শহরে রাতের আধারে ছাত্রলীগের পোস্টারিং, প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সমাবেশ
Published: 23rd, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্রলীগের পোস্টারিং এর প্রতিবাদে শহরের সক্রিয় ছাত্র সংগঠনসমূহ তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
এ সময় বিক্ষোভে যুক্ত হন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র মজলিশ, ইসলামি ছাত্র শিবিরের নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি তোলারাম কলেজ প্রাঙ্গন থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু করে কলেজ প্রাঙ্গন, বিজয় স্তম্ভ ও বি বি রোড প্রদিক্ষন করে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে শেষ হয়। পরে সমাবেশ শুরু করেন অংশগ্রহণকারী ছাত্র সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশন জেলা সভাপতি ছাত্রনেতা ফারহানা মানিক মুনা ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বলেন, রাতের আধারে তোলারাম কলেজ, মহিলা কলেজ জেলা পরিষদের মতো লোকারণ্য জায়গায় গণহত্যার আসামি নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পোস্টার সাটানোর যে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে তার প্রতিবাদ জানাই।
যারা শহরকে গডফাদারের আস্তানায় পরিণত করে তোলারাম কলেজকে টর্চার সেল বানিয়ে শহরে গুলি চালিয়ে শিশু রিয়া গোপসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের কোনো বিচার এখনো শুরু হয়নি। এই বিচারহীনতাই হত্যাকারীদেরকে পূনর্বাসনের সুযোগ করে দিচ্ছে।
যা অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী। আমরা নারায়ণগঞ্জের ছাত্ররা তা মেনে নিতে পারি না। হত্যাকারীদের বিচারই হতে পারে নতুন বাংলাদেশ গঠনের হাতিয়ার। যারা হত্যাকারীদের পোস্টার সাটিয়ে তাদের পূনর্বাসন করতে চায় আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের আটক করতে হবে।
জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে এই দায়িত্ব নিয়ে হবে এবং নারায়ণগঞ্জবাসীর সামনে হত্যাকারীদের দেখানো এই ঔদ্ধত্যের বিচার করে দৃষ্টান্ত হাজির করতে হবে। নিশ্চয়ই, নারায়ণগঞ্জের ছাত্র সমাজ সম্মিলিতভাবে হত্যাকারীদের প্রতিহত করবে।
ছাত্র ফেডারেশন তোলারাম কলেজ সংগঠক মুন্নী আক্তার প্রত্যাশা বলেন, 'গত পনেরো বছরে ছাত্রলীগ এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা করেনি। ৫ আগষ্টের পরে এখনো তাদের কোনো বিচার আমরা দেখতে পাইনি। যা তাদেরকে আজ পোস্টারিং এই দু:সাহসের যোগান দেয়।
যারা ছাত্রলীগের শেল্টার দিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে হুশিয়ারি জানিয়ে বলতে চাই, আপনারা হত্যাকারীদের পক্ষ নিয়ে নিজেরাও গণহত্যার অপরাধের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। আমরা শিক্ষার্থীরা এমন হতে দিব না। নারায়ণগঞ্জের ছাত্ররা এই সকল অপচেষ্টা রুখে দিবে।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাই ছাত্রদল নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাবেক সিনিয়র সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম রাজিব, তোলারাম কলেজ নেতা আতিকুজ্জামান অনু, ছাত্র মজলিশ মহানগর সভাপতি শাহনেওয়াজ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন মহানগর সেক্রেটারি আবুল হাসিম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে জাহিদ হাসান, জাভেদ হোসেনসহ অন্যান্যরা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ত ল র ম কল জ ন র য়ণগঞ জ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে সচিবালয়ে শিক্ষার্থীরা
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে জাতীয় সচিবালয় এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। তাঁরা আওয়ামী লীগসহ দলটির অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে গণহত্যা ও জুলাই গণহত্যাসহ সব অপকর্মের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।
আজ সোমবার বেলা ২টার পর শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তবে সচিবালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরে যেতে অনুরোধ জানালে শিক্ষার্থীরা রাস্তার বিপরীত পাশে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল আইন উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিতে সচিবালয়ে প্রবেশ করেছেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। দলে আরও রয়েছেন সাদিক আল আরমান, রাফিদ এম ভুইয়া, সালেহ মাহমুদ রায়হান এবং মাসুদ রানা।
স্মারকলিপি দিতে সচিবালয়ে প্রবেশের আগে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এর আগে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাষ্ট্রের কাছে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ এবং জুলাই আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার দাবি জানিয়েছি। আওয়ামী লীগের বিগত ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার চেয়েছি। কিন্তু, সরকার কর্ণপাত করেনি। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চান না, এটিকে সমীচীন মনে করেন না। সর্বশেষ ফরমাল প্রক্রিয়া হিসেবে আমরা স্মারকলিপি নিয়ে এসেছি। এরপরও দাবি আদায় না হলে আমরা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’
মোসাদ্দিক জানান, তারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন এলাকার গ্রুপকে এক করার চেষ্টা করা হয়েছে। আন্দোলন শুরু করার প্রক্রিয়া হিসেবে স্মারকলিপি নিয়ে আসা হয়েছে। দাবি মেনে না নিলে শিগগিরই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।