তরুণ কবি আদিত্য আনাম। ২০২৫ বইমেলায় ‘হরকরা প্রকাশন’ থেকে প্রকাশ হচ্ছে তার ‘বিজিতের বাইবেল’। নির্মম সত্য উপহাসের ভাষায় তুলে ধরেন এই কবি। বিজিত বাইবেলের কবিতা— ‘একদা এক ভিখারি এল দরজায়/ভিক্ষা দেওয়ার কিছু ছিল না, তাই/শূন্য হাতে করজোড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম যেই/ভিক্ষা ভেবে কেটে নিল সে হাত দুটিকেই!’ আদিত্য একাধিক লিটলম্যাগ সম্পাদনার সঙ্গেও জড়িত।  ছোটকাগজ 'শব্দমঙ্গল', 'লোকশাণ', 'তাণ্ডব', 'যমুনা এক্সপ্রেস' এবং 'মানুষ' পত্রিকার অনলাইন ভার্সন সম্পাদনা করেন তিনি।

আদিত্যের ভাষায়, ‘‘আমার ভাবনা-ই কবিতা হয়ে ওঠে কিংবা শেষতক কবিতা-ই আমার ভাবনা হয়ে যায়। কারণ আমি কবিতার কাছে সমর্পিত আর কবিতাও আমার কাছে.

..! এটাকে কি বলা যেতে পারে? ধর্ম? প্রেম? নেশা? মায়া? বিভ্রম নাকি বিশ্বাস? জানি না, তবে ব্যক্তি (শরীর) আমি আর লেখক (চিন্তা) আমির মাঝখানে প্রবাহিত অনুভূতির আশ্চর্য এক আগুনের নদী সাঁতরে পার হয়ে আমি যার কাছে আশ্রয় পেতে যাই কিংবা যে আমার কাছে আশ্রয় পেতে আসে তিনিই কবিতা, তিনিই শিল্পলোকের এক অনিবার্য অধিপতি; পৃথিবীতে আমি কেবল তার-ই প্রতিনিধিত্ব করার প্রয়াস করছি প্রতিনিয়ত।’’

আদিত্য  বঞ্চিত মানুষের সুখে সুখী আর দুখে দুঃখী অনুভব করেন। প্রকাশিতব্য ‘বিজিতের বাইবেল’ সম্পর্কে আদিত্য বলেন, ‘‘সময় পেলে আমি নিজের লেখাগুলো বারবার পড়ি। এজন্য যে, আমার স্বতঃস্ফূর্ততা আর প্রবণতাগুলো যা আমার অবচেতনভাবে ঘটে সেগুলোকে বোঝার চেষ্টা করি, পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করি; আমার ভেতরের শিল্প- সত্তা আসলে কি বলতে চায়, কেন চলতে চায় আর কীভাবে বলতে চায়! তারপর একদিন খেয়াল করে দেখলাম আমার কবিতা আমার চেয়ে বেশি দুঃখী, রাগী, প্রতিবাদী, অভিমানী, সাহসী আর স্পষ্টভাষী এবং সেগুলো একটা চূড়ান্তের দিকে প্রবাহিত হতে চাচ্ছে। আমি সেই প্রবণতার ডাকে সারা দিয়ে কিছুদূর এগিয়ে গেলে বুঝতে পারি সেই শিল্পী-স্বত্তা একটা ডকুমেন্টারি বা প্রতিবেদন তৈরি করতে চাচ্ছে যা এই পৃথিবীর বঞ্চিত ও ব্যর্থ মানুষগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে সে একটা বই লিখবে স্বয়ং ঈশ্বর বা পরমেশ্বরের উদ্দেশ্য।’’

শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের লেখা কবিতা প্রকাশ করেন  আদিত্য আনাম। এরপর একাধিক জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে তার লেখা। এভাবে কবি হিসেবে নিজের একটি পরিচিত তৈরি করেছেন তিনি। ফলে প্রথম বই প্রকাশে তাকে খুব কষ্ট করতে হয়নি বলে জানান আদিত্য। আদিত্য বলেন, ‘‘ফেসবুকের কারণে লেখক-প্রকাশক-পাঠক সবার সাথেই এখন যোগাযোগ সহজ হয়ে গেছে। প্রকাশক পাণ্ডুলিপি চেয়েছেন, আমিও দিয়েছি। (সম্ভবত) বইটা মেলার শেষদিন এসেছিল, এক তারিখ থেকে সাতাশ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষাটুকু কঠিন ছিল(প্রথম বই তাই তীব্র একটা আবেগ কাজ করছিল তখন)।’’

বই শেষ পর্যন্ত একটি ‘ক্রিয়েটিভ পণ্য’। বলা হয়ে থাকে বিলাসী পণ্য। বইয়ের পাঠক যেমন সবাই না, ক্রেতাও সবাই না। আবার ক্রেতারাও নানা ভাগে বিভক্ত। সেক্ষেত্রে নতুন একজন কবির বই বিক্রি হওয়া খানিকটা কঠিন। একজন লেখকের মার্কেটিং পলিসি কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন? – প্রশ্নের জবাবে আদিত্য বলেন, ‘‘মার্কেটিং জিনিসটা লেখকের সাথে যায় না। এটা মূলত প্রকাশক বা বিক্রেতার কাজ। বাংলাদেশের বাজে একটা কালচার তৈরি হয়ে গেছে লেখকই সব করে। প্রকাশক লেখকদের সাথে ব্যবসা করে (টাকা নেয় আর বই প্রকাশ করে), কিন্তু ঘটনা উল্টোটা হওয়ার কথা ছিল।’’ 

আদিত্য মনে করেন প্রকাশকদের উচিত সাহিত্যের বাজার তৈরি করা। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় বাংলাদেশে সবাই নতুন লেখক আর পার্টটাইম লেখক। একজন পরিপূর্ণ বা আদর্শ লেখক বলতে কোনো লেখক নেই এখানে। কারণ লেখক হিসেবে সবাই স্ট্রাগল করছে। লেখালেখির চর্চাটাকে ধরে রাখার জন্য তাকে অন্য পেশার আশ্রয় নিতে হচ্ছে। লেখালেখি পুরোদস্তুর একটি পেশা হতে পারছে না আর এর মূল কারণ এখানে সাহিত্যের বাজার নেই। প্রকাশকদের উচিত আগে সাহিত্যের বাজার তৈরি করা।’’

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল হত্যায় আরও একজন গ্রেপ্তার

ঢাকায় বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (পারভেজ) হত্যা মামলার আসামি মেহেরাজ ইসলামকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাবের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ বুধবার বিকেলে মেহেরাজ ইসলামকে গাইবান্ধা সদরের শাহপাড়া ইউনিয়নের ভবানীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বলেও র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

পুলিশ বলছে, ১৯ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জাহিদুল ও তাঁর বন্ধু তরিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। হামলায় গুরুতর আহত পারভেজকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় জাহিদুলের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

এর আগে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯), আল আমিন সানি (১৯) এবং মো. হৃদয় মিয়াজীকে (২৩)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত ৩ জনই টোকাই
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে সিপিআর ও এইডি প্রশিক্ষণ চালুর পরামর্শ
  • মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা হয় কেন?
  • মঙ্গলবারের ঘটনা সম্পর্কে কোহিনুর কেমিক্যালের বক্তব্য 
  • সাইফুলের বাবা বললেন, ছেলের লাশ দাফনের জায়গা নেই
  • রেললাইনের জীবন, রেললাইনেই শেষ
  • প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল হত্যায় আরও একজন গ্রেপ্তার
  • কীভাবে বুঝবেন আপনার ফ্যাটি লিভার
  • নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের ‘বিতর্কিত সুপারিশ’ বাদ দেওয়ার আহ্বান এবি পার্টির।
  • দেশ ছাড়ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ধনীরা