ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলায় ৪১ জন বিডিআর সদস্য মু্ক্তি পেয়েছেন। সকাল থেকে কারাগারের বাইরে জওয়ানদের স্বজনরা অপেক্ষায় থাকেন। তাদের হাতে দেখা গেছে ফুলের তোড়া। 

সকাল ৮টায় অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুরের মুক্তি পাওয়া জওয়ান মুনসুর আলীর মেয়ে মালিহা জান্নাতুনকে। তার বাবা যখন জেলে গেছেন মালিহা জান্নাতুনের বয়স তখন ৩ মাস। মালিহা জান্নাতুন রনহাট্রা চৌহদ্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।  

মালিহা জান্নাতুন বলেন, আমার মা জামনুর নাহারসহ খালাদের নিয়ে সকাল থেকে জেলখানার সামনে অপেক্ষায় আছি। আমার বাবা ১৬ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ায় আমরা অনেক আনন্দিত। আমার বাবা এখন মুক্ত বাতাসে বসবাস করবেন। আমরা বাবাকে নিয়ে ঘুরতে যাব। 

মুক্তি পাওয়া মুনসুর আলী বলেন, আমি নির্দোষ বলে মুক্তি পেয়েছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া ১৬ বছর পরে মুক্তি পেয়েছি। এখন মুক্ত বাতাসে থাকতে পারব। 

অপেক্ষায় থাকা জওয়ান মো.

শামসুদ্দিনের বোন মনোয়ারা বেগম সকাল থেকে ভাইয়ের জন্য কারাগারে মূল ফটকে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ১৬ বছর পর ভাই মুক্তি পাওয়ায় আমরা অনেক খুশি। তাদের বাড়ি ভোলা জেলায়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ড আর ব দ র হ জওয় ন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ থামলেও প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী

ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন ছাড়া সব দেশের ওপর বিশাল শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। এখন চীন ১২৫ শতাংশ শুল্ক মোকাবিলা করছে। বিষয়টি এ পর্যন্ত হলেও বিশ্ববাজারে যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, তার প্রভাব যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাকি বিশ্ব এখনও সব মার্কিন রপ্তানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের মুখোমুখি।

গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য গার্ডিয়ান অনলাইনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, যদিও বেশির ভাগ মনোযোগ বস্তুগত পণ্যে শুল্ক আরোপের সরাসরি প্রভাবের ওপর, তথাপি ট্রাম্পের পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী অর্থ ও অর্থনীতির প্রতিটি কোণে পৌঁছানোর হুমকি দিচ্ছে। এর প্রভাবে বিশ্বব্যাপী নানা বাণিজ্যিক চুক্তি ভঙ্গ হয়েছে, শেয়ারবাজার দুর্বল হয়েছে, পাশাপাশি দুর্নীতি ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক পূর্বাভাসকারীরা এখনও এ নিয়ে তাদের রায় দেননি। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ইতোমধ্যেই বলেছে, বাণিজ্যযুদ্ধ বেশির ভাগ দেশে বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক বিনিয়োগকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। চীন ২০২৫ সালের জন্য তার ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হতে পারে। অন্যদিকে, জার্মানিকে মন্দার দিকে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। বাণিজ্যের দিক থেকে যুক্তরাজ্য তুলনামূলক অক্ষত থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা আছে। যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে যুক্তরাজ্যের। তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো শুল্কের প্রভাব কমিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে এ বছর যুক্তরাজ্যের জিডিপিতে দশমিক ১ শতাংশ পয়েন্ট কমবে। তবে, ঋণের সুদ এখনও বেশি এবং ভোক্তাদের আস্থা ঝুঁকির মধ্যে থাকায়  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জন্য শুল্ক একটি উল্লেখযোগ্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো গত তিন বছরের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেছে মুদ্রাস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করে, যা ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর ১১ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। ট্রাম্পের শুল্ক গ্রাহকদের জন্য ব্যয় বৃদ্ধির হুমকি দিচ্ছে। এ কারণেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্য ওয়াশিংটনের শুল্ক আরোপের প্রতি সাড়া দিতে অনিচ্ছুক প্রমাণিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি বর্তমানে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। শুল্ক বহাল থাকলে, তা বেড়ে আগামী বছর সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার শঙ্কা বাড়বে। 

আশা করা হচ্ছে, বাণিজ্যযুদ্ধের জেরে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের অর্থনীতি রক্ষায় শিগগিরই সুদের হার কমাতে পারে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানোর কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। তবে প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা অনুযায়ী ধীর হলে, তারাও তা করতে বাধ্য হতে পারে।
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বড় প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। বিভিন্ন দেশে অনেক কোম্পানির শেয়ারের মূল্য পড়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে চীন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুইডেনের কোম্পানি রয়েছে। বিশ্বব্যাপী ব্যাংকগুলো মুনাফায় বড় আঘাত আসতে পারে। শুল্কের কারণে ব্যবসায়ী ও যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য বিক্রি করা বড় করপোরেট গ্রাহকরা বিপাকে পড়বেন। ঋণ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষার ওপরও পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব।  

বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি বাড়ার শঙ্কাও রয়েছে। ওয়াশিংটনের পিটারসন ইনস্টিটিউটের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ম্যারি লাভলি মার্কিন বন্দরগুলো ব্যাপকহারে প্রতারণা বাড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কারণ, কাস্টমস কর্মকর্তারা লাখ লাখ আমদানি পণ্যের নতুন শুল্ক নিয়ে হিমশিম খেতে পারেন। তবে সীমান্তে যেসব কর্মকর্তা রয়েছেন, তাদের জন্য বিষয়টি আরও জটিল হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ