কালচার শেখানোর নামে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ শিক্ষার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। বিভাগের ১৭তম ব্যাচের বিরুদ্ধে ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠলে বুধবার এ সিদ্ধান্ত নেয় বিভাগটি।

জানা যায়, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ১৩ শিক্ষার্থী মিলে ১৮তম ব্যাচের ৩২ শিক্ষার্থীদেরকে ডেকে নিয়ে 'চেইন অব কমান্ড' ও 'ভার্সিটির কালচার' শিখানোর নামে অমানুষিক নির্যাতন করে। নানা ম্যানার শেখানোর নামে বিকাল ৫টা থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা হয় তাদের। এসময় দুই নারী শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর আগে রাতের বেলা ছেলেদেরকে বঙ্গবন্ধু হলের ৪১৬ ও ৮২৪ নাম্বার কক্ষে ও জঙ্গলবাড়ি এলাকায় নিয়ে হেনস্থা করে ফজরের সময় ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন তারা। অভিযোগের প্রমাণ মেলায় বুধবার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ১৩ শিক্ষার্থীকে শোকজ করে বিভাগটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের সিনিয়ররা ডেকে নিয়ে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯/১০টা পর্যন্ত আটকে রেখে নানান ভাবে মানসিক নির্যাতন করে। দাঁড় করিয়ে অপমান করে। অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। নানান ইঙ্গিতে আমাদেরকে অসম্মান করে।

অপর এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অনেকেই নিজে রান্না করে খাই। আমাদের রাত পর্যন্ত আটকে রাখায় খাওয়া-দাওয়াও করতে পারিনি। তারা কাউকে কিছু না জানাতে বলে ভয় দেখায়।

র‌্যাগিংয়ের শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, সিনিয়রদের জেলার নাম মুখস্থ, তাদের কি পছন্দ তা মনে রাখতে বলা হয়। নানান ভাবে মেয়েদেরকে হেনস্তা করা হয়। অকথ্য ভাষায় গালিও দেওয়া হয়। এতে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

এ বিষয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাসুদুর রহমান জানান, বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে অভিযুক্তদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় কাউকে কোনোপ্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.

মাহবুবুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাতে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিভাগ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ১৩ শ ক ষ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

সেপটিং ট্যাংকে মিলল পলিথিনে মোড়ানো সাবেক ছাত্রদল নেতার মরদেহ

নোয়াখালীতে মির হােসেন সাদ্দাম (৩২) নামে সাবেক এক ছাত্রদল নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলার ৩ নম্বর নোয়ান্নই ইউনিয়নের দুর্গাপুর এলাকার একটি পরিত্যাক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে পলিথিন মোড়ানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার হয়।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত ৯টার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।

মীর হোসেন সাদ্দাম বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের মনোহর আলী পিয়ন বাড়ির মৃত মমিনুল হকের ছেলে। তিনি রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়সর সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সাদ্দাম।

আরো পড়ুন:

হাত-পা ও মাথাবিহীন নারীর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার

রূপগঞ্জে নদীতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে স্ত্রীকে ফোন করে সাদ্দাম জানান, একজনের জানাজা পড়ে বাড়িতে ফিরবেন তিনি। বাড়িতে ফিরতে দেরি করায় পরিবারের লোকজন তাকে ফোন করেন। তারা ফোনটি বন্ধ পান। পরে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করে সাদ্দামকে না পেয়ে পরিবার বেগমগঞ্জ মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। 

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ছয়ানি ইউনিয়নে শ্বশুর বাড়ির অদূরে রাস্তায় সাদ্দামের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পাওয়া যায়। একই দিন বিকালে রাজেন্দ্রপুরস্থ নিজ গ্রামের বাড়ির অদূরে একটি ধান ক্ষেতে প্রচুর রক্ত দেখতে পান স্থানীয়রা। আজ শনিবার সদর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিং ট্যাংকে পলিথিন বাঁধা কিছু দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল এসে সাদ্দামের মরদেহ পায়।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান জানান, নিহত সাদ্দামের বাড়ি বেগমগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর গ্রামে। মরদেহ পাওয়া গেছে এক কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার সীমানায়। কে বা কারা সাদ্দামকে কি কারণে হত্যা করেছে, তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে সদর ‍উপজেলার সুধারাম মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলামকে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, লাশ উদ্ধারের পর সদর ও বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপাররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সুধারাম ও বেগমগঞ্জ মডেল থানা ঘটনার রহস্য উদঘাটনে যৌথভাবে কাজ করছে।  

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ