তাওহীদ হত্যা মামলায় মাদারীপুরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
Published: 23rd, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ তাওহীদ সন্নামাত হত্যা মামলায় মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন টুকু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মাদারীপুর আদালতের মাধ্যমে এই চেয়ারম্যানকে জেল হাজকে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গত বছরের ১৯ জুলাই মাদারীপুর পৌর শহরের যুব উন্নয়ন অফিসের সামনে ছাত্রলীগ, যুবলীগের সঙ্গে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের সুচিয়ারভাঙ্গা গ্রামের সালাহউদ্দিন সন্নামাতের ছেলে তাওহীদ যোগ দেন। এসময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিতে নিহত হন তাওহীদ। পরে রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন এই বিষয়ে কথা বলতে ভয় পেতেন তাওহীদের পরিবার। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ২৫ আগস্ট রাতে মাদারীপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুল হাসান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। যেখানে পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নাসির উদ্দিন টুকু মোল্লাসহ ৯২ জনকে আসামী করা হয়। নাম না জানা আসামি রয়েছে আরো ৫০০ থেকে ৭০০ জন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে ৪৮ ঘণ্টায় একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু
অটোরিকশা চালকের মৃত্যু
কটিয়াদী থানার ওসিসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
মাদারীপুর সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “টুকু মোল্লাকে দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি এজাহার নামীয় আসামি। তাকে বিকেলে মাদারীপুর আদলতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হিজরতের ৫টি শিক্ষা
সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:
১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালনহিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)
২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগহিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।
আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বেওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।
৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসাহিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতাএই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)
এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।
হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।
আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫