কিংবদন্তি নায়ক ছিলেন রাজ্জাক। নায়করাজ রাজ্জাক নামেই তিনি সুপরিচিত। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি অত্যন্ত প্রতাপের সঙ্গে তিন শতাধিক বাংলাদেশি সিনেমা এবং বহু ভারতীয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কাজ করেছেন উর্দু সিনেমাতেও। কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিন আজ। বেঁচে থাকলে আজ তিনি ৮৩-তে পা দিতেন।

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন রাজ্জাক। যার পুরো নাম আবদুর রাজ্জাক। তাঁর বাবার নাম আকবর হোসেন ও মাতার নাম নিসারুননেছা। রাজ্জাকরা ছিলেন নাকতলা এলাকার জমিদার। জন্মস্থান কলকাতায় সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মঞ্চ নাটক দিয়ে রাজ্জাকের অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল। 
১৯৬৪ সালে তিনি পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে চলে আসেন। ঢাকায় এসে রাজ্জাক ‘উজালা’ সিনেমায় পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন।

১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে। এরপর চলচ্চিত্রকার আবদুল জব্বার খানের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন।

নায়ক হিসেব রাজ্জাকের প্রথম চলচ্চিত্র জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। কলকাতার টালিগঞ্জ থেকে আসা ছেলেটাই একদিন হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা। ওপার বাংলায় জন্ম নিলেও এপার বাংলার রুপালি রঙেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন নায়করাজ। তবে শুধু নায়ক হিসেবে নয়, পরবর্তীতে বড় ভাই ও বাবার চরিত্রেও তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

রাজ্জাক তার ক্যারিয়ারে এত হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন যে নির্দিষ্ট করে কয়েকটার নাম বলা মুশকিল। তার পরও কয়েকটির নাম উল্লেখ না করলেই নয়। সেগুলো হল- ‘বেহুলা’, ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘এতুটুকু আশা’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘নাচের পুতুল’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘অবুঝ মন’, ‘রংবাজ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘গুন্ডা’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘অশিক্ষিত’, ‘ছুটির ঘন্টা’, ‘মহানগর’, ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’, ‘স্বরলিপি’, ‘বাদী থেকে বেগম’, ‘বাবা কেন চাকর’ ইত্যাদি।

চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও নাম করেছিলেন রাজ্জাক। জীবদ্দশায় তিনি ১৬টি সিনেমা পরিচালনা করেন। পাশাপাশি নিজের মালিকানাধীন রাজলক্ষী প্রোডাকশন হাউজ থেকে বেশ কয়েকটি সিনেমা প্রযোজনাও করেন। শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তিনি সাতবার জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ২০১৩ সালে পান আজীবন সম্মাননা। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেয় স্বাধীনতা পুরস্কার।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনের যশ-খ্যাতি, অসংখ্য সম্মাননা, স্ত্রী-সন্তান- সবকিছুর মায়া ত্যাগ করে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে যান নায়করাজ রাজ্জাক। ওইদিনই রাজ্জাককে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি চলে গেলেও আজীবন তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের বাতিঘর হিসেবে রয়ে যাবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক এমপি আনার হত্যার প্রতিবেদন ফের পেছাল

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৭ মে ধার্য করেছেন আদালত।

সোমবার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা এদিন প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলাম প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এদিন ধার্য করেন।

মামলায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। তারা হলেন, সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া, সিলিস্তি রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী। তাদের মধ্যে মিন্টু ছাড়া ছয়জনই দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।

বাড়ি থেকে বের হওয়ার পাঁচদিন পর ২০২৪ সালের ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এ সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।

এ ঘটনায় একই বছরের ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

মামলার এজাহারে এমপির ছোট মেয়ে ডরিন উল্লেখ করেন, ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইলফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই। এরপর ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল- আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমি অমিত শাহের কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমার ব্রেনে এই শহরে কোনো কাজ হয়নি: কেসিসির পরিকল্পনা কর্মকর্তা
  • তৃতীয় দিনটা বৃষ্টি আর নাজমুলের
  • চিত্রনায়িকা শাবানা হঠাৎ কেন দেশ ছেড়েছিলেন, এখন কেমন আছেন
  • মানুষই মানুষের কর্মকাণ্ডে শিউরে ওঠে : আফজাল হোসেন 
  • মানুষই মানুষের কর্মকান্ডে শিউরে ওঠে : আফজাল হোসেন 
  • চিন্তা যেভাবে ইবাদত হয়ে ওঠে
  • ভ্যাটিকান থেকে ওড়া ধোঁয়ায় কীভাবে বোঝা যায় নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন
  • ট্রেনে যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দিলেন অভিনেত্রী
  • শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন
  • সাবেক এমপি আনার হত্যার প্রতিবেদন ফের পেছাল