Samakal:
2025-01-31@10:36:37 GMT

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বর্বরতা

Published: 23rd, January 2025 GMT

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বর্বরতা

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েলি বর্বরতা থেমে নেই। তারা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা অব্যাহত রেখেছে। সর্বশেষ অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে হামলা চালিয়ে তারা ১০ জনকে হত্যা করেছে। বসতি স্থাপনকারীরা সেনাদের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

জেনিন ক্যাম্পে তাদের অভিযানে আহত হয়েছেন অন্তত এক ডজন লোক। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে সেবা নিতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে যুদ্ধে বিধ্বস্ত গাজায় পুনরুদ্ধার অভিযান চলছে। গত রোববার অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০০টি বিকৃত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। 

এএফপি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে পশ্চিম তীরে হামলার পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করেছেন জেনিনের গভর্নর কামাল আবু আল রুব। তিনি বলেন, দখলদার বাহিনী জেনিন ক্যাম্পের বাড়িঘর, স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তারা গুলি করছে ও বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। ‘পরিস্থিতি খুব কঠিন’ উল্লেখ করেন তিনি। 
এদিকে ব্যর্থতার দায় নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হালেভি পদত্যাগ করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা তাঁকে সারাজীবন পোড়াবে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীতে বহু বছরের সেবা ও নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নিযুক্ত জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত দাবি করেছেন, ধর্মীয় বিবেচনায় অধিকৃত পশ্চিম তীরের ওপর ইসরায়েলের অধিকার রয়েছে। তবে জাতিসংঘের আরেকজন বিশেষ দূত সতর্ক করে দিয়েছেন, ইসরায়েলকে থামতে বাধ্য করা না হলে গণহত্যা কেবল গাজার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। 

অন্যদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি বহাল থাকার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি ধরে রাখা এই অঞ্চলের নেতাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।

গাজায় পুনরুদ্ধার অভিযানে ধ্বংসস্তূপের নিচে অন্তত ১১ হাজার লাশ মিলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে কেবলই হাড়গোড় মিলছে। কারও মৃতদেহ শনাক্ত করার উপায় নেই। গাজার খান ইউনিসের অধিবাসী মুহাম্মদকে খুঁজছিলেন তাঁর বাবা। তিনি উদ্ধারকারীদের নাইলনের ব্যাগ, হাসপাতালের মর্গ সব জায়গায় খুঁজেও ছেলের সন্ধান পাননি। কাউকে চেনার উপায় নেই। মাথার খুলি, চেয়াল ও হাড়গোড় আলাদা হয়ে গেছে। 

মুহাম্মদের বাবা খুঁজে ফিরছেন হলুদ প্লাস্টিকের এক জোড়া স্যান্ডেল বা কমলা রঙের সোয়েটার, একটি কালো জ্যাকেট কিংবা ট্র্যাকস্যুট প্যান্ট। এসব পরা অবস্থায় মুহাম্মদ নিহত হয়েছিলেন। হত্যাযজ্ঞ দেখে তিনি শোক ও ক্লান্তিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। 

এদিকে যুদ্ধবিরতির সুবাদে ফিলিস্তিনের রাফাহসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িতে ফিরে এসেছে। ১৫ মাস ধরে অবিরাম গোলাবর্ষণের ফলে গাজার প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হন। তবে ধ্বংসপ্রাপ্ত গাজায় হামাসের শক্তিশালী উপস্থিতি এখনও রয়েছে। তারা উদ্ধার অভিযানের সময় সামরিক পোশাক পরে ও বন্দুক হাতে পাহারা দিচ্ছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, গাজায় এখনও হামাসের শক্তিশালী অবস্থান স্থায়ী শান্তির পরিকল্পনাকে জটিল করে তুলছে।   

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৭ হাজার ১০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১১ হাজার ১৪৭ জন আহত হয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িত সবার ফাঁসির দাবিতে অনশন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ অনশন শুরু করেন তারা। পরে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ৮টা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন চলছিল। এর আগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিপ্লবের ছয়মাস পূরণ হতে যাচ্ছে। আমরা এখনও এ সরকারের কাছে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। আমাদের ভাইদের রক্ত এখনও রাজপথে লেগে আছে। আমি এখানে বসলাম, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে না আমরা এখান থেকে উঠব না। আমাদের লড়াই চলছে, চলবে। আমরা আমাদের আমরণ অনশন চালিয়ে যাব। আমরা বিচার চাই। বিচার ছাড়া কোনো কথা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সরকার আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় বসেছে। ইউনূস সরকার কি করে। খুনি বাইরের দেশে বসে আছে। তাদের ধরে এনে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাতে হবে। এটাই আমাদের শেষ কথা।’ 

রাসেল আহমেদ বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে যেভাবে ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে উঠেছিল, সেটাকে ভেঙে দিয়ে খুনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে নেমে এসেছিলাম। এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে আমরা ন্যূনতম সংস্কার ও বিচার পাইনি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আমাদের দুই হাজারের অধিক ভাই জীবন দিয়েছে। তারা রাজপথে সাহসিকতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।’

রাসেল আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এখনও আমাদের খুনি হাসিনা, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে রাজপথে নামতে হয়। আমাদের এ মুক্ত বাতাসে এখনও লাশের গন্ধ ভেসে বেড়ায়। বারবার আমাদের তাদের বিচারের দাবিতে আওয়াজ তুলতে হচ্ছে। এ অন্তর্বর্তী সরকারকে সেসব খুনিদের বিচার করার জন্যই ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। আজও ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডাবাহিনী বীর চট্টলার বুকে মিছিল করেছে। খুনি হাসিনাসহ আমাদের ভাইদের যারা খুন করেছে, তাদের বিচার ও ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে এখন থেকেই আমরণ অনশন পালন করব।’ 

আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘এখনো তারা সড়কে আছেন। তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।’ 

অনশনকারীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দ্রুত বিচার আইনে বিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ও উস্কানিদাতাদের গ্রেপ্তার-বিচার করা, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার করা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা, সব হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, অপরাধ ও নির্যাতনের বিচার করা, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধভাবে অর্জিত সব অর্থ ও সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে বাজেয়াপ্ত করা, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জীবনের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করতে হবে ও নতুন সংবিধান প্রণয়ন করাসহ রাষ্ট্রের যাবতীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা প্রদান করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক সপ্তাহেও তদন্তে নেই কোনো অগ্রগতি
  • এই চিঠি পোস্ট করা হয়নি
  • গাজা: যুদ্ধবিরতি এলো মানুষগুলো ফিরল না
  • শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে চট্টগ্রামে অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা
  • পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেইনি: নাহিদ ইসলাম
  • কেরানীগঞ্জে বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি, শুধু হাত বদলেছে: সারজিস আলম
  • ক্রিকেটারদের চেক বাউন্স, ম‌্যানেজার বললেন, ‘আমি এখনও পাইনি টাকা’