দায়সারা মাটি ফেলে বানানো হচ্ছে বাঁধ
Published: 23rd, January 2025 GMT
তাহিরপুর উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলানি তাহিরপুর ক্লোজারের বাঁধের অংশে মাটি ফেলা হলেও হচ্ছে না দুরমুশের কাজ। বৃহৎ এ ফসল রক্ষা বাঁধটি তিনটি প্রকল্পের আওতায় ছিলানি তাহিরপুর ক্লোজার বাঁধ নাম দেওয়া হয়েছে।
গত বছর বোরো ফসল ওঠানোর পর পরই পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে ছিলানি তাহিরপুর গ্রামের পাশের স্থায়ী বাঁধের একাংশ ভেঙে পড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে সে অংশে বাঁধ নির্মাণের কাজ নির্ধারণ করে।
এ অংশে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতিরা হলেন, ছাবিতুল মিয়া, আনোয়ার হোসেন ও সুহেল মিয়া। বাঁধের ভেতরে রয়েছে মাটিয়ান, বনুয়া ও পালই হাওরের প্রায় ৮ হাজার হেক্টর বোরো জমি।
জনগুরুত্বপূর্ণ ফসল রক্ষা বাঁধ হওয়ায় তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাসেম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রতিদিনই এখানকার নির্মাণকাজের তদারকি ও পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধে শুধু এক্সক্যাভেটর দিয়ে মাটি ফেলানো হচ্ছে। সেই মাটি সঠিকভাবে বসানোর জন্য দুরমুশ বা ফিক্সিং করা হচ্ছে না। এতে করে নদীতে আগাম পানি এলে বাঁধটি হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাছাড়া বর্ষাকালে বাঁধের মাটি ধুয়ে গিয়ে দুর্বল হয়ে পড়তে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী হায়দার জানান, বাঁধের কাজ ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী মনির হোসেন জানান, নির্মাণকাজ ২৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাঁধের মাটি দুরমুশ করার ব্যাপারে তিনি জানান, আপাতত পানির ওপর মাটি ফেলে বাঁধটি সংযোগ করা হচ্ছে। পরে আরও অনেক কাজ রয়েছে। সে সময়ে মাটি দুরমুশ করা হবে।
ছিলানি তাহিরপুর ক্লোজার বাঁধসংলগ্ন ছিলানি তাহিরপুর গ্রামের মাহমুদুর মিয়া জানান, বাঁধে এ পর্যন্ত ২০ ভাগ কাজ হয়েছে মাত্র। বাঁধে ফেলানো মাটিতে কোনো প্রকার দুরমুশ করা হচ্ছে না। এমনকি বাঁধ এলাকার কোনো অংশেই মাটি যথাযথভাবে বসানোর জন্য দুরমুশের কাজ দৃশ্যমান নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাসেম জানান, উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসল রক্ষা বাঁধ বিধায় তিনি এ বাঁধের কাজটিকে নিয়মিত পরিদর্শন ও নজরদারি করছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রায় তিন মাস পর মিয়ানমারের ভেতরে বিস্ফোরণ, কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত
প্রায় তিন মাস পর কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। এতে কেঁপে উঠেছে সীমান্তবর্তী বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। এ ঘটনায় টেকনাফ উপজেলা সদরসহ আশপাশের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া সীমান্তের ঠিক ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।
ইউএনও বলেন, বিকট বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠার ঘটনার পরপর বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সীমান্তের টহল জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
টেকনাফ সদরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য এনামুল হক বলেন, প্রায় তিন মাস বিরতির পর সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতর থেকে আবারও বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে এসেছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিস্ফোরণের প্রথম শব্দটি শোনার পর ৫ থেকে ১০ মিনিট পর আরেকটি শব্দ শোনা গেছে।
টেকনাফ সদরের চকবাজার এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। তবে পরপর দুটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দে বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। বাড়ির জানালা ও দেয়াল ফেটে গেছে।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। এর দুই দিন পর ৮ ডিসেম্বর দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপসহ সীমান্তের অধিকাংশ এলাকায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল। এর পর থেকে আর কোনো বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়নি।
এ বিষয়ে সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।