এবার চেক বাউন্স করলো চিটাগং কিংসের খেলোয়াড়ের
Published: 23rd, January 2025 GMT
‘‘সার্বিকভাবে আমাদের দলের দেশি ও বিদেশি, সবারই পারিশ্রমিক হয়েছে। অন্য দলের মতো নয়। আমাদের যথেষ্ট ভালো পরিমাণে দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ দেখা যায় ৭০ শতাংশ পেয়ে গেছে, কেউ ৫০ শতাংশ পেয়েছে, কেউ আবার ৪০-৪৫ শতাংশ আছে। তবে বেশিরভাগ ক্রিকেটার ৫০ শতাংশ পেয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের বাকিটাও...’’ – কথা গুলো বলছিলেন বিপিএলের দল চিটাগং কিংসের ম্যানেজার লাভলুর রহমান।
‘অন্য দলগুলো মতো নয়’- বলে তিনি যেসব দলের কথা বুঝিয়েছেন, সেই তালিকায় চিটাগং কিংসকেও রাখতে হচ্ছে। বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের শুরুতে দুর্বার রাজশাহীর পারিশ্রমিক না পাওয়ার ইসু্যটি সামনে আসে। এরপর প্রায় সব দলই পারিশ্রমিক ইসু্য মিটমাট করার চেষ্টা করেছে। এখানে চিটাগং কিংসকে ব্যতিক্রমই বলতে হবে।
দলটির এক ক্রিকেটার এখন পর্যন্ত একটি টাকাও পারিশ্রমিক পাননি। অথচ এতোদিনে পারিশ্রমিকের ৫০ শতাংশ পেয়ে যাওয়ার কথা। আরেক ক্রিকেটার দুইটি চেক পেলেও একটিও ভাঙাতে পারেননি। দুইবারই তার চেক বাউন্স হয়ে ফেরত এসেছে। এমন অভিযোগ আছে আরো ক্রিকেটারদেরও।
শুধু যে স্থানীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে চিটাগং কিংস এমন করেছে তা নয়। দলের শ্রীলঙ্কান পেসার বিনুরা ফার্নান্দো প্রতিশ্রুতি মাফিক পারিশ্রমিক না পেয়ে গতকাল মাঠেই যাননি। আজ সকালে তার শ্রীলঙ্কায় ফেরার কথা রয়েছে।
স্থানীয় ক্রিকেটার এক টাকাও পারিশ্রমিক পাননি বলে যে দাবি তুলেছেন, তা লাভলুরের কাছে জানতে চাওয়া হলে, ‘বিষয়টি জানা নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন। পরবর্তীতে মুঠোফোন কেটে দেন। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
চিটাগং কিংসের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন অবশ্য ফ্রাঞ্চাইজিদের ওপর আস্থা রাখছেন, ‘‘উনারা বলেছেন বিপিএল শেষ হওয়ার আগে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পারিশ্রমিক দিয়ে দেবেন। এখন এর চেয়ে বেশি কিছু আর কি বলার থাকতে পারে। বিসিবি আমাদের পরবর্তী ঠিকানা এই তো…।’’
চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করে চিটাগং কিংসের খেলোয়াড়দের আজ ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। দুর্বার রাজশাহীর খেলোয়াড়রা পারিশ্রমিক পাননি বলে অনুশীলন বয়কট করে আলোচনায় এসেছিলেন। পরবর্তীতে তারা ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক পেয়েছেন। কিছু খেলোয়াড় পেয়েছেন তারচেয়েও বেশি। চিটাগং কিংসের খেলোয়াড়রা এমন কিছু করার পরিকল্পনা না করলেও তারা ঢাকা ফিরে বোর্ডের সঙ্গে কথা বলবে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলার অজানা স্বর্ণমুদ্রার খোঁজ
ইবনে বতুতা লিখেছেন, বাংলা সবুজঘেরা বিশাল এক দেশ। ত্রিশ িকউবিট লম্বা মিহি সুতার তৈরি সুন্দর কাপড় সে দেশে মাত্র দুই দিনারে বিক্রি হয়। এখানকার এক সোনার দিনার মরক্কোর আড়াই দিনারের সমান। বাংলার সুলতান ফখরুদ্দীন সন্দেহাতীতভাবে চমৎকার একজন শাসক।
ট্রাভেলস অব ইবনে বতুতায় বর্ণিত এই শাসকের প্রকৃত নাম ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ। তিনি ছিলেন সোনারগাঁয়ের শাসনকর্তা বাহরাম খানের একজন সাধারণ সেনা, ‘বর্ম রক্ষক’ বা সিলাহদার ছিল তাঁর পদবি। ১৩৩৪ খ্রিষ্টাব্দে বাহরাম খানের মৃত্যু হলে বর্ম রক্ষক ফখরুদ্দীন স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং সোনারগাঁয়ের সিংহাসনে আরোহণ করেন। তাঁর প্রাপ্ত মুদ্রার তারিখ ৭৩৪ থেকে ৭৫০ হিজরি, অর্থাৎ তিনি প্রায় ১৬ বছর রাজত্ব করেছেন। ফখরুদ্দীন সোনারগাঁকে ঘিরে পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম ও সিলেট নিজের অধিকারভুক্ত করেছিলেন বলে সমকালীন সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়। এত দিন ফখরুদ্দীন মুবারকের একটিমাত্র স্বর্ণমুদ্রার খোঁজ ছিল, যা জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত। গোরন গোয়েনকার ক্যাটালগে অবশ্য আরেকটি স্বর্ণ কোয়ার্টার টাংকার উল্লেখ আছে।
১৮-২০ এপ্রিল জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী চিত্রশালায় ‘ওল্ড ঢাকা কালেক্টরস সোসাইটি’র উদ্যোগে মুদ্রা প্রদর্শনী ‘ঢাকা নিউমিস শো ২০২৫’-এ ফখরুদ্দীন মুবারক শাহর আরেকটি স্বর্ণমুদ্রা প্রদর্শন করা হয়। সংগ্রাহক মুহাম্মদ শামসুদ্দিন। জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহে থাকা মুদ্রাটি থেকে এই মুদ্রায় রয়েছে ভিন্নতা, যা ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় যুক্ত করেছে।
মুদ্রাটির সংগ্রাহক মুহাম্মদ শামসুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত স্বর্ণমুদ্রাটির সন ৭৩৪ হিজরি, তথা ফখরুদ্দীন মুবারক শাহর সিংহাসনে আরোহণের সন হওয়ায় ধারণা করা হতো, সেটি সিংহাসনে আরোহণের স্মারক মুদ্রা হতে পারে। কিন্তু পরবর্তী স্বর্ণমুদ্রা আবিষ্কারের ফলে বোঝা যায়, তিনি অন্য বছরেও একাধিক স্বর্ণমুদ্রা প্রচলন করেন।’ মুহাম্মদ শামসুদ্দিনের সংগ্রহে থাকা মুদ্রাটি সম্ভাব্য ৭৩৮ হিজরির।
মুহাম্মদ শামসুদ্দিনের সংগৃহীত ফখরুদ্দীন মুবারক শাহের স্বর্ণমুদ্রা