ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে: মাহমুদুর রহমান
Published: 23rd, January 2025 GMT
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আমার দেশের যে লড়াই, সম্পাদক হিসেবে আমার যে লড়াই সেটা অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত মাহমুদুর রহমানে বিরুদ্ধে করা আপিলের মামলায় শুনানি শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান।
ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ তারেক এজাজের আদালত আপিলের রায়ের তারিখ আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, “আমরা যদি প্রথম দিন থেকে প্রতিবাদ করতাম তাহলে ১৫ বছর ধরে এতো জুলুম, গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হতো না। এভাবে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিল্লির কাছে বিসর্জন দেওয়া হতো না। জণগণের কাছে আমার আহ্বান, আর কোনো ফ্যাসিবাদী সরকারকে দেশে জায়গায় দেবেন না। সব ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই যেন অব্যাহত থাকে।”
তিনি বলেন, “মামলা যখন করা হয় তখন আমি জেলে বন্দি ছিলাম। এ মামলার সঙ্গে কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা নেই। এই মামলা করার সময় আমি পত্রিকা অফিসে বন্দি ছিলাম। পত্রিকা অফিস পুলিশ, র্যাব ঘিরে রেখেছিল। এটাতে প্রমাণিত হলো একটা রাষ্ট্র কতটা নির্মম হতে পারে মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করতে।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনার বিদায় হয়েছে। ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আমার দেশের যে লড়াই, সম্পাদক হিসেবে আমার যে লড়াই সেটা অব্যাহত থাকবে। এই মামলাটি হয়েছিল শেখ হাসিনার ছেলেকে নিয়ে, এমন শতাধিক মামলা আমার বিরুদ্ধে আছে। শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপকে নিয়ে ৩৬টি মামলা রয়েছে। এরকম একটি মামলাতেই আমার ওপর হামলা করা হয়েছিল৷ যতদিন জীবিত আছি এই লড়াই চালিয়ে যাব।”
মাহমুদুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের জনগণকে এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। যেন কোনো ফ্যাসিবাদ সরকারকে উঠতে দেওয়া না হয়। জনগণের প্রথম দিন থেকে প্রতিবাদ করা উচিত। আমরা যদি প্রথম দিন থেকে প্রতিবাদ করতাম তাহলে ১৫ বছর ধরে এতো জুলুম, গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হতো না। ”
তিনি আরও বলেন, “আশা করি, এই রায়ে আমি ন্যায়বিচার পাবো। কারণ ফ্যাসিবাদের পতন ও বিচারবিভাগ স্বাধীন হয়েছে। ইতিপূর্বে ফ্যাসিবাদের উত্থানের পক্ষে বিচার বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। এটা বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে। পরবর্তীতে বিচার বিভাগের সহযোগিতায় ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকানো গেছে। আমি আশাবাদী, আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পাবো। ”
আসামি পক্ষের আইনজীবী তানভীর আহমেদ আল আমিন বলেন, “এ মামলায় কোনো সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া রায় হয়েছে তা প্রসিকিউশন দেখাতে পারেননি। সাক্ষ্য প্রমাণ বাদেই বিচারক মাহমুদুর রহমানের ৭ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন। কোনো চাপে পড়ে বিচারক এ রায় দিয়েছেন তা উত্তর দিতে হবে। সাক্ষ্যের দিন বিচারক সাক্ষী জয়কে গাড়ি করে পৌঁছে দিয়েছেন। এতে বুঝতে বাকি থাকে না এটা পক্ষপাতিত্ব মূলক মামলা।”
এর আগে ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৎকালীন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে আপিল শর্তে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিনেরে আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই বছরের ৩ অক্টোবর পাঁচ দিন কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্ত হন।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪ বাসিন্দা
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এর আগে ওই যুবকদের গুলিতে স্থানীয় চার বাসিন্দা আহত হন। সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকদের পরিচয় তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করতে পারেননি পুলিশ। গুলিবিদ্দ স্থানীয় চার বাসিন্দা হলেন ওবায়দুল হক (২২), মামুনুর রশিদ (৪৫), নাসির উদ্দিন (৩৮) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৮)। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা এবং একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় মসজিদে ডাকাত পড়েছে এমন প্রচারের পর লোকজন জড়ো হয়ে অটোরিকশায় করে আসা দুই যুবককে আটক করে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক নিহত হন।
এক যুবকের লাশের পাশ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই যুবককে আটকের আগে গুলির ঘটনায় আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলসহ সাতকানিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাত সন্দেহে মসজিদের মাইকে প্রচারের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের পিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এখনো ওই দুই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।