‘প্রকাশকদের উচিত আগে সাহিত্যের বাজার তৈরি করা’
Published: 23rd, January 2025 GMT
তরুণ কবি আদিত্য আনাম। ২০২৫ বইমেলায় ‘হরকরা প্রকাশন’ থেকে প্রকাশ হচ্ছে তার ‘বিজিতের বাইবেল’। নির্মম সত্য উপহাসের ভাষায় তুলে ধরেন এই কবি। বিজিত বাইবেলের কবিতা— ‘একদা এক ভিখারি এল দরজায়/ভিক্ষা দেওয়ার কিছু ছিল না, তাই/শূন্য হাতে করজোড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম যেই/ভিক্ষা ভেবে কেটে নিল সে হাত দুটিকেই!’ আদিত্য একাধিক লিটলম্যাগ সম্পাদনার সঙ্গেও জড়িত। ছোটকাগজ 'শব্দমঙ্গল', 'লোকশাণ', 'তাণ্ডব', 'যমুনা এক্সপ্রেস' এবং 'মানুষ' পত্রিকার অনলাইন ভার্সন সম্পাদনা করেন তিনি।
আদিত্যের ভাষায়, ‘‘আমার ভাবনা-ই কবিতা হয়ে ওঠে কিংবা শেষতক কবিতা-ই আমার ভাবনা হয়ে যায়। কারণ আমি কবিতার কাছে সমর্পিত আর কবিতাও আমার কাছে.
আদিত্য বঞ্চিত মানুষের সুখে সুখী আর দুখে দুঃখী অনুভব করেন। প্রকাশিতব্য ‘বিজিতের বাইবেল’ সম্পর্কে আদিত্য বলেন, ‘‘সময় পেলে আমি নিজের লেখাগুলো বারবার পড়ি। এজন্য যে, আমার স্বতঃস্ফূর্ততা আর প্রবণতাগুলো যা আমার অবচেতনভাবে ঘটে সেগুলোকে বোঝার চেষ্টা করি, পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করি; আমার ভেতরের শিল্প- সত্তা আসলে কি বলতে চায়, কেন চলতে চায় আর কীভাবে বলতে চায়! তারপর একদিন খেয়াল করে দেখলাম আমার কবিতা আমার চেয়ে বেশি দুঃখী, রাগী, প্রতিবাদী, অভিমানী, সাহসী আর স্পষ্টভাষী এবং সেগুলো একটা চূড়ান্তের দিকে প্রবাহিত হতে চাচ্ছে। আমি সেই প্রবণতার ডাকে সারা দিয়ে কিছুদূর এগিয়ে গেলে বুঝতে পারি সেই শিল্পী-স্বত্তা একটা ডকুমেন্টারি বা প্রতিবেদন তৈরি করতে চাচ্ছে যা এই পৃথিবীর বঞ্চিত ও ব্যর্থ মানুষগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে সে একটা বই লিখবে স্বয়ং ঈশ্বর বা পরমেশ্বরের উদ্দেশ্য।’’
শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের লেখা কবিতা প্রকাশ করেন আদিত্য আনাম। এরপর একাধিক জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে তার লেখা। এভাবে কবি হিসেবে নিজের একটি পরিচিত তৈরি করেছেন তিনি। ফলে প্রথম বই প্রকাশে তাকে খুব কষ্ট করতে হয়নি বলে জানান আদিত্য। আদিত্য বলেন, ‘‘ফেসবুকের কারণে লেখক-প্রকাশক-পাঠক সবার সাথেই এখন যোগাযোগ সহজ হয়ে গেছে। প্রকাশক পাণ্ডুলিপি চেয়েছেন, আমিও দিয়েছি। (সম্ভবত) বইটা মেলার শেষদিন এসেছিল, এক তারিখ থেকে সাতাশ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষাটুকু কঠিন ছিল(প্রথম বই তাই তীব্র একটা আবেগ কাজ করছিল তখন)।’’
বই শেষ পর্যন্ত একটি ‘ক্রিয়েটিভ পণ্য’। বলা হয়ে থাকে বিলাসী পণ্য। বইয়ের পাঠক যেমন সবাই না, ক্রেতাও সবাই না। আবার ক্রেতারাও নানা ভাগে বিভক্ত। সেক্ষেত্রে নতুন একজন কবির বই বিক্রি হওয়া খানিকটা কঠিন। একজন লেখকের মার্কেটিং পলিসি কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন? – প্রশ্নের জবাবে আদিত্য বলেন, ‘‘মার্কেটিং জিনিসটা লেখকের সাথে যায় না। এটা মূলত প্রকাশক বা বিক্রেতার কাজ। বাংলাদেশের বাজে একটা কালচার তৈরি হয়ে গেছে লেখকই সব করে। প্রকাশক লেখকদের সাথে ব্যবসা করে (টাকা নেয় আর বই প্রকাশ করে), কিন্তু ঘটনা উল্টোটা হওয়ার কথা ছিল।’’
আদিত্য মনে করেন প্রকাশকদের উচিত সাহিত্যের বাজার তৈরি করা। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় বাংলাদেশে সবাই নতুন লেখক আর পার্টটাইম লেখক। একজন পরিপূর্ণ বা আদর্শ লেখক বলতে কোনো লেখক নেই এখানে। কারণ লেখক হিসেবে সবাই স্ট্রাগল করছে। লেখালেখির চর্চাটাকে ধরে রাখার জন্য তাকে অন্য পেশার আশ্রয় নিতে হচ্ছে। লেখালেখি পুরোদস্তুর একটি পেশা হতে পারছে না আর এর মূল কারণ এখানে সাহিত্যের বাজার নেই। প্রকাশকদের উচিত আগে সাহিত্যের বাজার তৈরি করা।’’
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
একজন আরেকজনের প্রতিপক্ষ হলে ক্ষতি সবার : সারজিস
পঞ্চগড়ে বিএনপির ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সেখানে বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা যদি একজন আরেকজনের প্রতিযোগী না হয়ে প্রতিপক্ষ হই, তাহলে ক্ষতিটা যেমন আন্তঃদলীয় হবে, তেমনি ক্ষতিটা পঞ্চগড় জেলারও হবে।’’
শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে সরকারি অডিটোরিয়ামের মুক্তমঞ্চে পঞ্চগড় পৌর বিএনপির আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। সেখানে সারজিস আলম বলেন, ‘‘দেশের পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর মধ্যে পঞ্চগড় একটি। আমরা সকলে মিলে পঞ্চগড়কে এগিয়ে নিতে কাজ করব।’’
পঞ্চগড় পৌর বিএনপির আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর ইকবাল হোসাইন, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, জেলা জাগপার সহ-সভাপতি সামছুজ্জামান নয়ন প্রমূখ
আরো পড়ুন:
ভ্যানে গ্রামে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বললেন সারজিস আলম
জারার বক্তব্যের জবাব দিলেন সারজিস
অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করে পঞ্চগড় পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন রনিক।
ঢাকা/নাঈম/বকুল