বেক্সিমকোর ৪০ শতাংশ কর্মীর অস্তিত্ব নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা
Published: 23rd, January 2025 GMT
বেক্সিমকোর ৪০ হাজার শ্রমিকের যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে প্রাথমিক তদন্তে তার প্রায় ৪০ শতাংশের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ইন্ডাস্ট্রির যারা অংশীজন আছেন তাদের সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমরা চেয়েছি-তারা (বেক্সিমকোর শ্রমিক) যাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আত্তীকরণ হয়ে যায়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে। কিন্তু তারা আইনগতভাবে নিজেদের আলাদা করতে চেয়েছেন, তারা আর ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মী বাহিনী নয়, এমন আইনি কাঠামোর ভিত্তিতে তারা নিতে চেয়েছিলেন। ওই কাঠামো দেওয়ার জন্য উপদেষ্টা পরিষদ এবং বিশাল সরকারি টিম একসঙ্গে নিয়োজিত হয়ে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই এমন দুর্যোগপূর্ণ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ফৌজদারি বিধি লঙ্ঘণ করে বিভিন্ন ধরনের সম্পদ এবং যে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে, এর মাধ্যমে দেশের শ্রম সমাজকে অসম্মানিত করা হচ্ছে। গার্মেন্টস শিল্পকে সর্বোপরি দেশকে অসম্মান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বলা হচ্ছে বেক্সিমকোতে ৪০ হাজার শ্রমিক রয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে আমরা এর প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষের অস্তিত্ব পাইনি। অনেক তথ্য তৈরি করা হচ্ছে উত্তেজনার সৃষ্টি করার উদ্দেশে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকোর ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকারও বেশি রিটেইনড আর্নিং রয়েছে জানিয়ে বিষয়টির ফরেনসিক অডিট করবেন কিনা সাংবাদিক এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, কিছুই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘরে চুরি হয়েছে ঘরই তো নেই। ঘরের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলন করে বেক্সিমকোর কর্মীদের ব্যাংক ঋণ চাওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, একটা প্রতিষ্ঠানের যদি ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা চলতি সম্পদ থাকে, তার ৬০ কোটি বেতন দেওয়া তো একটা সেকেন্ডের ব্যাপার। যে দাবি জানানো হচ্ছিল যে ব্যাংকিং সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না, এলসি খুলে দেওয়া হচ্ছে না-যে প্রতিষ্ঠানের ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা চলতি সম্পদ তার তো এলসি খোলাও লাগে না, আর ব্যাংকের সুবিধারও প্রয়োজন হওয়ার কথা না।
তিনি বলেন, আমি প্রথমে জেনেছিলাম যে তাদের ২৩ হাজার কোটি টাকার দায় রয়েছে। পরে জানলাম তাদের প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার দায় রয়েছে। ২৩ হাজার কোটি টাকার দায় ধরে নিয়েই চেষ্টা করেছিলাম যে প্রতিষ্ঠানটা কোনো রকমে যাতে চালু হয়। সরকার খুবই দায়িত্বশীল ছিল এটি চালু করার করার জন্য। কারণ এটা একটা জাতীয় সম্পদ এখানে বহু সংখ্যক শ্রমিক নিয়োজিত আছে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের রপ্তানি আয়ের একটা প্রাসঙ্গিক বিষয় রয়েছে। তাই সরকার যথেষ্ট উদার ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে এ বিষয়ে প্রচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু সরকার তাদের (বেক্সিমকো) পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র সহযোগিতা পায়নি। তখন সরকার বাধ্য হয়ে এখানে প্রশাসক নিয়োগ করেছে। প্রশাসককে কোনো ধরনের সাহায্য করা হয়নি। বলা হয়েছে, আইনজীবী নিষেধ আছে কোনো ধরনের তথ্য শেয়ার না করার জন্য'।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, নিদারুণ সহযোগিতার কারণে যে উচ্চ পর্যায়ের কাউন্সিল কাজ করেছে, তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টিও বড়ই জটিল বিষয় হিসেবে উপনীত হয়েছিল। এরপর সরকার তার দায়িত্বের জায়গা থেকে প্রতি মাসে ৬০ কোটি টাকা করে বেতন দিয়ে দিয়েছে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই। এ বিষয়টি অত্যন্ত জটিল ছিল।
হাসনাত/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ণ জ য উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইলন মাস্ক শিগগির দায়িত্ব ছাড়ছেন, বলেছেন ট্রাম্প
ইলন মাস্ক আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের জানিয়েছেন।
টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ককে নবগঠিত সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটা সরকারের সরাসরি কোনো অংশ নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও কর্মীবহর কমানো ছিল এই বিভাগের কাজ।
ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর পর মাস্কের পরামর্শে অনেকগুলো বড় বড় সিদ্ধান্ত নেন। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএইডি বন্ধ করা এবং লাখ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে অবসরে পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত দেশটিতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল।
ইলন মাস্কের সরে যাওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্টের ওই বক্তব্য সম্পর্কে অবগত তিনটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইলন মাস্ক এখন তাঁর ব্যবসায়িক কাজে ফিরে যাবেন। পাশাপাশি তিনি সরকারকে সহায়তার একটি ভূমিকা পালন করবেন।
মাস্ক ও তাঁর বিভাগের কার্যক্রম নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন ট্রাম্প। তবে সম্প্রতি দুজনেই এই বিষয়ে একমত হন যে, মাস্কের সরে দাঁড়ানোর সময় হয়েছে।
ডিওজিইর দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে মাস্ক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। কিন্তু চঞ্চল মনোভাবের কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরের লোকজন এবং প্রশাসনের বাইরের অনেক মিত্র মাস্ককে অপছন্দ করা শুরু করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা ভারী হতে থাকে। অন্যদিকে বিশ্বের শীর্ষ এই ধনীকে সম্পদের পরিবর্তে রাজনৈতিক দায় হিসেবে দেখতে শুরু করেন ট্রাম্পের দলের রাজনীতিবিদরা।
ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেও মাস্ক সম্ভবত প্রেসিডেন্টের অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। মাঝে–মধ্যে তাঁকে হয়তো হোয়াইট হাউসে দেখা যাবে।