সাব্বির-ইয়াসিরের শৈলীকে পূর্ণতা দিতে ব্যর্থ রাজশাহী
Published: 23rd, January 2025 GMT
বিপিএলে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি, ২০২৫) চট্টগ্রাম পর্বের শেষ দিনে টেবিল টপার রংপুর রাইডার্স মুখোমুখি হয়েছিল দুর্বার রাজশাহী। নামে দুর্বার হলেও আদতে ‘দুর্বল’ এই দল রানের পুঁজি পায় মূলত ইয়াসির আলী রাব্বির ও সাব্বির হোসেনের ঝড়ো দুই ইনিংসের কল্যাণে। রাজশগাহী দলের বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সম্ভাবনা জাগিয়েও বড় রান করতে ব্যর্থ হয় তাসকিন আহমেদের দল।
এবারের আসরে দুই দল প্রথম মোকাবেলায় টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। রাজশাহীর জিসান আলমের পরিবর্তে দলে ঢুকা সাব্বিরের বিধ্বংসী ব্যাটিং প্রদর্শনী সোহানের ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত সঠিক কি না সেটা ভাবাচ্ছিল। পরে সেই প্রশনকে আরও পোক্ত করেন ইয়াসির। তবে দলটা যখন রাজশাহী তখন সবকিছুই থাকে এলমেলো। শেষ ২৫ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল চালান দলটির ব্যাটসম্যানরা।
রাজশাহী প্রথম পাওয়ার প্লে শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৬২ রান তুলেছিল স্কোরবোর্ডে।
রাজশাহীর ওপেনার মোহাম্মদ হারিস প্রথম ওভারেই রাকিবুল হাসানের বলে ক্যাচ তুলেও জীবন পান। এরপরও ব্যক্তিগত ইংসটি বড় করতে পারেননি এই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান। সেই রাকিবুলের বলে ক্যাচ দিয়েই ফেরেন ১২ বলে ১৯ রান করা এই ওপেনার। তবে রানের চাকা সচল রাখেন সাব্বির এবং এনামুল হক বিজয়।
পঞ্চম ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বোলিংয়ে আসলে তাকে ছক্কা মেরে স্বাগত জানান সাব্বির। পরের দুই বলে আরও দুটি চার মারেন তিনি। ফলে ৪.
২৪ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর সাব্বির-এনামুল মিলে যোগ গড়েন ২৮ বলে ৫২ রানের জুটি। ১৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৯ রান করা সাব্বির খুশদিল শাহর বলে ছয় মারতে গিয়ে সাইফুউদ্দিনের দুর্দান্ত এক ক্যাচের শিকার হন। পরেই বলেই রায়ান বার্লকে শূন্য হাতে ফেরান খুশদিল। দলীয় সংগ্রহ তখন ৭৬ রান।
তৃতীয় উইকেট হারানোর পর বিজয় এবং রাব্বির ব্যাটে এগিয়ে যেতে থাকে রাজশাহী। ৩৫ বলে এই জুটি পঞ্চাশ রান তোলে। ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়ে যান রাব্বি। সাইফউদ্দিনের বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ছক্কা হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ৭৬ রানের এই জুটি ভাঙেন খুশদিল শাহ। তাকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিস টাইমিং করে সোহানের ক্যাচে পরিণত হন রাব্বি। দলীয় রান তখন ১৫২। এই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান ৩২ বলে ২টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬০ রান করে রাজশাহীকে দারুন ভিত দিয়ে যান।
তবে রাব্বির তৈরি করা ভিতকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় রাজশাহী। দুই বল পরেই আকবর আলীর সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে ফেরেন ৩১ বলে ৩৪ করা এনামুল। এরপর তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পরে রাজশাহীর ব্যাটিং অর্ডার। আর কোন ব্যাটসম্যানই দুই অংকের ঘর স্পর্ষ করতে পারেননি।
তাতেই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রানেই থামে তাসকিন আহমেদের দল। আকিভ ও খুশদিল ৩টি করে উইকেট নেন রংপুরের পক্ষে
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ব য টসম য ন উইক ট হ র র ন কর প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।