রাউজানে বিএনপির দুই দফা সংঘর্ষ, আহত ১৫
Published: 23rd, January 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির উপজেলা ও পৌরসভা কমিটি ঘোষণার জেরে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরে এবং পরে মুন্সির ঘাটা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে রাউজান উপজেলা ও পৌরসভার সদ্য নির্বাচিত বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নবাগত ইউএনওর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন নেতাকর্মীরা। তারা বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী। এ খবরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সমর্থিত নেতাকর্মীরা। সাক্ষাৎ চলাকালে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে হট্টগোল বাধে। সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে এলে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর গ্রুপের সঙ্গে আকবর গ্রুপের মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ দু’পক্ষের লোকজনকে উপজেলা পরিষদ মাঠ ছাড়তে বাধ্য করে। পরে উভয় গ্রুপের অনুসারীরা উপজেলা চত্বর থেকে মিছিল সহকারে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের মুন্সির ঘাটায় পৌঁছলে তাদের মধ্যে আবারও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
এই বিষয়ে রাউজান উপজেলা বিএনপির সদ্য নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। হঠাৎ কিছু দুষ্কৃতকারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। হামলায় সভাপতি জসীম চৌধুরীসহ ১০-১২ জন আহত হয়। গত ১৭ বছর যারা বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না, তারাই এই হামলা করেছে।
এই বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সমর্থিত উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি সাবের সুলতান কাজল বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে পুনর্বাসন করতে তারা পকেট কমিটি করেছে। সেই কমিটি স্বৈরাচারীর দোসরদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলায় এলে সাধারণ নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করলে গোলাম আকবরের অনুসারীরা হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিসান বিন মাজেদ সমকালকে বলেন, বিএনপির কিছু নেতাকর্মী সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছিলেন। তবে আমার অফিসের ভেতরে এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত কর ম ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে যুবদলের কমিটি ঘোষণা, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মিছিল-সংবাদ সম্মেলন
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা ও পৌর যুবদলের কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দুই কমিটির সদস্যসচিবসহ অনেক নেতা কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা কমিটি বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার বিকেলে কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে একাংশ ও রাত আটটার দিকে বিপক্ষে অপর অংশ বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এরপর পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে দুপক্ষ।
আকবর হোসেনকে রায়পুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও হাবিবুর রহমানকে সদস্যসচিব করে ২৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া নুর এ হেলাল ওরফে মামুনকে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও জাহিদ মোহাম্মদকে সদস্যসচিব করে ২৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা কমিটি।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান ও পৌর যুবদলের সদস্যসচিব জাহিদ মোহাম্মদের নেতৃত্বে কমিটি বয়কট করে বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘যাঁরা বিগত দিনে ধানের শীষের নির্বাচন না করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদের নিয়ে এই কমিটি করা হয়েছে। উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক আকবর হোসেন ঠিকাদারি করেন। তিনি গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ঠিকাদারি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। পৌর কমিটির আহ্বায়ক নুর এ হেলাল পৌরসভার চাকরিজীবী। এ ছাড়া কয়েকজন প্রবাসে ছিলেন। এসব ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি ঘোষণার কারণে আমরা বয়কট করেছি। একই সঙ্গে কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছি।’
রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আকবর হোসেন ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক নুর এ হেলাল পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তাঁরা বলেন, তাঁদের সম্পর্কে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও দলের জন্য নিবেদিত। ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
গতকাল লক্ষ্মীপুরে যুবদলের ১১টি শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবদলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রকাশ করা হয়। এসব কমিটির অনুমোদন দেন জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ রশিদুল হাসান ও সদস্যসচিব আবদুল আলিম হুমায়ুন।
কমিটিগুলো হলো লক্ষ্মীপুর পৌরসভা, সদর উপজেলা (পূর্ব), সদর উপজেলা (পশ্চিম), রামগঞ্জ উপজেলা, রামগঞ্জ পৌরসভা, রায়পুর উপজেলা, রায়পুর পৌরসভা, চন্দ্রগঞ্জ থানা, রামগতি উপজেলা, রামগতি পৌরসভা ও কমলনগর উপজেলা।
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনের বিএনপিদলীয় সাবেক একজন সংসদ সদস্য রায়পুর উপজেলায় স্বৈরাচারীভাবে দল চালাচ্ছেন। ব্যক্তিস্বার্থে তিনি দলকে দ্বিধাবিভক্ত করে রাখছেন দীর্ঘ বছর। তাঁর পকেটের ব্যক্তিদের আহ্বায়ক না করায় ঘোলা পানিতে তিনি মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন।