কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন বিডিআর জওয়ানরা
Published: 23rd, January 2025 GMT
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাড়ে ১৫ বছর ধরে কারাগারে আটক ১৭৮ জন সাবেক বিডিআর জওয়ান আজ জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন। এরমধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন ১২৬ জন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৬ জন কাশিমপুর কারাগার থেকে বের হয়েছেন।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া বিস্ফোরক মামলায় জামিন পাওয়া এই ১৭৮ আসামির জামিননামা গতকাল কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়। সেসব জামিননামা যাচাই-বাছাই শেষে অন্য কোনো মামলায় আটকাদেশ না থাকায় তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় জামিন পান গত ১৯ জানুয়ারি।
আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের (প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) বিচারক ইব্রাহীম মিয়া ওই জামিন আদেশ দেন। ওই আদেশের মধ্যে দিয়ে গত ১৬ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই আসামিরা জামিন পান।
আদেশের পরে মামলার চিফ প্রসিকিউটর মো.
অর্থাৎ হত্যা মামলায় যে আসামিরা বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টে খালাস পেয়েছেন, তাদের জামিন দেন আদালত।
১৬ বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ—বিজিবি) সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহ হয়। সেদিন বিডিআরের কয়েকশ’ সদস্য পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালান। প্রায় দুই দিনব্যাপী চলা বিদ্রোহে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পিলখানায় বিডিআরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও সেদিন নৃশংসতার শিকার হন।
এই হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয় ৮৫০ জনকে। বিচারিক আদালত ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এ মামলার রায় দেন।
রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে খালাস পান ২৭৮ জন। রায় ঘোষণার আগে চার আসামি মারা যান।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরও ২২৮ জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা, খালাস পান ২৮৩ জন। হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা যান। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেন।
২০১০ সালে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ আসামির বিরুদ্ধে বিচার কাজও শুরু হয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি ওঠে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহিদ পরিবারের সদস্যরা।
এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয় সরকার।
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ড আর র র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
শোলাকিয়া ঈদগা’র ইমাম হিসেবে আবারও নিয়োগ পাচ্ছেন মাওলানা সাইফুল্লাহ
কিশোরগঞ্জের পৌনে তিনশ’ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগা’র ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদকে সরিয়ে আবারও মাওলানা একেএম সাইফুল্লাহকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঈদগা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের সভাপতিত্বে আজ রোববার জেলা কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ঈদ জামাত প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঈদগা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ মিয়া।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মাওলানা সাইফুল্লাহকে পরিবর্তন করে ইসলাহুল মুসলিমীন বাংলাদশের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদকে ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ইমাম সাইফুল্লাহ জেলা বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল্লাহ রাব্বানীর ছোট ভাই। এ কারণেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল। তবে ইমাম সাইফুল্লাহ কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁর পুনর্বহালের দাবি সব সময়ই ছিল।
মাওলানা সাইফুল্লাহ জানান, তিনি ২০০৪ সাল থেকে শোলাকিয়ায় ইমামতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাঁকে ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর ইমামতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।