ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২টা ছুঁইছুঁই। জেঁকে বসেছে শীত। মাঝেমধ্যে ভেসে আসছে বাঁশির শব্দ। দেখা গেল আটজন নানা বয়সী লোক লাঠি, চার্জার লাইট নিয়ে ঘুরছেন। গলায় ঝুলছে বাঁশি। বুধবার কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের কয়া বাজার, ঘোষপাড়া ও স্কুলপাড়া ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
তারা জানান, ৫ আগস্টের পরে পুলিশের তৎপরতা কমে গেছে। এ সুযোগে এলাকায় বেড়েছে চুরি-ডাকাতিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। তাদের প্রতিরোধে ১১০ পরিবার থেকে ১৬ জন কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে রাতে পাহারা দিচ্ছেন। ১৭ জানুয়ারি থেকে পাহারা দিচ্ছেন তারা।
থানাসূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত কুমারখালী থানায় ৬২টি চুরি, ডাকাতি ও দস্যুতার অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে সাতটি চুরি, দুটি দস্যুতা, একটি ডাকাতির ঘটনা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। এসব মামলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে জানিয়েছেন কুমারখালী নাগরিক কমিটির সদস্য কে এম আর শাহিন। 
ভুক্তভোগীদের দাবি, চুরির ঘটনা ঘটার পর থানায় জানানো হয়। তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যায়। কিন্তু জড়িতদের ধরতে পারে না। পুলিশের উদাসীনতায় গ্রামে চুরি-ডাকাতি বাড়ছে বলে মনে করেন তারা। 
সরেজমিন বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ জানুয়ারি ঘোষপাড়া এলাকার বিমল ঘোষের বাড়ির জানালা দিয়ে চেতনানাশক স্প্রে করে দুর্বৃত্তরা। সবাই অচেতন হয়ে পড়লে ঘরে ঢুকে নগদ এক লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। একই রাতে কয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম রিপনের বাড়িতে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে ৮-১০ জন ডাকাত। স্থানীয়রা টের পেলে তারা দ্রুত চলে যায়। ২৭ ডিসেম্বর কয়া স্কুলপাড়ার আবদুল মজিদের বাড়ির দরজা ভেঙে চার-পাঁচজন ডাকাত প্রবেশ করে। তারা সবাইকে জিম্মি করে ৪৫ হাজার টাকা এবং সাত-আট ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। 
কয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম 
আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম রিপন বলেন, ডাকাত ও চোরের উপদ্রব ঠেকাতে রাত জেগে পাহারার 
ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকেই 
ব্যবস্থা নিতে হবে। 
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ বলেন, কিছু ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়নি। অনেক ভুক্তভোগী পরে মামলা করতে আগ্রহ দেখায়নি। এরপরও কয়েকটি মামলা হয়েছে। ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এল ক্লাসিকোর আগে বার্সার স্কোয়াডে ফিরলেন স্টেগান

কোপা দেল রে’র ফাইনাল সামনে রেখে বড় দারুণ এক খবর পেল বার্সেলোনা। ২১৫ দিন পর ইনজুরি কাটিয়ে স্কোয়াডে ফিরেছেন দলের অধিনায়ক ও প্রধান গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগান। হাঁটুর অস্ত্রোপচার ও দীর্ঘ পুনর্বাসন শেষে অবশেষে তাকে ফিরতে দেখা যাবে এস্তাদিও দে লা কারতুহার রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে।  

তবে সুসংবাদের মাঝেও দুঃসংবাদ আছে বার্সার জন্য। চোটের কারণে ফাইনালে দেখা যাবে না দলের মূল স্ট্রাইকার রবার্ট লেভান্ডোভস্কিকে। সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে ম্যাচে বাঁ পায়ের উরুতে চোট পেয়েছিলেন তিনি। বার্সা জানিয়েছে, তার সেমিটেনডিনোসাস পেশিতে আঘাত লেগেছে এবং তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হবে অন্তত দুই থেকে তিন সপ্তাহ।  

তবে টের স্টেগানের প্রত্যাবর্তন বার্সার জন্য বিশাল মনোবল বাড়ানোর মতো ব্যাপার। ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে চোট পাওয়ার পর মনে করা হচ্ছিল, পুরো মৌসুমই তাকে মাঠের বাইরে কাটাতে হবে। তাই বিকল্প হিসেবে ভয়চেখ শেজনিকে দলে টেনেছিল বার্সা। কিন্তু প্রত্যাশার অনেক আগেই সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরলেন জার্মান এই গোলরক্ষক।

লেভান্ডোভস্কির অনুপস্থিতিতে আক্রমণভাগে এবার ভরসা হতে যাচ্ছেন ফেরান তরেস, লামিন ইয়ামাল ও রাফিনিয়া। সেমিফাইনালে জয়সূচক গোল করে দারুণ ফর্মে আছেন ফেরান। মাঝমাঠে থাকবেন দানি অলমো, যিনি চোট কাটিয়ে পুরোপুরি ফিট। তবে ইনজুরির কারণে ফাইনাল মিস করছেন আরও কয়েকজন আলেহান্দ্রো বালদে, মার্ক বের্নাল ও মার্ক কাসাদো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ