Samakal:
2025-01-31@12:05:36 GMT

‘বাদশাহ’ ট্রাম্পের রাজত্ব

Published: 23rd, January 2025 GMT

‘বাদশাহ’ ট্রাম্পের রাজত্ব

হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ী হয়ে ফিরে আসা আমেরিকান রাজনৈতিক থিয়েটার মঞ্চের মতোই ছিল। এটি অবশ্য প্রত্যাবর্তনকারী প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যই ছিল। এই মুহূর্ত তুলে ধরার জন্য ট্রাম্প শিবিরে একটি প্রচলিত শব্দাংশ হলো– ‘বেদনা ও বিস্ময়’; যেহেতু ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ ও এক দিনের পদক্ষেপে বাইডেন যুগের বিলুপ্তি ঘটাতে চেয়েছিলেন।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিষেক ব্যতিক্রম হিসেবে দারুণ হয়েছে। আয়োজনটি কোথায় বা কোন ঘটনার মধ্য দিয়ে নীতি গৃহীত হয়েছে, সেটি ভিন্ন বিষয়। কারও কারও কাছে মনে হতে পারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ ‘বেদনা ও বিস্ময়’ চর্চা হিসেবে ২০০৩ সালের ইরাক আক্রমণ ছাড়াও আমেরিকান শক্তির অমোচনীয় চিত্রের একটি ভোজ তৈরি করেছিল। কিন্তু নিশ্চিতভাবে এ ঘটনার পরিণতি ভালো হয়নি।
ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি পরিচিত কাঠামোর মধ্যে উঠে আসতে পারত। বাস্তব, তিক্ত আবহাওয়ায় আয়োজনটি বাড়ির অভ্যন্তরে এবং একই ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়ে, যেখানে ট্রাম্প ২০২১ সালে জনতাকে মিছিল করতে উৎসাহিত করেছিলেন। তবে সংবিধানের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছিল; অনেকেই ট্রাম্পকে ২০১৭ সালের বক্তৃতার তুলনায় এবার বেশি বিনীত বলেই মনে করেছেন। জর্জ ডব্লিউ বুশ আগের সেই বক্তৃতাকে ‘কিছু অদ্ভুত ফেলনা জিনিস’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

তবুও পরিচিত আচার-অনুষ্ঠানের নেপথ্যে এটা বোঝা কঠিন ছিল না যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসন পদ্ধতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন অব্যাহত রয়েছে। ট্রাম্প প্রবৃত্তিগত কিংবা বা প্রমাণ সাপেক্ষে কোনোভাবে একজন প্রচলিত বা পূর্বসূরিদের মতো প্রেসিডেন্ট নন। তিনি একজন নার্সিসিস্ট বা স্বপূজারি, উৎপীড়ক ও চুক্তিসন্ধানী, যিনি অন্যদের প্রতি কোনো রকম দায়বদ্ধ হতে চান না।
সোমবারের অনুষ্ঠানজুড়ে আপনি এসব আবার অনুভব করতে পারেন। অধ্যাপক ও পাঠ্যপুস্তক সবসময় আমাদের বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি জাতি, যেখানে প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস ও আদালতের মধ্যে ক্ষমতার সুস্পষ্ট পৃথককরণের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে তাই এখনও বাস্তব। তবুও এই সপ্তাহে অনেক ইঙ্গিত সেই আদর্শ তুলনামূলক কমে আসার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার আভাস দিয়েছে, যা ট্রাম্পের অধীনে ত্বরান্বিত হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আদালতের প্রভাব স্পষ্ট। কিন্তু ‘গভর্নিং কোর্ট’ ও ‘কোর্ট অব ল’ এক জিনিস নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ বিচারকদের ওপর ট্রাম্পের খবরদারি, যাদের মধ্যে অনেককে তিনি তাঁর প্রথম মেয়াদে নিয়োগ করেছিলেন। এই ধারা ইতোমধ্যে শক্ত এবং সম্ভবত এখন আরও জোরালো হবে। পরিবর্তে ট্রাম্প নিজেকে প্রেসিডেন্টের আদালতের কেন্দ্রে রেখে প্রায় রাজতান্ত্রিক মডেলে শাসন করেন।
এর সবকিছুই এককভাবে ট্রাম্পের মধ্য দিয়ে ঘটেছে, এমন নয়। বিগত শতাব্দীতে ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের মতো প্রেসিডেন্টরা অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রেসিডেন্টের হস্তক্ষেপ বিস্তৃত করেছিলেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর ইতিহাসবিদ আর্থুর শ্লেসিঞ্জার একে ‘সাম্রাজ্যিক প্রেসিডেন্সির উত্থান’ বলেছিলেন। কিন্তু তা এখনও বন্ধ হয়নি। ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে রিচার্ড নিক্সন যুক্তি দিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট যদি কিছু অনুমোদন করেন, তবে তা অবৈধ নয়। গত বছর সুপ্রিম কোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে অকল্পনীয়ভাবে শক্তিশালী করেছে। রায়ে বলা হয়েছিল, সরকারি কাজে প্রেসিডেন্ট নিরঙ্কুশ দায়মুক্তি ভোগ করবেন। উদারপন্থি বিচারপতি সোনিয়া সোটোমায়র বলেছেন, এটি প্রেসিডেন্টকে ‘আইনের ঊর্ধ্বে একজন রাজা’ বানিয়েছে।

ঠিক এ কারণেই জর্জ ওয়াশিংটন হয়তো স্বীকার করতেন, আদালতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা এখন ট্রাম্পের চারপাশে বিকশিত হচ্ছে রাজকীয় শাসনের মতো আনুমানিক কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে, যার বিরুদ্ধে তিনি ২৫০ বছর আগে বিদ্রোহ করেছিলেন। আমেরিকান বিপ্লবের উৎস সম্পর্কে ১৯৬৭ সালে লেখা মার্কিন ইতিহাসবিদ বার্নার্ড বেইলিন যুক্তি দিয়েছিলেন, তৃতীয় জর্জের আশপাশের লোকেরা রাজার উৎসাহে সাংবিধানিক ভারসাম্য বিকৃত করেছে বলেই বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়েছিল। বেইলিন যা যুক্তি দিয়েছিলেন তার বেশির ভাগই এই সপ্তাহে আমেরিকান রাজনীতিতে দেখা গেছে। ট্রাম্প ও জো বাইডেন উভয়ের ক্ষমতাচর্চা সুগভীর সামন্ত কায়দার চেয়ে কম কিছু নয়। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখনও একটি সাংবিধানিক গণতন্ত্র বহাল। দেশটির বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান সেভাবে কাজ করে। তবুও ট্রাম্প যদি মার্কিন সংবিধান থেকে জন্মগত নাগরিকত্ব বাতিল করার ব্যাপারে অনড় হন, তবে তিনি অন্য কোনো বিভাগকে বাতিল করার চেষ্টা করতে পারেন! এ ধরনের আলোচনার গুরুত্ব রয়েছে। কেননা, ক্ষমতা আলাদা করা ও সংবিধানকে মহিমান্বিত করার চেয়ে প্রেসিডেন্ট শাসিত দরবারি ব্যবস্থা শিকড় গাড়তে পারে। এ কারণে ট্রাম্প যতটা সম্ভব এভাবেই শাসন করবেন। সোমবার তিনি তাঁর আদালতে ঘোষণা করেছেন, আমেরিকার স্বর্ণযুগ এখনই শুরু হচ্ছে। তিনি যদি ক্যাপিটলে থাকতেন, তবে সূর্যসন্তান বুঝতে পারতেন, তিনি কী দেখছেন।

মার্টিন কেটল: কলামিস্ট; দ্য গার্ডিয়ান থেকে
সংক্ষেপিত ভাষান্তর ইফতেখারুল ইসলাম 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ল ন ত কর ছ

এছাড়াও পড়ুন:

গায়িকা-অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল আর নেই

প্রখ্যাত ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে লন্ডনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর প্রকাশ করেছে।

মারিয়ানের মৃত্যুর খবর জানিয়ে তার মুখপাত্র বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, “আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে ঘোষণা করছি, গায়িকা, গীতিকার ও অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল মারা গেছেন। আজ সকালে লন্ডনে মারা যান তিনি। কোম্পানি এবং পরিবার তার অভাব বোধ করবে।”

ষাটের দশকে মিক জ্যাগারের সঙ্গে মারিয়ান প্রেমের সম্পর্ক ছিলেন। শিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়েছেন জ্যাগার। তাতে তিনি বলেন, “মারিয়ান ফেইথফুলের মৃত্যুর খবর শুনে আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। এতদিন সে আমার জীবনের অংশ ছিল। সে আমার চমৎকার একজন বন্ধু ছিল। সে একাধারে একজন সুন্দরী গায়িকা, দুর্দান্ত অভিনেত্রী ছিলেন। সে সবসময়ই মনে থাকবে।”

আরো পড়ুন:

অভিবাসীদের নিয়ে ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান: কাঁদলেন সেলেনা

জেনিফারের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, ওবামার সংসার ভাঙার খবর কতটা সত্য

বিবিসির তথ্য অনুসারে, ব্যক্তিগত জীবনে তিনবার বিয়ে করেন এবং বিবাহবিচ্ছেদ হয় মারিয়ানার। ১৯৬৫ সালে জন ডানবারকে বিয়ে করেন। কিন্তু এক বছর পরই ভেঙে যায়। ১৯৭৯ সালে বেন ব্রিয়ারলির সঙ্গে ঘর বাঁধেন। সাত বছর পর এ সংসারও ভেঙে যায়। ১৯৮৮ সালে অভিনেতা জর্জিও ডেলা টেরজাকে বিয়ে করেন। ১৯৯১ সালে এ সংসারেরও ইতি টানেন এই গায়িকা। মৃত্যুকালে নিকোলাস ডানবার নামে একটি পুত্রসন্তান রেখে গেছেন মারিয়ান।

১৯৪৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেডে জন্মগ্রহণ করেন মারিয়ান। ১৯৬৪ সালে গানের ক্যারিয়ার শুরু করেন। প্রখ্যাত ব্যান্ড দ্য রোলিং স্টোনের ম্যানেজার অ্যান্ড্রু লুং ওল্ডহ্যাম তাকে আবিস্কার করেন।

মারিয়ানের তুমুল জনপ্রিয় ‘আ টিয়ার্স গো বাই’ গানটি ছিল রোলিং স্টোনের দুই সদস্য মিক জ্যাগার ও কেই থ রিচার্ডসেরই লেখা। আলোচিত এ গান ছাড়াও মারিয়ানের আরো দুটি আলোচিত গান রয়েছে। সেগুলো হলো— ‘কাম অ্যান্ড স্টে উইথম মি’ ও ‘দ্য লিটল বার্ড অ্যান্ড সামার নাইটস’। ‘দ্য গার্লস অব আ মোটরসাইকেল’ ছাড়াও ‘ঘোস্ট স্টোরি’, ‘হ্যামলেট’, ‘শপিং’সহ বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুধু নারী নয়, পুরুষরাও যৌন হয়রানির শিকার হয়: প্রিয়াঙ্কা
  • বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লির মৃত্যু 
  • গায়িকা-অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল আর নেই
  • এক সপ্তাহেও তদন্তে নেই কোনো অগ্রগতি
  • এই চিঠি পোস্ট করা হয়নি
  • গাজা: যুদ্ধবিরতি এলো মানুষগুলো ফিরল না
  • শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা
  • পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেইনি: নাহিদ ইসলাম
  • কেরানীগঞ্জে বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি, শুধু হাত বদলেছে: সারজিস আলম
  • ক্রিকেটারদের চেক বাউন্স, ম‌্যানেজার বললেন, ‘আমি এখনও পাইনি টাকা’