সোনারগাঁও পৌরসভার নোয়াইল গ্রামের সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কের বিভিন্ন অংশের মাটি ও ইটের সলিং সরে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন। ফলে প্রায় সময়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।

এ নিয়ে সোনারগাঁও পৌরসভার সাবেক প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ এর বরাবর লিখিত আবেদন করেও কোন ফল হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান। স্থানীয়দের দাবী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকার সুযোগে পৌর প্রকৌশলী তানভীর আহমেদের স্বেচ্ছা চারিতার কারনে সড়কটি সংস্কার হচ্ছে না।

সরেজমিন পৌরসভার নোয়াইল গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ওই গ্রামের লোকজনের চলাচলের একমাত্র এ সড়কের প্রায় দেড়শ থেকে দুই’শ মিটার জুড়ে মাটি ও ইটের সলিং সরে গিয়ে একপাশে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির সংস্কার না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি পৌর কার্যালয়ের নিকটবর্তী স্থানে হওয়া সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারনে সড়কটির সংস্কারের কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না পৌর কর্তৃপক্ষ।

এব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা মোতাহারা নামের এক গৃহিণী খুব প্রকাশ করে বলেন, আমরা পৌরসভা কার্যালয়ের খুব কাছাকাছি হয়েও প্রয়োজনীয় সেবা টুকু পাচ্ছিনা। আশে পাশে উন্নয়ন হলেও এ সড়কটির উন্নয়ন হচ্ছে না।

সড়ক সংস্কারের ব্যাপারে খোঁজ নিতে পৌর কার্যালয়ের উপস্থিত হলে কথা হয় কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাথে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ এ পৌর কার্যালয়ে একাধারে তার কর্মজীবনের দীর্ঘ সাত বছর অতিবাহিত করেছেন। বিগত সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনো এক নেতার পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে নিজের মনমর্জি মত তিনি অফিস করেছেন।

পৌর কার্যালয়ে অবৈধ ভাবে বসবাসও করেছেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তিনি পৌর সাবেক প্রশাসকের কাছে থেকে ১ হাজার টাকার বিনিময়ে কার্যালয়ে থাকার অনুমতি পাস করেন।

ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, গত ৫ আগস্টের পর আবারও ভোল পাল্টে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন এ প্রকৌশলী। তার কাছে কোন সেবার জন্য আসলে ঠিকমতো তাকে অফিসেও পাওয়া যায় না।

পৌরসভা কর্মস্থলে একাধারে দীর্ঘ সাত বছর অতিক্রম হওয়ায় এই প্রকৌশলীর সাথে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সখ্যতা গড়ে উঠেছে। ফলে তিনি কাউকেই তোয়াক্কা করছেন না বলে জানান।

পৌরসভার এক কর্মচারী নাম প্রকাশে জানান, প্রকৌশলী তানভীর আহমেদের স্বেচ্ছাচারিতায় আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। অধনস্থ হওয়ার তার অন্যায় কাজের কোনো প্রতিবাদ করতে পারছি না। তিনি আরও জানান, পৌরসভার অন্যসকল কর্মকর্তা অন্যত্র বদলী হলেও প্রভাব খাটিয়ে তিনি একই কর্মস্থলে দীর্ঘ সাত বছর অতিক্রম করেছেন।

এব্যাপারে পৌরসভার প্রকৌশলী তানভীর আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সড়কের সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় কিভাবে সড়ক সংস্কার ও নির্মাণের কাজ চলছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সোনারগাঁও পৌরসভার প্রশাসক ও সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এতো দিনেও কেনো রাস্তাটির সংস্কার করা হয়নি তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ও প রসভ র কর ছ ন হওয় য় সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ, কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজট

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের গোলড়া গ্রামের শত শত বাসিন্দারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। দীর্ঘদিনের পুরোনো একটি সড়ক পুনরুদ্ধারের দাবিতে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে যানচলাচল বন্ধ হয়ে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে আটকে পড়া যানবাহন গুলো দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর বিকল্প সড়ক গোলড়া হয়ে সাটুরিয়া দিয়ে চলাচল করলে সাটুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সৃষ্টি হয় যানজটের। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন বাসের যাত্রী ও সাধারণ মানুষ। তবে দফায় দফায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রশাসনের লোকজন বসলেও তারা সড়ক চালুর দাবিতে অনড় রয়েছেন।

বুধবার সকাল ১১টার দিকে গোলড়া গ্রামের মানুষ মহাসড়কে অবস্থান নেন এবং পরে অবরোধ গড়ে তোলেন। তাদের অভিযোগ, সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের গোলড়া গ্রামের একটি শতবর্ষী সড়ক স্থানীয় দুটি শিল্প প্রতিষ্ঠান তারাসিমা অ্যাপারেলস লিমিটেড ও পেয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড বন্ধ করে দেয়। ফলে তাদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিনের সমস্যা নিয়ে দুই শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললেও তারা কর্ণপাত করেনি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের দাবি, সড়কটি পাকা দেওয়াল দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় গোড়লা গ্রামের স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কয়েক কিলোমিটার ঘুরে স্কুল কলেজে যেতে হয়। এছাড়া কৃষকের উৎপাদিত ফসল বেচাকেনায় অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়। শতবর্ষী সড়কটি দখল করে দুই শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের স্বার্থে বন্ধ করে দিয়ে এলাকার মানুষের চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

অবরোধকারীদের দাবি, আওয়ামী সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের যোগসাজশে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কোম্পানি দুটি রাতারাতি মানুষের চলাচল সড়কে পাকা দেওয়াল গড়ে তুলে। ফলে গ্রামবাসী তাদের ন্যায্য পথচলার অধিকার হারিয়েছে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যতক্ষণ না বন্ধ হওয়া সড়কটি পুনরায় খুলে দেওয়া হবে, ততক্ষণ তারা সড়ক ছাড়বেন না। 

এদিকে, অবরোধের কারণে মহাসড়কে আটকে পড়েছে দূরপাল্লার বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

সাটুরিয়া থানার ওসি শাহিনুল ইসলাম জানান, গ্রামবাসীরা সকাল ১১টা থেকে মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছে, যার ফলে দুইপাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। তবে প্রশাসন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসীদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা চলছে। তিনি আশা করছেন, দ্রুত একটি সমাধান বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে দুই শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ, কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজট