লস অ্যাঞ্জেলেসে আবারো দাবানল, সরানো হলো ৩১ হাজার বাসিন্দা
Published: 23rd, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে একটি নতুন দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দাবানলের কবলে থাকা এই রাজ্যটি নতুন করে ৩১ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের প্রায় ৪৫ মাইল উত্তর-পশ্চিমে, বেশ কয়েকটি আবাসিক এলাকা ও স্কুলের সীমানায় অবস্থিত কাস্টেইক লেকের কাছে দাবানলের সূত্রপাত হয়। বাতাস ও শুষ্ক ঝোপঝাড়ের কারণে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দাবানল ৯,৪০০ একরেরও বেশি জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে।
নতুন এই দাবানলে কোনো বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, তবে ৩১ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মেক্সিকো থেকে কানাডা পর্যন্ত মার্কিন পশ্চিম উপকূল বরাবর প্রধান মহাসড়ক ইন্টারস্টেট ৫ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্টির কাস্টেইক লেক এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, তারা ‘জীবনের জন্য তাৎক্ষণিক হুমকির’ সম্মুখীন।
স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ফায়ার চিফ অ্যান্থনি ম্যারোন বলেছেন, “পরিস্থিতি গতিশীল রয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা এখনও কঠিন, তবে আমরা আধিপত্য বিস্তার করছি।”
ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার এজেন্সি- ক্যাল ফায়ারের কর্মকর্তা এড ফ্লেচার বিবিসিকে বলেছেন, “এই মাসের শুরুর দিকের দাবানলের তুলনায় এই দাবানল আলাদা। বাতাস এখনও ততটা তীব্র নয়। আগুন নেভানোর জন্য প্রচুর কর্মী চেষ্টা করছেন।”
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা বলেছেন, “এলাকার প্রায় ৩১ হাজার মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো ২৩ হাজার জনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।” তিনি আরো জানান, এলাকার একটি কারাগারের প্রায় ৫০০ বন্দীকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস। দাবানলে প্রাণ গেছে অন্তত ২৮ জনের। পুড়ে গেছে ১২ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের বিস্তীর্ণ এলাকা। পরবর্তীতে বাতাসের গতি ধীরে ধীরে কমতে থাকায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেন বাসিন্দারা। এর মধ্যে নতুন করে ফের শুরু হলো দাবানল।
অ্যাঞ্জেলেস ন্যাশনাল ফরেস্টের মুখপাত্র ডানা ডিয়ের্কসের মতে, বাতাস ও শুষ্ক ঝোপঝাড় সাম্প্রতিক এই দাবানলগুলোকে মোকাবিলা করা অনেক কঠিন করে তুলেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর লস অ য ঞ জ ল স ৩১ হ জ র
এছাড়াও পড়ুন:
রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ
অন্য বছরের তুলনায় এবার রোজার আগে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বলা চলে এক প্রকার স্বাভাবিক। তবে কয়েকটি পণ্যে রোজার আঁচ লেগেছে। বিশেষ করে এ তালিকায় রয়েছে লেবু, বেগুন, শসাসহ ইফতারিতে ব্যবহার হয় এমন পণ্য। চাহিদা বাড়ার সুযোগে পণ্যগুলোর দর কিছুটা বেড়েছে।
শুক্রবার ছুটির দিনে কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার চাঁদ দেখা গেলে রোববার থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগে সবাই অগ্রিম বাজার করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এর কিছুটা প্রভাবও পড়েছে বাজারে।
খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। ফলে প্রায় এক মাস ধরে দর বাড়তি। এ ছাড়া বেগুন, শসাসহ যেগুলোর দাম বেড়েছে তার মূল কারণ ক্রেতাদের বেশি পরিমাণে কেনা। রোজার আগমুহূর্তে প্রতিবছরই এসব পণ্যের দর বাড়ে। তবে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে সামনের দিনগুলোতে দর বাড়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা।
শরবত তৈরির অন্যতম উপাদান লেবু। রমজানে ইফতারে কমবেশি সবাই শরবত খাওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে প্রতি হালি শরবতি বা সুগন্ধি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং আকারভেদে অন্য লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাসখানেক আগে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে কেনা গেছে লেবুর হালি। তবে এখনও বাড়লেও গত বছরের এ সময়ের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে দাম।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি লেবু ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ সমকালকে বলেন, লেবুর উৎপাদন কম। কারণ, এখন লেবুর মৌসুম নয়। তাছাড়া অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত নেই। এ জন্য ফলন ভালো হচ্ছে না। সেজন্য বাজারে লেবু কম আসছে। কিন্তু রোজার কারণে মানুষ আগেভাগে লেবু কিনছেন। মূলত এ জন্য দর বাড়তি।
বাজারে এখন ভরপুর শসা রয়েছে। হাইব্রিড ও দেশি শসার পাশাপাশি ছোট আকারের খিরাও পাওয়া যাচ্ছে। হাইব্রিড শসা ও খিরার কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেনা গেলেও দেশি জাতের শসা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব শসা অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে কেনা গেছে। অবশ্য, এ দর গেল রমজানের চেয়ে বেশ কম। গত বছর এ সময় শসার কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছুঁয়েছিল।
এখনও টমেটোর ভর মৌসুম চলছে। ফলে বাজারে দেশি টমেটোর পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। সেজন্য দাম এখনও নাগালে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়।
বেগুনি তৈরি করতে লম্বা বেগুনের দরকার হয়। সেজন্য রোজার সময় লম্বা বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে দামে। পাঁচ-ছয় দিন আগেও প্রতি কেজি লম্বা বেগুন কেনা গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রায় দ্বিগুণের মতো দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লায় ভ্যান থেকে কিনতে গেলে ক্রেতাকে কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে অন্তত আরও ১০ টাকা। বছরের অন্য সময়ে গোল বেগুনের দর বেশি থাকলেও এখন স্বাভাবিক। প্রতি কেজি কেনা যাবে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইয়াকুব আলী বলেন, এখনও শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর। লম্বা বেগুনের চাহিদা বেশি। এ কারণে কেউ কেউ দর বেশি নিচ্ছে। তবে অন্য জায়গায় দর বাড়লেও কারওয়ান বাজারে বাড়েনি বলে দাবি করেন এই বিক্রেতা।
গাজরের সরবরাহ রয়েছে বেশ ভালো। ফলে দর বাড়ার তালিকায় উঠতে পারেনি মিষ্টি জাতীয় সবজিটি। প্রতি কেজি গাজর কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর কম দরে মিলছে পেঁয়াজ। মানভেদে দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
রমজানে কাঁচামরিচের চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবার ঝালজাতীয় পণ্যটির দর নাগালের মধ্যেই রয়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাস দুই-তিনেক ধরে এ দরের আশপাশেই বিক্রি হচ্ছে মরিচ।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বিকাশ চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, রোজা উপলক্ষে রোববার থেকে ঢাকা মহানগরে ১০টি বিশেষ তদারকি দল মাঠে নামবে। তারা বিভিন্ন বাজারে তদারকি করবে। রমজানজুড়ে চলবে এ তদারকি কার্যক্রম। রোববার সকালে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কারওয়ান বাজারে এ তদারকি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।