রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরান ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবত জর্জরিত ছিল বিভিন্ন সমস্যায়। এর মধ্যে অন্যতম নিজস্ব পরিবহন সেবা।

পরিবহনের অভাবে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের পড়তে হতো বিভিন্ন ভোগান্তিতে। এবার তাদের মিলবে স্বস্তি। প্রথমবারের মতো তারা দুটি দ্বিতল বাস পেয়েছেন।

প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পর প্রথমবারের মতো নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা পেয়ে উচ্ছ্বসিত সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, বাস, হল ও ক্যান্টিনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছিলেন। ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তির পর কলেজের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পায়। এজন্য শিক্ষার্থীদের হল, বাস ও ক্যান্টিনের দাবি আরো জোরালো হয়।

এর আগে, দায়িত্ব পালনকারী অধ্যক্ষরা বারবার আশ্বাস দিলেও সফলতার মুখ দেখাতে পারেননি। তবে সোহরাওয়ার্দী কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.

কাকলী মুখোপাধ্যায় শিক্ষার্থী দাবি বাস্তবে রূপ দেওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে কলেজে দুইটি দোতলা বিআরটিসির বাস আসে। এ বাস দুইটি উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায়। এ সময় কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শরিফুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে নতুন বাস আসা নিঃসন্দেহে একটি আনন্দদায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এটি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতকে আরও সহজ, নিরাপদ এবং সময়সাশ্রয়ী করবে। নতুন বাস যুক্ত হওয়ায় এখন থেকে ক্লাসে উপস্থিতি বাড়বে এবং যাতায়াতজনিত চাপ কমবে।”

তিনি বলেন, “এ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও নজরে রাখা উচিত, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাস রুট। নতুন বাসগুলোর রুট প্ল্যান যেন সবার জন্য সুবিধাজনক হয়। এছাড়া নিয়মিত বাসের পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। বাসগুলোতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি স্থাপন হলে আরো ভালো হবে।”

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ফাইয়াজ ফায়েল বলেন, “শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে এক দারুণ সুখবর। দুইটি দোতলা বাসের সংযোজন শুধু শিক্ষার্থীদের যাতায়াতকে সহজ ও আরামদায়ক করবে না, বরং তাদের দৈনন্দিন ক্যাম্পাসে যাতায়াতের একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা পরিবহন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিল। অবশেষে তাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ হলো।” এরপর অধ্যক্ষ বাস দুইটি চলাচলের সময়সূচি ও রুট ঘোষণা করেন।

ঘোষণা অনুযায়ি- প্রথম বাস শহীদ আব্দুল্লাহ, এটি সকাল ৭টা ১০মিনিটে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে যাত্রা শুরু করে কাঠেরপুল, কোনাপাড়া, মাতুয়াইল, মিঠাপাড়ি, কাজলা, যাত্রাবাড়ি, ধোলাইখাল হয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাসে আসবে।

দ্বিতীয় বাস মুক্তি, ঠিক একই সময়ে বাড্ডা থেকে যাত্রা শুরু করে রামপুরা ব্রিজ হয়ে রামপুরা বাজার, মালিবাগ, খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদা, মানিকনগর, সায়েদাবাদ হয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাসে আসবে।

আবার, কলেজ থেকে ঠিক দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ক্যাম্পাস থেকে উপরের উল্লেখিত রুটে যাত্রা করবে বাস দুইটি।

ঢাকা/ইয়াছিন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

যমজ বোনের ডেন্টালে ভর্তির সুযোগে আনন্দ, প্রথমবারের মতো আলাদা হওয়ার কষ্ট

টাঙ্গাইলের সখীপুরে যমজ বোন ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। গতকাল রোববার ডেন্টাল কলেজে বিডিএসে ভর্তি পরীক্ষার (২০২৪-২৫) ফলাফলে যমজ বোন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

এই দুই বোন হলেন সামিয়া জাহান ওরফে আফসানা ও সাদিয়া জাহান ওরফে শাহানা। সামিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে এবং সাদিয়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

এর আগে সখীপুরে আরেক শিক্ষক দম্পতির যমজ মেয়ে যারিন তাসনিম বুয়েটে এবং যাহরা তাসনিম মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।

আরও পড়ুনএক বোনের বুয়েটে আরেকজনের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ, প্রথমবার আলাদা হচ্ছেন তাঁরা০১ মার্চ ২০২৫

সামিয়া ও সাদিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সখীপুর পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাহারতা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন মিয়া ও আফিয়া আক্তার দম্পতির যমজ মেয়ে সামিয়া ও সাদিয়া। এর আগে দুই বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন।

যমজ বোনদের বাবা আল আমিন আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ওরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হবে। তাঁর দুই মেয়ে টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ–৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এর আগে এসএসসি ও জেএসসিতে তাঁরা জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন।

সামিয়া জাহান ও সাদিয়া জাহান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা একসঙ্গে মায়ের পেটে ছিলেন। একসঙ্গে বড় হয়েছেন। এক বিছানায় ঘুমিয়েছেন। একই টেবিলে, একই বিদ্যালয়ে ও একই কলেজে পাশাপাশি বসে পড়াশোনা করেছেন। এখন স্বপ্নপূরণে ও ভবিষ্যৎ জীবন গড়তে দুজনকে দেশের দুই প্রান্তে চলে যেতে হবে। একজন আরেকজনকে ছেড়ে থাকবেন, ভাবতেই তাঁদের কষ্ট হচ্ছে।

বাবা আল আমিন মিয়া উপজেলার বড়চওনা-কুতুবপুর কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং জামায়াতে ইসলামীর সখীপুর উপজেলা শাখার আমির। মা আফিয়া আক্তার স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
সখীপুর পাইলট উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাইউম বলেন, ‘ওরা আমাদের বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ–৫ পেয়েছিল। ওরা আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। এবার ওই দুই বোন ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে শুনে খুব খুশি হয়েছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশে জিকা ভাইরাসের প্রথম ‘ক্লাস্টার’ শনাক্ত, আক্রান্ত ৫
  • ঢাকায় ইতালিয়ান নাগরিক খুন, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আর খেলাই হল না ফেকেটের
  • দেশে প্রথমবার জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত, আক্রান্ত ৫
  • যমজ বোনের ডেন্টালে ভর্তির সুযোগে আনন্দ, প্রথমবারের মতো আলাদা হওয়ার কষ্ট
  • প্রথমবারের মতো প্রশাসনের উদ্যোগে ইফতারের আয়োজন, অনেকে খাবার পাননি
  • চাঁদে অবতরণের পথে দ্বিতীয় বেসরকারি মহাকাশযান ‘ব্লু ঘোস্ট’
  • এক বোনের বুয়েটে আরেকজনের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ, প্রথমবার আলাদা হচ্ছেন তাঁরা