বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণের সম্ভাব্য ক্ষতি বিবেচনায় প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে। ২০২৭ সালে এ পদ্ধতি কার্যকর হবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার লক্ষ্য প্রভিশন সংরক্ষণ ব্যবস্থা  আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।  
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৭ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক আর্থিক রিপোর্টিং মান (আইএফআরএস-৯) অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর জন্য প্রত্যাশিত ক্রেডিট লস (ইসিএল) পদ্ধতির প্রভিশন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছে। ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা বাড়ানো এবং আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা বাড়ানোর জন্য চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক আইএফআরএস-৯ এর অধীনে ব্যাংকগুলোর জন্য ইসিএলভিত্তিক ঋণ শ্রেণিবিভাগ এবং বিধান গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ইসিএল মূল্যায়ন করার সময় সামষ্টিক অর্থনৈতিক, আর্থিক কারণ, প্রত্যাশিত ঝুঁকি এবং সংশ্লিষ্ট গতিশীলতা বিবেচনা করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশন ব্যবস্থা নিয়মভিত্তিক রয়েছে। ঋণের মান অনুযায়ী কত শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। আগামীতে আরও অগ্রসর নিয়মের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একটা ঋণ খারাপের দিকে যাচ্ছে বুঝতে পারলে ব্যাংক আগে থেকেই প্রভিশন করবে। এ ক্ষেত্রে ঋণের দেরিতে পরিশোধ, ঋণ পুনঃতপশিলসহ অনেক বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে।  

তিনি বলেন, এ পদ্ধতিতে অনুসরণ করলে ব্যাংকগুলো আগে থেকেই ঋণের কিছু অংশ প্রভিশন করা থাকবে। এখন কোনো ঋণ খেলাপি হওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রে শতভাগ প্রভিশন করতে হয়। তখন ব্যাংকগুলোর মূলধনের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। 
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা এবং হিসাব মান পর্যালোচনা করে প্রাতিষ্ঠানিক স্তরে নিজেদের তৈরি করবে। কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিগত দিক এবং সক্ষমতা 
বাড়াতে হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঋণ ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

দোষী সাব্যস্ত লো পেন, সরকারি দায়িত্ব পালনে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ফ্রান্সের ডানপন্থী নেতা মারিন লো পেন। আদালত তাঁর ওপর সরকারি দায়িত্ব পালনে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ ইউরো জরিমানা করেছেন। আজ সোমবার প্যারিসের একটি আদালত এ রায় দেন। এর ফলে তিনি ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন না। তবে আদালতে আপিল করে জিতে গেলে তাঁর জন্য নির্বাচনে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, আদালতের এ আদেশ ফ্রান্সের ন্যাশনাল র‍্যালি (আর এন) দলটির প্রধান লো পেনের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা। ২০২৭ সালে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনপ্রিয়তার দিক থেকে তিনি এগিয়ে ছিলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ দল ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল র‌্যালিকে (আরএন) দেওয়ার দায়ে লো পেনসহ তাঁর দলের ১২ সংসদীয় সহযোগীকে (পার্লামেন্টারি অ্যাসিস্ট্যান্ট) দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। তাঁদের দাবি, অর্থ বৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। আদালত বলেছেন, তাঁর দল আরএন এবং তাঁদের দুই ডজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ইইউ পার্লামেন্টের তহবিল থেকে ৪০ লাখ ইউরোর বেশি অর্থ দিয়ে তাঁরা ফ্রান্সে থাকা দলের কর্মীদের বেতনভাতা দিয়েছেন। তবে আরএনের দাবি, তারা বৈধ উপায়েই ওই অর্থ ব্যবহার করেছে এবং অভিযোগগুলোতে সংসদীয় সহযোগীর কাজকে সংকীর্ণভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

বিচারক বেনেডিক্ট দ্য পের্তুই বলেন, লো পেন অর্থ আত্মসাৎ পরিকল্পনার মূলে ছিলেন।

২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এমানুয়েল মাখোঁর কাছে পরাজয়ের পর থেকে লো পেন তাঁর দলকে রাজনৈতিক মূলধারার দিকে নিয়ে গেছেন। তিনি এখন জাতীয় পরিষদের একক বৃহত্তম দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বিচারক পের্তুই বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে এরা সবাই মূলত দলের হয়ে কাজ করেছেন, তাদের (ইইউ) আইনপ্রণেতারা তাদের কোনো কাজই দেননি। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে এগুলো মোটেই প্রশাসনিক কোনো ত্রুটি নয়, বরং প্রণীত একটি ব্যবস্থার কাঠামোর মধ্যে আত্মসাৎ, যা করা হয়েছে দলের খরচ কমানোর জন্য।

আদালতের আদেশ দেওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন লো পেন।

বেশ কয়েকটি জনমত জরিপে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তুলনায় এগিয়ে থাকা ৫৬ বছর বয়সী লো পেন আগে বলেছিলেন, ২০২৭-এ তিনি শেষবারের মতো লড়বেন। নির্বাচনে দাঁড়াতে না পারলেও লু পেনের পার্লামেন্টারি আসন তাঁরই থাকছে।

সোমবার আদালতে ঢুকতে বা বের হতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি পেন। তবে এর আগে তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন, সরকারি কৌঁসুলিরা তাঁর ‘রাজনৈতিক মৃত্যু’ এবং আরএনকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে চাইছে।

দোষী সাব্যস্ত হলেও এখনই সব দণ্ড কার্যকর হচ্ছে না লো পেন এবং অন্যরা আপিলের সুযোগ পাবেন। তবে ফ্রান্সে আপিল আবেদনের সুরাহা হতে কখনো কখনো কয়েক বছরও লেগে যায়।

এ রায়ের ফলে ফ্রান্সের রাজনীতিতে আদালতের হস্তক্ষেপের সীমা নিয়ে আলোচনা নতুন করে চাঙা হবে বলে অনুমান করছেন বিশ্লেষকেরা।

লো পেন না দাঁড়াতে পারলে তাঁর ডান হাত খ্যাত আরএনের প্রেসিডেন্ট ২৯ বছর বয়সী জগদান বাগদেলাই ডানপন্থীদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তরুণদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা ব্যাপক হলেও পুরো ডানপন্থী অংশের ভোট তিনি পকেটে পুরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দোষী সাব্যস্ত লো পেন, সরকারি দায়িত্ব পালনে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা