বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে দুদকের অভিযান
Published: 23rd, January 2025 GMT
নানা অনিয়ম এবং রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় সেখানে বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান দুদক বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে দুদকের একটি দল হাসপাতালে অভিযান চালায়। এসময় দুদকের কর্মকর্তারা প্রথমে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দারের সঙ্গে অভিযোগ নিয়ে কথা বলেন। এরপর তারা তত্ত্বাবধায়ককে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন।
পেটের সমস্যায় হাসপাতালে আসা মো.
আরো পড়ুন:
ফরিদপুরে হামলায় ৩ ডিবি পুলিশ আহত
ফরিদপুরে হাসপাতালে হেনস্তায় রোগীর মৃত্যু, স্বজনদেরও মারধর
মিন্টু নামে অপর রোগী বলেন, “হাসপাতালে তেমন কোনো সেবা পাই না। দুর্নীতির সীমা নেই। রোগীদের খাবারো ঠিকমতো দেওয়া হয় না। দুদক অভিযান চালিয়েছে, এখন যদি কিছুটা ভালো হয় নার্স ও চিকিৎসকরা।”
দুদকের বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, “হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীদের পাঠানোর প্রমাণ মিলেছে। এ বিষয়ে কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। নার্স ও চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “রোগীদের খাবারের বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রান্নাঘর পরিদর্শনে দেখা গেছে- যিনি রান্নার দায়িত্বে আছেন, তিনি সরাসরি রান্না করেন না। খাবারের পরিমাণেও অনিয়ম পাওয়া গেছে। উদাহরণ হিসেবে, রোগীদের জন্য এক পিস মাংসের ওজন হওয়া উচিত ৯৬-৯৭ গ্রাম, অথচ দুই পিস মাংস মিলে হয়েছে ৯২ গ্রাম। এটি থেকে পরিষ্কার, কী ধরনের অনিয়ম চলছে।”
সাইদুর রহমান বলেন, “আমাদের টিম সকাল থেকেই গোপনে কাজ করেছে। চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং খাবারের মানোন্নয়নসহ বেশ কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে আবারো ফলোআপ করা হবে।”
বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, “চিকিৎসক ও নার্স সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে ৩৪টি চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে। প্রয়োজন ২০০ জন নার্স, কিন্তু রয়েছেন মাত্র ৭০ জন। জনবল সংকট দূর করা গেলে দুদকের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।”
ঢাকাশহিদুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘চিকিৎসক হিসেবে সম্মান চাই’
“এক সময় উপমহাদেশে এলএমএফ ডাক্তারদের চিকিৎসা সেবার উপর সবাই নির্ভর করত। পরবর্তী তা বাতিল করে ডাক্তারদের কনডেন্স কোর্সের মাধ্যমে এমবিবিএস কোর্স করিয়ে গ্রাম থেকে শহরের হাসপাতাল ও প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োগ করা হয়। ফলে গ্রাম এলাকার রোগীরা চিকিৎসক সংকটে ধুঁকতে থাকে।
‘এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় অধিক চিকিৎসক তৈরির লক্ষ্যে সরকার ১৯৭৬ সালে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল চালু করেন। এই সকল চিকিৎসকদের দিয়ে থানা হেলথ কমপ্লেক্সসহ ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে সেবা দিয়ে মানুষের জীবন রক্ষা করেছে। কিন্তু ওই চিকিৎসকরা বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পরেও ডাক্তার লেখা নিয়ে হয়েছেন ষড়যন্ত্রের শিকার।
‘সম্প্রতি গ্রাজুয়েট চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থী কর্তৃক ম্যাটস কোর্স কারিকুলাম, চার দফা নিয়ে মিথ্যাচার, কটুক্তি করেছেন যা আমাদের জন্য মানহানিকর। আমরা কারো প্রতিপক্ষ নই, চিকিৎসক হিসেবে আমরা সম্মান চাই।”
রবিবার (২ মার্চ) দুপুরের দিকে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গ্রাজুয়েট চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থী কর্তৃক ম্যাটস কোর্স কারিকুলাম, চার দফা নিয়ে মিথ্যাচার, কটুক্তির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ও সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ মানিকগঞ্জ জেলা শাখা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বিডিএমএ মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আবুল হাসান বলেন, “শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া,কোর্সের নাম ও কারিকুলামে অসংগতির সমাধানসহ একাধিক দাবি যখন সরকার পক্ষ মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন বা কাজ শুরু করেন। ঠিক তখনই একটি গোষ্ঠী সরকারকে চাপে রাখতে নানা কর্মসূচি পালন করেন।”
এসময় বিডিএমএ মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ডা. এম এ কাদের বলেন, “মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টরা গ্রাম বাংলার ৮০ ভাগ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে। তারা যাতে নামের আগে ডাক্তার লিখতে না পারে সেজন্য অপশক্তি কাজ করছে। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা আছে। রায় প্রদানের আগ পর্যন্ত ডাক্তার লিখতে সমস্যা নেই। তবে আমাদের প্রশাসনিকভাবে মর্যাদা দেওয়া হয় না।”
এসময় বিডিএমএ মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সহসভাপতি ডা. আব্দুল আওয়াল, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্যপরিষদের সমন্বয়ক মো. নাজমুল হাসান, ম্যাটস শিক্ষার্থী মো. আশ্রাফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/চন্দন/এস