দুর্ব্যবহারের অভিযোগে মধ্যরাতে বাস ভাঙচুর করল ইবি শিক্ষার্থীরা
Published: 23rd, January 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসবি পরিবহনের সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে বাস আটক করে ভাঙচুর চালায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় একজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আহত মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, জিওগ্রাফি বিভাগের ১৩ জন শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া শহরের কাউন্টার থেকে এসবি পরিবহনের বাসে উঠে। পরে তাদের পেছনে বায়োটেকনোলজি বিভাগের আনুমানিক ১৫ জন শিক্ষার্থী বাসে উঠে। কিন্তু গাড়ির সুপারভাইজার ওই ১৩ জন ছাড়া বাকি শিক্ষার্থীদের গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলেন। এতে বায়োটেকনোলজির শিক্ষার্থীরা নামিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সুপারভাইজার বলেন, ‘আপনারা বাসের পরিবেশ নষ্ট করেছেন, আপনাদের নেব না’।
শিক্ষার্থীরা আরো জানান, এমনটা বলে তিনি বাস ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আপনি কোথা থেকে যাবেন?’ তখন সুপারভাইজার ‘ক্যাম্পাসের সামনে দিয়েই যাব, আপনারা যা পারেন কইরেন’ বলে তাদের না নিয়েই বাসস্ট্যান্ড ত্যাগ করেন।
পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তার সহপাঠীদের বিষয়টি জানান। সহপাঠিরা ইবির প্রধান ফটকের সামনে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কে গিয়ে ওই বাসটি আটক করেন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ কয়েকজন শিক্ষার্থী বাস ভাঙচুর শুরু করেন।
এ সময় এক শিক্ষার্থীর পা কেটে যায়। আহত ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা গাড়ি ভাঙচুরে বাধা দেন। এতে ভাঙচুরকারীরা তাদের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। বাস ভাঙচুরকারীরা মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.
এ বিষয়ে এসবি পরিবহনের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি জানার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে আসি। কে বা কারা বাস ভাংচুর করছে তা খতিয়ে দেখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে জামাই মেলায় দর্শনার্থীদের ঢল
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুরে শুরু হয়েছে দেড়েশ বছরের ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা। রসুলপুর বাছিরননেছা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) শুরু হওয়া এ মেলা চলবে রবিবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত। মেলাকে কেন্দ্র করে আজ স্কুল মাঠে মানুষের ঢল নেমেছিল।
এলাকাবাসী ও মেলার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর ১১, ১২ ও ১৩ বৈশাখ (সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে) রসুলপুরে জামাই মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের অন্তত ৩০ গ্রামের বিবাহিত মেয়েরা তাদের স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি আসেন। মেলা উপলক্ষে জামাইকে বরণ করে নিতে শ্বশুর-শাশুড়িরাও আগে থেকেই নেন নানা প্রস্তুতি।
ঐতিহ্য অনুযায়ী মেলার সময় শাশুড়িরা মেয়ের জামাইয়ের হাতে টাকা দেন। সেই টাকার সঙ্গে জামাইরা তাদের টাকা দিয়ে মেলা থেকে শ্বশুরবাড়ির সবার জন্য বাজার করেন। মেলাটি সবাই খুব উপভোগ করেন।
আরো পড়ুন:
মহেশপুরে চড়ক পূজায় পুণ্যার্থীদের ঢল
খানজাহান আলীর মাজারে মেলা শুরু, ভক্তদের ঢল
এদিকে, মেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন দোকানিরা। মেলায় বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনী, খাবার ও মিষ্টির দোকান বসেছে। বৈশাখের ভ্যাপসা গরমের মধ্যেও শুক্রবার মেলায় এসেছিলেন হাজারো মানুষ।
মিলন মাহমুদ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, “মেলাটি জামাই মেলা নামে পরিচিত। মেলাটিকে কেন্দ্র করে এই এলাকার জামাইরা একত্রিত হয়। এমন মেলায় আসতে পেরে আমি আনন্দিত।”
রসুলপুরের বাসিন্দা ও লেখক রাশেদ রহমান বলেন, “প্রায় দেড়শ বছর ধরে এই মেলার আয়োজ করা হচ্ছে। এলাকার মানুষের কাছে ঈদ বা পূজার মতোই এই মেলা একটি উৎসব। মেলাটি বৈশাখী মেলা হিসেবে শুরু হলেও এখন এটি জামাই মেলা হিসেবে পরিচিত।”
মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান বলেন, “মেলা সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন দোকানিরা। তারা খাবার, মিষ্টিসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনীর দোকান দিয়েছেন। মেলায় একাধিক ফার্নিচারের দোকানও বসেছে। রসুলপুরের এই মেলাটি বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। আগামী রবিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ মেলা শেষ হবে। তিনদিনে মেলায় দুই কোটি টাকার ওপরে বাণিজ্য হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ