দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে গত কয়েকদিন ধরেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। অব্যাহত এই শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাত থেকে সকাল অবধি কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে পুরো জেলা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকেলের পর থেকে আবারো বাড়ছে শীত। ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে শিশু ও বয়স্করা।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

এর আগে, বুধবার সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছিলো ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ১৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আকাশের উপরিভাগে মেঘ এবং ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে আসছে না। ফলে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। 

এদিকে, ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগে রয়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। হাঁড়কাঁপানো শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নির্বারণের চেষ্টা করছেন তারা। অনেকেই ছুটছেন ফুটপাতে গরম কাপড়ের খোঁজে। যানবাহনগুলোকে সকালের দিকেও হেডলাইট জ্বালিয়ে সাবধানে চলাচল করতে হচ্ছে।

সদর উপজেলার হাড়িভাসা এলাকার দিনমুজুর ওমর আলী বলেন, “শীতের কারণে সকালে কাজে যেতে কষ্ট হয়। একটু দেরিতে গেলে গৃহস্থ কাজে নিতে চায় না। এ জন্য প্রতিদিন কাজেও যাওয়া হয় না।”

জেলা শহরের রিকশাচালক আবু বক্কর বলেন, “শীতের কারণে সকালে বের হওয়া যায় না, আবার সন্ধ্যা হলেই ঘরে ঢুকতে হয়। এছাড়া সকালে এবং সন্ধ্যার পরে শহরে লোকজনও কম থাকে। সবমিলিয়ে রোজগার কম হচ্ছে।” 

ট্রাক চালক আবু রায়হান বলেন, “শীতের সময় গাড়ি চালাতে কষ্ট হয়। কোনো কোনো দিন কুয়াশা বেশি হয়। এর ফলে ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে হয়। এতে সময় বেশি লাগে। অনেক সময় কুয়াশার কারণে সকাল বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করতে হয়।

অপরদিকে, শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে প্রতিদিনই পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন এই হাসপাতালে শীতজনিত রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। একই চিত্র জেলার অন্য হাসপাতালগুলোতেও। 

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার জেমজুট এলাকার গৃহবধূ শিল্পী আক্তার ৪ বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে এসেছেন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে। সন্তানের ডায়রিয়ার কারণে চিকিৎসক তাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেছেন। 

শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কারণে ৬ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন সদর উপজেলার শিংপাড়া এলাকার মায়া আক্তার। তিনি বলেন, “অতিরিক্ত শীতের কারণে সন্তানের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তাই গত দুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।” 

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা.

মনোয়ার হোসেন বলেন, “তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। ফলে অন্য সময়ের তুলনায় এখন হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি।” 

তিনি বলেন, “হাসপাতালে যথাসাধ্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শিশুদের বাঁশি খাবার পরিহার করা, খাবার ঢেকে রাখা এবং রাতে শিশুকে নিয়ে বাহিরে বের না হবার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

ঢাকা/নাঈম/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ