দীর্ঘ ১৬ বছর পর এই প্রথম বরিশালের গৌরনদীতে উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নির্ধারণ করা হয়েছে। দীর্ঘ বছর পর লটারিতে ঠিকাদার নির্ধারণ হওয়ায় সাধারণ ঠিকাদারদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২৪-২৫ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের এইচবিবি প্রকল্পের আওতায় সরিকল ও বাটাজোর ইউনিয়নের দুই কিলোমিটার মাটির রাস্তা এক কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে হেরিং বোন বন্ড- (এইচবিবি) করণের লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে এক মাস আগে দরপত্র আহ্বান করা হয়। 

৬ জানুয়ারি দরপত্র দাখিলের শেষদিন পর্যন্ত দুই প্যাকেজের পক্ষে ২৪৯টি দরপত্র জমা পড়ে। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা হলরুমে উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নির্ধারণের আয়োজন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.

আবু আবদুল্লাহ খান।

এসময় উপজেলা প্রকৌশলী মো. অহিদুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিনসহ শতাধিক ঠিকাদার উপস্থিতি ছিলেন। লটারিতে মেসার্স বনলতা এন্টারপ্রাইজ ও শরীফ এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিজয়ী হয়।

লটারি বিজয়ী মেসার্স বনলতা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী জহুরুল ইসলাম জহির বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত গৌরনদী উপজেলায় যতগুলো উন্নয়ন কাজ হয়েছে। তাতে নির্দিষ্ট কয়েকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছাড়া সাধারণ ঠিকাদাররা কেউ সিডিউল ক্রয় কিংবা দরপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ পায়নি। গত ৫ আগস্টের পর স্থানীয় প্রশাসনের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় সাধারণ ঠিকাদাররা দরপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ফলে সকল ঠিকাদারের উপস্থিতিতে উৎসবমূখর পরিবেশে উন্মুক্ত লটারীর মাধ্যমে ঠিকাদার নির্ধারণ হয়েছে। উন্মুক্তভাবে ঠিকাদার নির্ধারিত হওয়ায় আমরা সাধারণ ঠিকাদাররা আনন্দিত।”

লটারিতে হেরে যাওয়া একাধিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নির্ধারণ প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, “এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে স্বচ্ছতার সাথে সেবা দিয়ে আসছি। সেই ধারাবাহিকতায় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ ঠিকাদারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নির্ধারণ করতে পেরেছি। ভবিষ্যতেও প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।”

ঢাকা/পলাশ/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দরপত র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট

আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।

পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।

এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে। 

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা

এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও। 

রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।

প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”

অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”

অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”

গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”

কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”

স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ