শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১৫
Published: 23rd, January 2025 GMT
দেওয়ানগঞ্জে জিল বাংলা চিনিকল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার চিনিকলের ২ নম্বর গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, ২০২২-২৩ আখ মাড়াই মৌসুমে জিল বাংলা চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন হয়। ওই প্যানেলের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় আগামী ২৮ জানুয়ারি জিল বাংলা চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ২০২৪-২৫ আখ মাড়াই মৌসুমে দ্বিবার্ষিক নির্বাচন হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ছিল বিভিন্ন পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ওই দিন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী খোকন মোল্লা ও শওকত হোসেন সোহাগ সমর্থকদের নিয়ে গেটের সামনে সমবেত হন। উভয় পক্ষের দাবি, প্রতিপক্ষ তার দলের ওপর হামলা করে। তা রোধ করতে গিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের ঘটনায় জিল বাংলা চিনিকল কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নির্বাচন স্থাগিত ঘোষণা করে।
শওকত হোসেন সোহাগ বলেন, ‘মিলে আমার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। সে কারণে আমি এবার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু খোকন মোল্লার লোকজন আমাকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেয়। সে কারণে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।’
খোকন মোল্লা জানান, তিনি আগে থেকেই চিনিকলের শ্রমিকদের সঙ্গে আন্তরিকতা বজায় রেখে চলছেন। তাকে সবাই পছন্দ করেন। সে কারণে এবার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। এজন্য সকালে গেটের ভেতরে অবস্থান করছিলেন তারা। এ সময় হামলা চালায় শওকত হোসেন সোহাগের লোকজন। এতে তার (খোকন) পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনার শরিফুল ইসলামের ভাষ্য, সংঘর্ষের ঘটনায় ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থাগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে কর্তৃপক্ষ নির্বাচন আয়োজন করবে।
দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান জানান, জিল বাংলা চিনিকলের সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে এখনও মামলা হয়নি।
জিল বাংলা চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা মর্মাহত। এ কারণে ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইল বার সমিতিতে বিএনপি-জামায়াত প্যানেল নির্বাচিত
টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে (২০২৫-২০২৬) আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল এবং আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্যানেলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ জন্য বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের সকল প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে এ নির্বাচন পরিচালনার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মোনায়েম হোসেন খান (আলম) বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। নির্বাচনে মোট ১৪টি পদে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের কথা ছিল।
বিএনপি-জামায়ত সমর্থিত প্যানেল থেকে এবার সভাপতি নির্বাচিত হলেন জহুর আজহার খান, আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন এ কে এম রফিকুল ইসলাম (রতন)।
আরো পড়ুন:
ফ্লিকের মাইলফলক স্পর্শের রাতে দুমাস পর জয়ের ধারায় বার্সালোনা
‘৯’ গোলের মহারণে জয়ী বার্সা, চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে
এ বছর বার সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হলে নির্বাচনে মোহাম্মদ শামস্ উদ্দিনের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্যানেল মনোনয়নপত্র কিনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা চাপের মুখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে এ বিদ্রোহী প্যানেলের প্রার্থীরাও একই পথে হাঁটেন। ফলে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক বার সমিতিতে এসে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি তুলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে বলেন। এ নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী প্যানেলের সকল প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। আওয়ামী প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন ওয়ারেজ আলী মিয়া (নান্নু) ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন মীর মাহফুজুল ইসলাম শামীম।
আওয়ামী বিদ্রোহী প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ শামস্ উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ মহি উদ্দিন মিয়া (মামুন)। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দরখাস্তে উদ্ভুত পরিস্থিতি, অসুস্থতা এবং পারিবারিক সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোনায়েম হোসেন খান (আলম) বলেন, যে সকল প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সেই আবেদনগুলো গ্রহণ করা হয়েছে। এতে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিধিমোতাবেক বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের সকল প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে বার সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ নেতা অ্যাডভোকেট এ কে এম শামীমুল আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঢাকা/কাওছার/বকুল