সাধন চন্দ্রের আয়কর নথি জব্দ, গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন
Published: 23rd, January 2025 GMT
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন।
তার উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৯ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। তাকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেছেন আদালত।
দুদকের পক্ষে কমিশনের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এসব আবেদন করেন।
আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়, সাধন চন্দ্র মজুমদার ২৫ কোটি ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৬৮ টাকার টাকার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখেছেন। ৬৫টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৪৩ কোটি চার লাখ ৪৭ হাজার ৩৭৫ টাকা লেনদেন করেছেন। মানিলন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ অসৎ উদ্দেশ্যে হস্তান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে অপরাধ করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য। গত ১৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামির জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার আয়কর নথির শুরু হতে ২০২৪-২৫ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর নথির স্থায়ী অংশ ও বিবিধ অংশসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র/তথ্যাদি জব্দ করা একান্ত প্রয়োজন।
গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনে বলা হয়, সাধন চন্দ্র মজুমদার দুদকের করা মামলায় জামিনে মুক্তি পেলে তার দখলীয় সম্পদ এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া তিনি জামিনে মুক্তি পেলে তদন্তে বাধা সৃষ্টি করতে পারেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো বিশেষ প্রয়োজন।
শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন।
৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে সাধন চন্দ্র মজুমদারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। এরপর তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কোম্পানির আয়কর রিটার্নের সময় বাড়ল এক মাস
কোম্পানি করদাতাদের কর জমার সময় বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। বৃহস্পতিবার এক আদেশে কোম্পানির ক্ষেত্রে রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়িয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ১৬ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে।
আয়কর আইন অনুযায়ী, ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার রিটার্ন জমা শেষ সময় ৩০ নভেম্বর। বোর্ড চাইলে এরপর একক সিদ্ধান্তেই আরও এক মাস সময় বাড়াতে পারে।
অপর এক আদেশে ব্যক্তি করদাতাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। দুই দফা সময় বাড়ানোর পর শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ নিয়ে তৃতীয় দফায় আজ তা বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে এনবিআরের কর বিভাগ।
এর আগে ২৯ ডিসেম্বর ও ১৭ নভেম্বর পৃথক দুটি আদেশে দুই দফা এক মাস করে সময় বাড়ায় এনবিআর। বর্তমানে এক কোটির বেশি কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাঁদের মধ্যে প্রতিবছর ৪০ লাখের বেশি টিআইএনধারী রিটার্ন দেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়াতে ইতোমধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে ‘সবুজ সংকেত’ দেন। এরপর এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দুই দফায় দুই মাস সময় বাড়িয়েও প্রত্যাশা অনুযায়ী রিটার্ন জমা পড়েনি। তা ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন। যেমন– সার্ভারে অতিরিক্ত চাপ, সংশোধনী রিটার্নের সুযোগ না থাকা, রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা, রিটার্নের ফাইনাল প্রিভিউ ডাউনলোডে সমস্যা। পাশাপাশি কর আইনজীবীরা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। সব দিক বিবেচনা করেই ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের জন্য তৃতীয় দফায় ১৫ দিন সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
এনবিআর থেকে জানা গেছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ লাখেরও বেশি ব্যক্তি শ্রেণির করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের আশা ছিল, প্রায় ৫০ লাখ রিটার্ন জমা পড়বে। কিন্তু গত ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৪ লাখের কিছুটা বেশি রিটার্ন জমা পড়েছে।