‘প্রান্তিক নারীদের সরকারি সেবা নিশ্চিত করুন’
Published: 23rd, January 2025 GMT
প্রান্তিক নারীদের সরকারি সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, অসহায়, দুস্থ ও গরীব মানুষের জন্য সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নানা কার্যক্রম চালু রয়েছে। কিন্তু যোগ্য অনেকেই ওসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বরং অযোগ্যরা নানাভাবে সুবিধা গ্রহণ করে থাকে। তাই প্রান্তিক নারীরা যাতে সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত সংলাপে এই আহ্বান জানানো হয়। বিএনপিএস’র ঢাকা পশ্চিম কেন্দ্র আয়োজিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেছা।
সংলাপে বক্তৃতা করেন থানা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজনীন আক্তারী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সমাজ সেবা কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সমাজ সেবা কর্মকর্তা জহির উদ্দিন, সমাজসেবা কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদ, থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাহ্হার, আসক কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট শিল্পী সাহা, জরিনা সিকদার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ রোকসানা সুলতানা, লরেল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো.
আরো পড়ুন:
স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সুপার সিক্স অনুর্ধ্ব-১৯ মেয়েরা
বিশ্বকাপের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ: ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়
সংলাপে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন বিএনপিএস’র ঢাকা পশ্চিম কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, “বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মা ও শিশু ভাতা, দুস্থ নারী ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতাসহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নানা প্রকল্প রয়েছে। এসব ভাতার উপকারভোগী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের। কিন্তু নানা কারণে যোগ্য অনেকেই সরকারের এই সুবিধাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হন। এই বঞ্চনা অবসানের জন্য সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।”
সংলাপে উপস্থিত সরকারী কর্মকর্তারা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রদেয় সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেন এবং প্রকৃত ব্যক্তি যেন সেবা পায় সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কমিটিতে নারী সদস্যদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করার আগে কী হয়েছিল, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলা করার আগে নারী ও শিশুদের কাছ থেকে পুরুষদের আলাদা করেছিলেন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা। এরপর পুরুষদের তাঁদের নাম জিজ্ঞাসা করা হয় এবং খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা এবং হামলার ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া মানুষেরা এ কথা বলেছেন।
গত মঙ্গলবার বৈসরান উপত্যকায় হামলার সময় ঘটনাস্থলে প্রায় এক হাজার পর্যটক এবং তাঁদের নানা ধরনের সেবাদানকারী ৩০০ স্থানীয় ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। ঘন পাইনবনঘেরা সবুজ পাহাড়ি তৃণভূমির জন্য বৈসরান উপত্যকা ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত।
তিনজন বন্দুকধারী এই হামলা চালিয়েছেন। ভারতে গত প্রায় দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা এটি।
একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তৃণভূমির আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। তাঁরা প্রায় ৬০টি গুলি চালান। তবে তাঁরা নারী ও শিশুদের ওপর হামলা করেননি। গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। হামলার ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া মানুষের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি এ কথা বলেছেন।
আরও পড়ুনকাশ্মীরের মানুষকে শত্রু ভাববেন না: মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ১৬ ঘণ্টা আগেহামলায় বাবা ও চাচাকে হারিয়েছেন ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা আসাবরী জগদালে। স্থানীয় গণমাধ্যমকে আসাবরী বলেন, গুলি শুরু হলে তিনি ও তাঁর পরিবার অন্য পর্যটকদের সঙ্গে কাছাকাছি একটি তাঁবুতে লুকিয়ে পড়েছিলেন।
আসাবরী বলেন, তাঁর বাবার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁর মাথায়, কানের পেছনে এবং পিঠে মোট তিনটি গুলি চালান। তাঁর কাকা তখন তাঁর পাশেই ছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর চার থেকে পাঁচটি গুলি চালান।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু শিক্ষক দেবাশীষ ভট্টাচার্য ওই হামলায় বেঁচে যান। তিনি বলেন, বন্দুকধারীরা চলে যাওয়ার পর তাঁরা পালিয়ে যান এবং প্রাণে বাঁচতে প্রায় দুই ঘণ্টা জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হেঁটেছেন।
নিরাপত্তাবাহিনীর একটি সূত্র বলেছে, হামলাকারী ব্যক্তিরা ঐতিহ্যবাহী লম্বা কুর্তা ও ঢিলে পায়জামা পরা ছিলেন এবং তাঁদের একজনের শরীরে একটি ক্যামেরা লাগানো ছিল। জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বৈসরান উপত্যকার তিনটি স্থানে তাঁরা গুলি চালান।
নিরাপত্তা সূত্র বলছে, কিছু পর্যটককে মাঠে অবস্থিত খাবারের দোকানগুলোতে গুলি করা হয়েছে। আবার কিছু মানুষকে জঙ্গলের ভেতর নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়।
হিমালয়ের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পেহেলগাম থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরত্বে বৈসরানের অবস্থান। সেখানে পৌঁছাতে পর্যটকদের পায়ে হেঁটে যেতে হয় অথবা টাট্টু ঘোড়া ভাড়া করতে হয়।
এই জায়গায় জিপলাইনিং ও জর্বিংয়ের মতো রোমাঞ্চকর আয়োজনগুলো আছে। এটি তুলিয়ান হ্রদের দিকে যাত্রারত পর্বতারোহীদের জন্য ক্যাম্পসাইট হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। বৈসরান থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে তুলিয়ান হ্রদের অবস্থান।
প্রশান্ত সাতপথি, তাঁর স্ত্রী ও ৯ বছর বয়সী ছেলে পূর্বাঞ্চলীয় ওড়িশা রাজ্য থেকে বৈসরানে ভ্রমণে এসেছিলেন। এটি ছিল তাঁদের চার দিনের সফরের শেষ দিন।
প্রশান্তের স্ত্রী প্রিয়দর্শিনী স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, একটি জিপলাইন রাইড শেষ করা মাত্রই একটি গুলি এসে সাতপথির মাথায় লাগে। তিনি বলেন, ‘তিনি আমার চোখের সামনেই লুটিয়ে পড়েন।’
হামলায় নিহত ২৬ জনের একজন পেহেলগামের টাট্টু ঘোড়াচালক আদিল হুসেন শাহ। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ গত বুধবার শাহের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শুনেছি তিনি সাধারণভাবে মারা যাননি, তিনি সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন… তিনি হামলা থামানোর চেষ্টা করেছিলেন, হয়তো বন্দুকটি কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেছিলেন, সেই কারণেই তাঁকে নিশানা করা হয়।’