বাবার ছবি বুকে জড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয় ছোট্ট রিদা
Published: 23rd, January 2025 GMT
হত্যার বিচার, পুনর্বাসনের ব্যবস্থাসহ নানা দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত সব শহীদের পরিবার। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে শহিদদের শিশু সন্তান, স্ত্রী, বাবা, মা, ভাই, বোন ও আত্মীয় স্বজনরা অংশ নেয়। এ সময় তারা শহিদদের ছবি ও স্মৃতিচিহ্ন বুকে, হাতে ধারণ করে।
অন্য সবার সঙ্গে মানববন্ধন অংশ নেয় ছোট্ট শিশু রিদা। কিছু না বুঝলেও বুকে জড়িয়ে রয়েছে বাবার ছবি। তার আকুতি, কখন আসবে বাবা। তার বাবার নাম নাজমুল ইসলাম রাজু। তিনি পেশায় একজন দর্জি ছিলেন। রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ছিল তার কর্মস্থল। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া রাজুর স্ত্রী শিল্পী খাতুন জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে উত্তরা এলাকায় গুলিতে নিহত হন তার স্বামী। শহীদ রাজুর একমাত্র সন্তান রিদা।
শহীদ পরিবারের দাবি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৬ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত সরকার একটি হত্যার বিচার শুরু করেনি। নেওয়া হয়নি আহত ও নিহত পরিবারের জন্য কোনো পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। তাদের অভিযোগ, সরকারের জুলাই আগস্ট ফাউন্ডেশন থেকে ৫ লাখ করে টাকা দেওয়ার ঘোষণা থাকলেও তা এখনও পায়নি শহীদদের অনেক পরিবার।
এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা। বক্তব্যে শহিদ পরিবারের অনেকে অভিযোগ করেন, বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় আছে অনেক পরিবার। এ সময় মানববন্ধন অনুষ্ঠনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছাত্র-আন্দোলনে শহীদ হওয়া স্বজন হারানো অনেক পরিবারের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দ্রুত সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং আজীবন সরকারিভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা, আহত ব্যক্তি ও নিহতের পরিবারকে দ্রুত পুনর্বাসন, আহত ব্যক্তি ও নিহতের পরিবারকে পরবর্তী কোনো সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা রাজনৈতিকভাবে কোনো হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দিতে না পারে, সেই আইন পাস, জটিলতা নিরসন করে শহীদ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আহত ও নিহতদের পরিবারকে দ্রুত সহায়তা, গণঅভ্যুত্থানকালে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা এবং গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানান।
মানববন্ধনে ছাত্র সমম্বয়ক, সদস্য ঢাকা জেলা কমিটির দায়িত্বে থাকা মো.
মানববন্ধন অনুষ্ঠানে অন্যান্য মধ্যে আরও বক্তব্য দেন শহীদ পরিবারের শিল্পী, শেফালী , আফাস উদ্দিন প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কেরানীগঞ্জে বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি, শুধু হাত বদলেছে: সারজিস আলম
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘খুনি হাসিনার সময় কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি ও প্লট নিয়ে বাণিজ্য চলত। দুঃখের বিষয়, আজও সেই চাঁদাবাজি ও প্লট বাণিজ্য চলছে। দখল-চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। শুধু চাঁদা আদায়ের হাতবদল হয়েছে।’
মঙ্গলবার ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কেরানীগঞ্জে আমি এই প্রথম এলাম। আমার আরও আগে আসা উচিত ছিল। আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর কেরানীগঞ্জে চাঁদাবাজি থাকবে না। কিন্তু আমরা দেখলাম দুর্নীতি, চাঁদাবাজি এখনও চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে খুনি হাসিনা মানুষের ওপর যে জুলুম চালিয়েছে, বাংলার মানুষ তা ভুলে যায়নি। হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় ছিল, দেশের মানুষের ওপর দুঃশাসন-জুলুম করেছে। গত সাড়ে ১৫ বছর দুঃশাসন-জুলুমের কষ্ট মানুষ ভুলতে পারবে না। আমাদের লড়াই এখনও শেষ হয়নি। আমাদের লড়াই চলছে, চলবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি জাবেদ হোসেন, সায়মন চৌধুরী, অপু হোসেন, ফেরদৌস হোসেন, বকুল হোসেন ও সুমন মিয়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেরানীগঞ্জ শাখার আলামিন মিনহাজ, জুম্মন মিয়া, ইমরান হোসেন প্রমুখ।