যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেটের সিনেট ১৪ এপ্রিলকে ‘বাংলা নববর্ষ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অঙ্গরাজ্যে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের স্বীকৃতি ও বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি দৃঢ় করার লক্ষ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সময় বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

বাংলা নববর্ষের ইতিহাস উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্তে বলা হয়, ভারতের মুঘল সাম্রাজ্যে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের সূচনা। বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে, যেমন লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ডসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে একই সময়ে নববর্ষ উদযাপিত হয়ে থাকে। বাংলা ভাষায় কথা বলেন এমন অভিবাসীর কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলা থেকে আগত বিপুল সংখ্যক অভিবাসী এই রাজ্যে নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। এদের অর্ধেকই নিউইয়র্কের বাসিন্দা।

পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালির জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ণ এ কথা উল্লেখ করে সিদ্ধান্তটিতে বলা হয়, প্রতি বছরই বিপুল সমারোহে এই দিনটি উদযাপিত হয়ে থাকে। ২০২২ সাল থেকে দিবসটি নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, প্রবাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপন ও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসারে নিউইয়র্কের মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

সিদ্ধান্তে বলা হয়, নিউইয়র্ক স্টেট বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের গৌরবময় সাফল্য, বিশেষত এই রাজ্যে বসবাসরত বাঙ্গালিদের অব্যাহত অবদানের স্বীকৃতি জানিয়ে ১৪ এপ্রিলকে এই রাজ্যে বাংলা নববর্ষ হিসাবে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তে নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ অবদানের জন্য শিকাগো টাওয়ার-খ্যাত প্রকৌশলী এফ আর খান, লিভিং দ্য ওয়ার্ল্ড বিহাইন্ড-খ্যাত রুমানা আনম, লেখক ঝুম্পা লাহিড়ী, অমিতাভ ঘোষ, ইকবাল কাদির, ইউটিউবের কো ফাউন্ডার জাওয়েদ করিম, খান একাডেমির ফাউন্ডার সালমান খান, ওমর ইশরাকসহ কৃতি বাঙালিদের নাম বিশেষ বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।

মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার ও সিইও বিশ্বজিত সাহার উদ্যোগে সিনেটর লুইস সেপুলেভদা সিনেটে প্রস্তাবনাটি তুলে ধরেন। গতকাল এটি গৃহীত হয়।

বিশ্বজিত সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যে বিশ্ববাঙালি রয়েছে এই স্বীকৃতি সকলকে উজ্জীবিত ও গৌরবান্বিত করবে। উল্লেখ্য এন আর বি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের উদ্যোগে গত ২০২৩ সাল থেকে টাইমস স্কয়ারে বিশ্ববাঙালিরা বাংলা বর্ষবরণ করে আসছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল নববর ষ ন উইয়র ক র অবদ ন র নববর ষ উদয প

এছাড়াও পড়ুন:

‘স্বদেশ পর্যায়ের গানে খেয়াল করলাম দর্শকেরা চোখ মুছছেন’

দীর্ঘদিন পর রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী, শিক্ষক অণিমা রায় যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। ব্যক্তিগত ভ্রমণ হলেও এবারের যাত্রায় নিউইয়র্ক, ডালাসসহ বেশ কিছু রাজ্যে সংবর্ধিত হলেন তিনি। ১৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো শহরে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে অণিমা রায়কে সংবর্ধনা জানানো হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বায়োস্কোপ ফিল্মস। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সানফ্রান্সিসকোর ফ্রিমন্ট এলাকার একটি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ সংবর্ধনা দেন বায়োস্কোপ ফিল্মসের কর্ণধার রাজ হামিদ ও নওশাবা রুবনা রশীদ। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী শিল্পী নন্দিতা ইয়াসমিন প্রমুখ।

‘বৈশাখে রবীন্দ্রসংগীতের আসর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের শুরুতে শায়লা জামান দিনা ও রাজশ্রী গান শোনান। এরপর মূল পরিবেশনায় একে একে ১৫টি রবীন্দ্রসংগীত গেয়ে শোনান অণিমা রায়। শিল্পী তাঁর অনুষ্ঠান শেষ করেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ গানটির মাধ্যমে। এ গানের সময় দর্শকদের আপ্লুত হতে দেখা যায়।
আয়োজন প্রসঙ্গে শিল্পী অণিমা রায় বলেন, ‘আমার এবারের ভ্রমণ একেবারেই ব্যক্তিগত। সন্তানকে নিয়ে পরিবারের সঙ্গে অল্প কিছুদিনের জন্য সময় কাটানো। সেখানে এত এত মানুষের ভালোবাসা পাব, তা সত্যিই আনন্দের। একজন শিল্পী এই ভালোবাসা কুড়াতেই গান করেন। সেখানে নিউইয়র্ক, ডালাস ও সানফ্রান্সিসকোতে যে সম্মানটুকু পেলাম, তা সত্যিই অনেক দিন আরও ভালো কিছু গান করার শক্তি জোগাবে। বিশেষ স্বদেশ পর্যায়ের গানে খেয়াল করলাম দর্শকেরা চোখ মুছছেন। সত্যিই এ এক অভূতপূর্ব প্রাপ্তি আমার। কৃতজ্ঞতা ক্যালিফোর্নিয়ার দর্শকদের প্রতি। এত নিবিষ্ট শ্রোতা–দর্শকের সামনে সত্যিই গাইতে ইচ্ছে করে।’

অনুষ্ঠানে অণিমা রায়ের পরিবেশনায় ছিল ‘আকাশ ভরা সূর্যতারা’, ‘এরা সুখের লাগি’, ‘গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙামাটির পথ’, ‘কতবারও ভেবেছিনু’, ‘প্রাণ চায় চক্ষু না চায়’সহ একাধিক রবীন্দ্রসংগীত ও তিন কবির গানের পরিবেশনা। একটি অংশে ‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি’ পরিবেশনা অণিমা রায়ের গানের সঙ্গে রাজ হামিদের আবৃত্তি ও নওশাবা রুবনা রশীদের নৃত্য অনুষ্ঠানে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন যারীন তাসনিম।

অনুষ্ঠানে অণিমা রায়কে সংবর্ধনা জানানো হয়। ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবা হলেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক খলিল, দেখতে পারলেন না সদ্যোজাত সন্তানের মুখ
  • সমকালের দেওয়া উপহার পেয়ে আনন্দে আত্মহারা মুশফিকের পরিবার
  • ‘স্বদেশ পর্যায়ের গানে খেয়াল করলাম দর্শকেরা চোখ মুছছেন’