারা সবাই একদিন একসাথে জেগে উঠলেন, একসাথে কথা বলা শুরু করলেন, এবং আমরা সেই শব্দগুলো আলাদা আলাদা করে শুনতে পেলাম এবং রেকর্ড করতে পারলাম। আমরা কী জানি আমাদের বসবাসের আগে, গেল দুই লাখ বছর ধরে এই পৃথিবীতে কত মানুষ বসবাস করে গেছেন? জানি না। তবে আজকাল শোনা যায় এআই একটা হিসাব দিতে পারে।
এই মাটিতে মিশে থাকা স্মৃতিগুলো জীবন্ত হয়ে উঠলে আমরা কী করব? সেই স্মৃতিগুলো যখন আমাদের জানাবে; প্রাচীন আমল থেকে শুরু করে সভ্যতার সত্য কথাগুলো যখন আমরা জানব– কীভাবে তারা গড়ে উঠেছিল, আবার নিজেদের ভুলেই কীভাবে পতন ঘটিয়েছিল। তখন?
এই মাটির সাথে কথা বলতে পারলে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার একটা সুযোগ পেতে পারতাম। কিন্তু আমরা, মানুষেরা, লোভ ও ঔদ্ধত্য দ্বারা নেশাগ্রস্ত, সেই কথাগুলো উপেক্ষা করে চলেছি– মাটির কথা শুনছি না।
কল্পনা করুন, সফোক্লিস ও ইউরিপিদিসের চরিত্ররা সবাই আমাদের চারপাশে জেগে উঠেছে, অ্যাকিলিস ও আলেক্সান্ডার আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, মীর মশাররফ হোসেনের মহাকাব্য জীবন্ত হয়ে উঠেছে, হ্যামলেট ফিরে এসেছে। এই চরিত্রগুলো কি তাদের জীবদ্দশায় এই মাটির সাথে কথা বলেছিল? বলত? এই মাটি অন্য যে প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখে তাদের সাথে কথা বলেছিল? ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীতে যদি ৮০০ কোটি মানুষের বসবাস হয়ে থাকে, তাহলে গেল দুই লাখ বছরে এখানে কত মানুষ বাস করে গেছেন? এক লাখ কোটি? কিংবা তারও বেশি? এই এক লাখ কোটি মানুষ তো এই বিশালায়তনের কবরস্থানেই শুয়ে আছেন। তাহলে এই পৃথিবীকে প্রকাণ্ড এক কবরস্থান মনে করতে অসুবিধে কী?
শুধু মারা যাওয়ার জন্যই কি প্রাণীদের জন্ম হয়নি? অনেকে বলবেন– এ একটা জন্ম-মৃত্যুর চক্র। এই চক্রই আমাদের এসব চিন্তা করতে বুদ্ধি দেয়, শক্তি জোগায়। আমাদের যদি মৃত্যু না হতো তাহলে কী হতো? আমরা জন্মাতে জন্মাতে, এই পৃথিবী একসময় আমাদেরই ভারে কোনো এক গহ্বরে ডুবে যেত। প্রাণীরা মরছে বলেই এ এখনও টিকে আছে।
হয়তো তাই। হয়তো আমরা শুধুই মৃত্যুর মুখাপেক্ষী থেকে আনন্দ হাসিতে দুঃখে জীবন কাটিয়ে মৃত্যুর কাছে ফিরে যাব। কিন্তু যতদিন, যত বছর বেঁচে রইলাম, ততদিন এই মাটির সাথে কথা বলব না? এর শুশ্রূষা করব না? কেমন করে আমাদের উত্তরাধিকার সংরক্ষণ করতে পারি সেই চিন্তা করব না? এই মাটি কি নীরবে গভীর কোনো আহ্বান আমাদের জানায় না? এই মাটি কি আমাদের অতীতের সঙ্গে পুনর্মিলনের ডাক দেয় না? এক লাখ কোটি মানুষ যদি এই পৃথিবীতে মৃত্যুবরণ করে থাকে, তাহলে তাদের কারণে আরও ১০০ গুণ অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। তাহলে আমাদের এই মাটি খুঁড়লে তো শুধুই হাড়গোড় পাওয়ার কথা। কিন্তু আমরা কি তা পাই? আমরা শুধুই মাটি পাই। 


এই মাটি আমাদের লক্ষ বছর ধরে ধারণ করে আছে। মাটি কি আমাদের জীবন-মৃত্যুর চক্র সম্পর্কে কোনো শিক্ষা দেয়? আমাদের যখন মৃত্যু হয়, আমরা জৈবিক সারে রূপান্তরিত হই। সেই পরিস্থিতিতে আমরা কি এই মাটির মাধ্যমে অন্য মানুষদের, অন্য প্রাণীদের বেঁচে থাকার পুষ্টি জোগাই না? তাদের বেঁচে থাকার মাধ্যম হই না? এ এক কঠিন বাস্তবতা। আমি নিজে আরেকজনের শারীরিক পুষ্টি– এই বাস্তবতা আমাদের জীবনের নাজুক অবস্থার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। কল্পনা করুন, আজ আমরা আপনাকে কবর দিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম। তারপর পঞ্চাশ বছর পর সেই কবরের ওপর দিয়ে পিচঢালা এক সড়ক তৈরি হলো। লক্ষ কোটি মানুষ আপনার কবরের ওপর দিয়ে যাতায়াত শুরু করল। এই বাস্তবতা জানার পর আমাদের মানসে কোন কোন চিন্তার উদয় হতে পারে? মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পাসের বাড়িতে তিনটা কবর পেয়েছিলেন আমাদের বাবা। কাঁচা কবর, সদ্য কবর দেওয়া হয়েছে এমন। আম, লেবু ও পেয়ারা গাছের নিচে। যতগুলো বছর আমরা ঐ বাড়িতে ছিলাম, তত বছর সেই কবরগুলোর মাটির ওপর পা দিইনি। বাবাকে দেখেছি দোয়া করতে। আমাদের পর ঐ বাড়িতে যারা বসবাস করেছেন, তারা জানতেন না যে বাড়িতে কবর আছে। চলে আসার সময় আমরা তাদের দেখা পাইনি যে জানিয়ে আসব। কয়েক দিন আগে খবরের কাগজে পড়লাম, পূর্বাচলের কোনো এক আজিজ মোল্লার তৈরি এক সামাজিক কবরস্থান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ হয়ে গেলে, কালনীতে এসে বসবাস শুরু করে, সেখানে এক কবরস্থান তৈরি করেন তিনি। সেটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আর কেউ এখানে মড়া গেঁথে রাখতে পারবে না। এখন এই কবরস্থানে বসতবাড়ি তৈরি হবে।
আপনি কি চাইবেন আপনার কবরের ওপর বাড়ি তৈরি হোক? শেক্সপিয়র পৃথিবীকে এক মঞ্চ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। মানুষের জীবনের অর্থ খোঁজার চেষ্টার মঞ্চ। ধরুন, সেই মঞ্চ একদিন মেরু পরিবর্তন করল। উত্তরের চৌম্বকক্ষেত্র চলে গেল দক্ষিণে, আর দক্ষিণের উত্তরে। তাহলে এই মঞ্চে কী ঘটবে? ধ্বংসযজ্ঞ বয়ে যাবে। আমরা হয়তো দূর ভবিষ্যতে এই ধ্বংসযজ্ঞকে দুর্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করব। তবে এই দুর্যোগে বেশির ভাগ অভিনেতার মৃত্যু হবে। মৃত্যুর পর তারা কোথায় যাবেন? এই মাটিরই নিচে। এদের মধ্যে কেউ কেউ ফসিল হয়ে যাবেন; কয়েক হাজার বছর পর তাদের পাথরে লেপটানো দেহের ভাঁজ খুঁজে পাওয়া যাবে। মনে পড়ে কেমন করে সেই ডাইনোসর প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল?
আমাদের এই শহরগুলো, যা আমাদের শ্রেষ্ঠত্বের স্মৃতিস্তম্ভ, সেগুলোও এই মাটিতেই দেবে যাবে। এগুলো কি আসলেই আমাদের শ্রেষ্ঠত্বের স্মৃতিস্তম্ভ? নাকি আমাদের বোকামির ফসল? আমাদের শহর যখন ধ্বংসাবশেষে পরিণত হবে, তখন আমাদের মাঝে যারা বেঁচে রইবেন, তারা কি সেই ছাই-পাথরের মধ্যে বসে নিজেদের দিকে তাকাবেন? আমাদের আগে যারা বেঁচে ছিলেন, তাদের স্মরণ করবেন?
আমাদের এই পৃথিবী শুধু মানুষের কবরস্থান নয়। এ এক মহাজাগতিক সমাধিস্থল, যেখানে অন্য প্রাণীরাও তাদের প্রিয়জনদের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে দেখেছে এবং দেখে। আমরা সেই প্রাণীদের ভাষা বুঝতে পারি না, তাই জানতে পারি না। আমাদের বায়োস্ফিয়ারের বাইরে থেকেও জীবাশ্ম এসে এখানে নতুন জীবন পেয়েছে, আবার মৃত্যুবরণও করছে। এই বিশাল সমাধিক্ষেত্র কি আমাদের তুচ্ছতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে না? একই সাথে একে রক্ষার দায়িত্বও কি আমাদের ওপর এসে পড়ে এবং একটা অনন্য উদ্দেশ্যের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে না? মৃতদের সম্মান জানাতে এবং তাদের গল্প থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলছে না? এ এক মধুর বিষাদে ভরা দায়িত্বের উপলব্ধি। পৃথিবী নামের এই প্রকাণ্ড কবরস্থানে কি শুধুই আমাদের শারীরিক সমাধি হয়? তা হয়তো না। আমাদের ধারণা, বিশ্বাস, মতবাদ, দর্শন– এসব কিছুর সমাধিস্থল আমাদের এই পৃথিবী। গেল ছয় হাজার বছরের ইতিহাস দেখলেই আমরা বুঝতে পারি কত আদর্শের মৃত্যু হয়েছে।
এখানে আমরা দেবতাদেরও কবর দেই। প্রাচীন কালের মহা-পরাক্রমশালী দেবতা এবং রাজারানীরা যাদের ভয়ে একসময় আমাদের সামগ্রিক মানস থরথর করে কাঁপত, তাদের স্মৃতিরও সময়ের প্রবাহে মৃত্যু হয়। একসময় যারা ছিলেন আশা ও ভয়ের প্রতীক, তাদের মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, এই প্রবাহে কিছুই চিরস্থায়ী নয়। তাদের স্থানে কী আসে? কে আসে? কারা আসে? আমাদের অভিযোজনের ক্ষমতা, নতুন মিথ ও নতুন বোঝাপড়া তৈরির মাধ্যমে আমরা পুরোনোকে কালের গর্ভে সমাধিস্থ করি। এর অর্থ হচ্ছে, এই অতিকায় কবরস্থান আমাদের সভ্যতার শেষ নয়। বরং একটা শুরু বলে আমরা ভাবতে পারি। একটা ভিত্তি, যার ওপর নতুন পৃথিবী গড়ে ওঠে। পৃথিবী নামের এই কবরস্থান আমাদের সামনে আরও একটা গভীর সত্য তুলে আনে। এটা সেই জমিন, এটা সেই বাতাস, এটা সেই পানি– যেখানে মানবের অহংকার বারবার পতনের কারণ হয়েছে। আমাদের মাটি যুদ্ধ, শোষণ এবং ক্ষমতার পেছনে অন্ধ প্রতিযোগিতার সাক্ষী। কত লাখ নিরপরাধ মানুষের সমাধি ন্যায়বিচারের জন্য মাটির নিচে এখনও কাঁদছে এবং তাদের এই নীরবতা আমাদের লোভের মূল্য স্মরণ করিয়ে দেয়। এই সমাধিগুলো আমাদের অপরাধের মুখোমুখি করে– শাস্তি হিসেবে নয়, বরং পরিত্রাণের পথ হিসেবে। তাদের গল্পগুলো আমাদের শেখায় যে অর্থপূর্ণভাবে বাঁচতে হলে আমাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে উন্নতির চেষ্টা করতে হবে। আমরা যখন এই পৃথিবীকে একটি বিশাল কবরস্থান হিসেবে ধরে নিই এবং মেনে নিই, সেই চিন্তা আমাদের জীবন-মৃত্যুর চক্র, অস্তিত্বের ভঙ্গুরতা এবং উত্তরাধিকার টিকিয়ে রাখার ইচ্ছের দিকে ধাবমান করে। আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মৃত্যু কোনো শেষ নয়, বরং এক রূপান্তর, সেই মাটিতে ফিরে যাওয়া, যেখানে থেকে নতুন জীবন গড়ে ওঠা। আমাদের কবরগুলো শুধুই ধ্বংসের চিহ্ন নয়– এ জ্ঞান ও পুনর্জন্মের উৎস। তারা আমাদের শেখায় যে নীরবতায়ও একটি গল্প আছে, যা আমাদের নতুন কিছু শেখাতে চায়।
তাহলে এই পৃথিবী আসলে কী? কবরস্থান? শোক উদযাপনের স্থান? শেষ ও শুরুর স্থান। কান পেতে শোনার স্থান? স্মরণ করার স্থান? নাকি সব বাদ দিয়ে, উচান-পাতুর ভুলে গিয়ে দুর্জেয় পদে এগিয়ে যাওয়ার স্থান? 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এই ম ট র স থ কবরস থ ন এই প থ ব র ওপর বসব স র কবর ই কবর

এছাড়াও পড়ুন:

ভেঙে ফেলা হচ্ছে না, মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সংস্কার করা হচ্ছে

রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সংস্কারের কাজ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। আর স্মৃতিসৌধ দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

অবশ্য চলমান সংস্কারকাজের মধ্যে এ স্মৃতিসৌধ ভেঙে ফেলা হচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে স্মৃতিসৌধের ভিডিও শেয়ার করে বলছেন, সেটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ‘ঢাকাস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের আধুনিকায়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। সংস্কারের কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুশলী নির্মাতা লিমিটেড। আগামী জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগের মিরপুর অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ আহসান আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, স্মৃতিসৌধের কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। শুধু পুরোনো ইট সরিয়ে নতুন ইট বসানো হচ্ছে। মূল বেদির নকশা আগে যা ছিল, তাই আছে। কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গিয়ে দেখা যায়, কবরস্থানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধটি টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধের বেদির দিকে ঢালু হয়ে নেমে আসা চারটি দেয়ালের মতো যে কাঠামো রয়েছে, সেগুলোর ইটের আস্তর যান্ত্রিক হাতুড়ি (হ্যামার ড্রিল) দিয়ে খোলা হচ্ছে। স্মৃতিসৌধের বেদির চারদিকে থাকা এমন চারটি দেয়ালের মধ্যে তিনটির আস্তর খোলার কাজ চলমান দেখা গেছে। স্মৃতিসৌধের সামনে এনে রাখা হয়েছে কংক্রিটের নতুন ব্লক।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সংস্কারকাজ করতে দেখা গেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিনদের আবাস
  • মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সংস্কার হচ্ছে, ভাঙচুর নয়
  • মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সংস্কার হচ্ছে, ভাঙচুর নয়
  • ভেঙে ফেলা হচ্ছে না, মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সংস্কার করা হচ্ছে