ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন শবেমেরাজ। এটি ফার্সি শব্দ। শব অর্থ রাত, আর মেরাজ অর্থ ঊর্ধ্বারোহণ বা ঊর্ধ্বগমন। আরবিতে এ রাতকে বলা হয় ‘লাইলাতুল মেরাজ’; মহিমান্বিত রজনী। আল্লাহ পবিত্র কোরআনের সুরা বনি ইসরাইলের ১ আয়াতে এরশাদ করেন, পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত, যার চারদিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি। যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দিই। নিশ্চয় তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।
‘ইসরা’ অর্থ রাতে নিয়ে যাওয়া। মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত সফরকে ইসরা বলা হয়। আর সেখান থেকে আসমান পর্যন্ত যে সফর, তাই মেরাজ। মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল নবুওয়াতের ১১তম বছরের ২৭ রজবে। তখন নবীজির (সা.
আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন: ‘শপথ নক্ষত্রের যখন তা বিলীন হয়। তোমাদের সাথি মুহাম্মাদ (সা.) বিপথগামী হননি এবং বিভ্রান্ত হননি। আর তিনি নিজে থেকে কোনো কথা বলেন না। বরং তিনি যা বলেন তা প্রদত্ত ওহি ভিন্ন কিছু নয়। তাঁকে শিখিয়েছেন মহাশক্তিধর জিবরাইল (আ.)। সে জিবরাইল (আ.) পাখাবিশিষ্ট, সে স্থিত হয়েছে দূর ঊর্ধ্বে। অতঃপর নিকটবর্তী হলো, পরে নির্দেশ করল। তার পর হলো দুই ধনুকের প্রান্তবর্তী বা আরও নিকট। পুনরায় তিনি ওহি করলেন তাঁর বান্দার প্রতি, যা তিনি ওহি করেছেন। ভুল করেনি অন্তর যা দেখেছে। তোমরা কি সন্দেহ করছ তাঁকে, যা তিনি দেখেছেন সে বিষয়ে। আর অবশ্যই দেখেছেন তিনি তাঁকে দ্বিতীয় অবতরণস্থলে; সিদরাতুল মুনতাহার কাছে; তার নিকটেই জান্নাতুল মাওয়া। যখন ঢেকে গেল সিদরা যা ঢেকেছে; না দৃষ্টিভ্রম হয়েছে, আর না তিনি বিভ্রান্ত হয়েছেন; অবশ্যই তিনি দেখেছেন তাঁর রবের বড় বড় নিদর্শন।’ (সুরা নাজম, আয়াত: ১-১৮।
মেরাজের রজনীতে হাবিব ও মাহবুবের একান্ত সাক্ষাতে ১৪টি বিষয় ঘোষিত হয়েছে।
১. আল্লাহকে ছাড়া কারও ইবাদত করবে না, ২. পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে, ৩. নিকট স্বজনদের তাদের অধিকার দাও; ৪. মিসকিন ও পথসন্তানদের তাদের অধিকার দাও ৫. অপচয় করো না, অপচয়কারী শয়তানের ভাই, ৬. কৃপণতা করো না, ৭. সন্তানদের হত্যা করবে না, ৮. ব্যভিচারের নিকটেও যেও না, ৯. মানব হত্যা করো না, ১০. এতিমের সম্পদের কাছেও যেও না, ১১. প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো, ১২. মাপে পূর্ণ দাও, ১৩. অবস্থান করো না যাতে তোমার জ্ঞান নেই, ১৪. পৃথিবীতে গর্বভরে চলো না। এ সবই মন্দ, তোমার রবের কাছে অপছন্দ। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২২-৪৪)।
মহানবী (সা.)-কে জান্নাত-জাহান্নামও পরিদর্শন করানো হলো। তাঁকে বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি দেখানো হলো। বেনামাজির শাস্তি দেখলেন– বড় পাথর দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হচ্ছে; আঘাতে মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে; পুনরায় ভালো হয়ে যাচ্ছে, আবার আঘাত করা হচ্ছে। জাকাত না দেওয়ার শাস্তি দেখলেন। তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে পাওনাদাররা থাকবে। তারা পশুবৎ চড়বে এবং নোংরা আবর্জনা, ময়লা ও পুঁজ এবং কাঁটাযুক্ত আঠালো বিষাক্ত ফল খাবে, জাহান্নামের উত্তপ্ত পাথর ভক্ষণ করবে।
মেরাজের ঘটনা থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট– মহানবী (সা.)-কে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সুউচ্চ মর্যাদা দান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো নবীকে দান করা হয়নি। তাই তো তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিশ্বনবীর (সা.) আদর্শকে আঁকড়ে ধরার তৌফিক দান করুন।
ড. মো. শাহজাহান কবীর: চেয়ারম্যান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসল ম আল ল হ ত হয় ছ দ ন কর মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
শুক্র-শনিবার খোলা ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের প্রয়োজনে সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আঞ্চলিক ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা রাখা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিএসসিসি থেকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কার্যক্রম চলমান থাকায় নাগরিকত্ব সনদ এবং জন্ম-মৃত্যু সনদ সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার ও শনিবার) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা থাকবে।
ঢাকা/এএএম/রফিক