আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কিনা, এ নিয়ে চলছে আলোচনা। এর মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার না করা পর্যন্ত তারা (আওয়ামী লীগ) রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফিরতে পারবে না।

গতকাল বুধবার ওই পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, গণহত্যা সমর্থনকারী আওয়ামী লীগের সমর্থকরা এখনও ভ্রান্তিতে আছেন যে, দেশ নির্বাচনমুখী হলে তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফিরতে পারবেন। কিন্তু দুঃখিত, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার না করলে এবং খুন ও গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বাদ না দেওয়া পর্যন্ত এটি সম্ভব হবে না।

২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে সংঘটিত হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ও আদেশদাতাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি। 

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব লিখেছেন, তারা খুব কমই সমঝোতার বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন। তারাও বুঝতে পেরেছেন, অপরাধীরা যদি দায় স্বীকার না করে, তাহলে কীভাবে সমঝোতার আহ্বান জানানো যায়? বরং তারা সংস্কার এবং দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার বিষয়ে বেশি সমর্থন জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সমর্থকরা দিনের পর দিন অর্থ খরচ করে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ, রক্ষীবাহিনীর হত্যাকাণ্ড এবং শেখ মুজিবুর রহমানের একদলীয় শাসনের স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রজন্ম জেগে উঠেছে। এই প্রজন্ম স্বৈরশাসনের প্রতিটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সজাগ রয়েছে। তাদের প্রচেষ্টা প্রতিদিন পুরোনো স্মৃতিকে সতেজ করছে।

আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেও নাড়া দিয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব লেখেন, বিশ্বও আওয়ামী লীগের ভয়াবহ অপরাধের জন্য জেগে উঠেছে। তবু আওয়ামী লীগের সমর্থকরা চুপ নেই। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ অপর ধ র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ