মঞ্চে ছাত্র প্রতিনিধির চেয়ার না রাখায় বিক্ষোভ, ডিসির পদত্যাগ দাবি
Published: 23rd, January 2025 GMT
যশোরে ‘তারণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভার মঞ্চে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধির বসার চেয়ার না রাখায় বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন না করায় অনুষ্ঠান বয়কট করে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় যশোর শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় তারা জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্লোগানসহ প্রত্যাহারের দাবি জানান। পরে সার্কিট হাউজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার। তার আশ্বাসের পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করেছেন।
জানা গেছে, বুধবার বিকেলে যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘তারণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানকে ঘিরে শিল্পকলাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনার বিভিন্ন ছবি প্রদর্শনের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হলে মঞ্চে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের বসার চেয়ার না রাখায় শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। তারা অনুষ্ঠান স্থলের পাশে জুলাই-আগস্ট শহীদের ছবি প্রদর্শনীর থেকে সব ছবি খুলে নেন। এরপর শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকে উদ্দেশ্য করে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের যুগ্ম সদস্য সচিব জান্নাতুল ফুয়ারা অন্তরা বলেন, যে অনুষ্ঠান তরুণদের নিয়ে; সেই অনুষ্ঠানে উপেক্ষিত তারা। এই জুলাই বিপ্লব এনেছে তো তারুণরা। আজ আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হলো; সেটা অগ্রহণযোগ্য। অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতারা জায়গা পেয়েছেন; কিন্তু জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে যা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা উপেক্ষিত কেন?
সংগঠনটির মুখপাত্র ফাহিম আল-ফাত্তাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে বিন্দুমাত্র মূল্যায়ন করা হয়নি। আমাদের রক্তের উপরে দাঁড়িয়ে এইসব কর্মকর্তা বড় বড় চেয়ারে বসেছেন; সেখানে আমাদের কেন অবমূল্যায়ন করা হলো? এই ডিসিকে আমাদের প্রশ্ন- ‘আপনারা যে তারুণ্যের বাংলাদেশ গড়বেন; সেটা কি তারুণদের বাদ দিয়ে? কাদের মতামত নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়বেন? যেহেতু আমাদের মূল্যায়ন করা হয়নি; তাই আমরা এই অনুষ্ঠান বয়কট করেছি।
এদিকে শিল্পকলা একাডেমি চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা সার্কিট হাউজে সমবেত হন। পরে সার্কিট হাউজ সভাকক্ষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার। এসময় বিভাগীয় কমিশনারের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান বয়কট আপাতত স্থগিত করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বয়কট ব ক ষ ভ কর শ ল পকল এক ড ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের দিন নিহত সুমাইয়ার বাসায় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
গত বছরের জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে নিহত সুমাইয়া আক্তারের পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
রোববার (৩১ মার্চ) সকাল ১০ টায় সিদ্ধিরগঞ্জে সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় সুমাইয়ার বাসায় উপস্থিত হন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এ সময় তার সাথে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, তামিম আহমেদ ও দক্ষিণঅঞ্চলের সংগঠক শওকত আলি।
এ সময় সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিহত সুমাইয়ার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তাদের বর্তমান অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং ঈদ উপহার তুলে দেন।
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “সুমাইয়ার মতো এমন অসংখ্য মানুষ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে নির্মমভাবে খুনের শিকার হয়েছেন। বর্তমান সরকার এ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে তৎপর রয়েছে। ভুক্তভোগী এসবপরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা তাদের পাশে আছি”।
পরে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিহত সুমাইয়ার মায়ের হাতে ঈদ উপহার ও আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতোয় নাগরিক পার্টি এনসিপি নারায়ণগঞ্জ সংগঠক জোবায়ের হোসেন তামজীদ, ফয়সাল আহমেদ ফজলে রাব্বি, সোহেল খান সিদ্দিক, রাইসুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জে সিটি কর্পোরেশনের ১নম্বর ওয়ার্ডের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায় মায়ের বাসায় ঘরে আড়াই মাস বয়সের শিশু মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনের দৃশ্য দেখছিলেন সুমাইয়া আক্তার।
বারান্দায় দাঁড়ানোর কয়েক মিনিটের মধ্যে আচমকা আকাশে ওড়া হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া একটি গুলি বারান্দার গ্রিল ভেদ করে সুমাইয়ার মাথায় বিদ্ধ হয়।
এসময় রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন সুমাইয়া। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা নিথর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পথেই সুমাইয়ার মৃত্যু হয়।
বিশ বছর বয়সের তরুণী সুমাইয়া গার্মেন্টস কর্মী ছিলেন। স্বামী মো. জাহিদ এবং আড়াই মাস বয়সের মেয়ে সুয়াইবাকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তারা।
দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার আন্দোলন গণ অভ্যুত্থানে রূপ নিলে নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে স্বামী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে নিজ বাসা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সুমাইয়া।