Samakal:
2025-03-03@20:21:56 GMT

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বর্বরতা

Published: 23rd, January 2025 GMT

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বর্বরতা

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েলি বর্বরতা থেমে নেই। তারা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা অব্যাহত রেখেছে। সর্বশেষ অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে হামলা চালিয়ে তারা ১০ জনকে হত্যা করেছে। বসতি স্থাপনকারীরা সেনাদের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

জেনিন ক্যাম্পে তাদের অভিযানে আহত হয়েছেন অন্তত এক ডজন লোক। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে সেবা নিতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে যুদ্ধে বিধ্বস্ত গাজায় পুনরুদ্ধার অভিযান চলছে। গত রোববার অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০০টি বিকৃত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। 

এএফপি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে পশ্চিম তীরে হামলার পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করেছেন জেনিনের গভর্নর কামাল আবু আল রুব। তিনি বলেন, দখলদার বাহিনী জেনিন ক্যাম্পের বাড়িঘর, স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তারা গুলি করছে ও বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। ‘পরিস্থিতি খুব কঠিন’ উল্লেখ করেন তিনি। 
এদিকে ব্যর্থতার দায় নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হালেভি পদত্যাগ করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা তাঁকে সারাজীবন পোড়াবে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীতে বহু বছরের সেবা ও নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নিযুক্ত জাতিসংঘ রাষ্ট্রদূত দাবি করেছেন, ধর্মীয় বিবেচনায় অধিকৃত পশ্চিম তীরের ওপর ইসরায়েলের অধিকার রয়েছে। তবে জাতিসংঘের আরেকজন বিশেষ দূত সতর্ক করে দিয়েছেন, ইসরায়েলকে থামতে বাধ্য করা না হলে গণহত্যা কেবল গাজার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। 

অন্যদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি বহাল থাকার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি ধরে রাখা এই অঞ্চলের নেতাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।

গাজায় পুনরুদ্ধার অভিযানে ধ্বংসস্তূপের নিচে অন্তত ১১ হাজার লাশ মিলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে কেবলই হাড়গোড় মিলছে। কারও মৃতদেহ শনাক্ত করার উপায় নেই। গাজার খান ইউনিসের অধিবাসী মুহাম্মদকে খুঁজছিলেন তাঁর বাবা। তিনি উদ্ধারকারীদের নাইলনের ব্যাগ, হাসপাতালের মর্গ সব জায়গায় খুঁজেও ছেলের সন্ধান পাননি। কাউকে চেনার উপায় নেই। মাথার খুলি, চেয়াল ও হাড়গোড় আলাদা হয়ে গেছে। 

মুহাম্মদের বাবা খুঁজে ফিরছেন হলুদ প্লাস্টিকের এক জোড়া স্যান্ডেল বা কমলা রঙের সোয়েটার, একটি কালো জ্যাকেট কিংবা ট্র্যাকস্যুট প্যান্ট। এসব পরা অবস্থায় মুহাম্মদ নিহত হয়েছিলেন। হত্যাযজ্ঞ দেখে তিনি শোক ও ক্লান্তিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। 

এদিকে যুদ্ধবিরতির সুবাদে ফিলিস্তিনের রাফাহসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িতে ফিরে এসেছে। ১৫ মাস ধরে অবিরাম গোলাবর্ষণের ফলে গাজার প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হন। তবে ধ্বংসপ্রাপ্ত গাজায় হামাসের শক্তিশালী উপস্থিতি এখনও রয়েছে। তারা উদ্ধার অভিযানের সময় সামরিক পোশাক পরে ও বন্দুক হাতে পাহারা দিচ্ছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, গাজায় এখনও হামাসের শক্তিশালী অবস্থান স্থায়ী শান্তির পরিকল্পনাকে জটিল করে তুলছে।   

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৭ হাজার ১০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১১ হাজার ১৪৭ জন আহত হয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ

অন্য বছরের তুলনায় এবার রোজার আগে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বলা চলে এক প্রকার স্বাভাবিক। তবে কয়েকটি পণ্যে রোজার আঁচ লেগেছে। বিশেষ করে এ তালিকায় রয়েছে লেবু, বেগুন, শসাসহ ইফতারিতে ব্যবহার হয় এমন পণ্য। চাহিদা বাড়ার সুযোগে পণ্যগুলোর দর কিছুটা বেড়েছে।

শুক্রবার ছুটির দিনে কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার চাঁদ দেখা গেলে রোববার থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগে সবাই অগ্রিম বাজার করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এর কিছুটা প্রভাবও পড়েছে বাজারে।

খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। ফলে প্রায় এক মাস ধরে দর বাড়তি। এ ছাড়া বেগুন, শসাসহ যেগুলোর দাম বেড়েছে তার মূল কারণ ক্রেতাদের বেশি পরিমাণে কেনা। রোজার আগমুহূর্তে প্রতিবছরই এসব পণ্যের দর বাড়ে। তবে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে সামনের দিনগুলোতে দর বাড়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা।

শরবত তৈরির অন্যতম উপাদান লেবু। রমজানে ইফতারে কমবেশি সবাই শরবত খাওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে প্রতি হালি শরবতি বা সুগন্ধি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং আকারভেদে অন্য লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাসখানেক আগে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে কেনা গেছে লেবুর হালি। তবে এখনও বাড়লেও গত বছরের এ সময়ের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে দাম।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি লেবু ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ সমকালকে বলেন, লেবুর উৎপাদন কম। কারণ, এখন লেবুর মৌসুম নয়। তাছাড়া অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত নেই। এ জন্য ফলন ভালো হচ্ছে না। সেজন্য বাজারে লেবু কম আসছে। কিন্তু রোজার কারণে মানুষ আগেভাগে লেবু কিনছেন। মূলত এ জন্য দর বাড়তি।

বাজারে এখন ভরপুর শসা রয়েছে। হাইব্রিড ও দেশি শসার পাশাপাশি ছোট আকারের খিরাও পাওয়া যাচ্ছে। হাইব্রিড শসা ও খিরার কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেনা গেলেও দেশি জাতের শসা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব শসা অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে কেনা গেছে। অবশ্য, এ দর গেল রমজানের চেয়ে বেশ কম। গত বছর এ সময় শসার কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছুঁয়েছিল।

এখনও টমেটোর ভর মৌসুম চলছে। ফলে বাজারে দেশি টমেটোর পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। সেজন্য দাম এখনও নাগালে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়।
বেগুনি তৈরি করতে লম্বা বেগুনের দরকার হয়। সেজন্য রোজার সময় লম্বা বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে দামে। পাঁচ-ছয় দিন আগেও প্রতি কেজি লম্বা বেগুন কেনা গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রায় দ্বিগুণের মতো দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লায় ভ্যান থেকে কিনতে গেলে ক্রেতাকে কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে অন্তত আরও ১০ টাকা। বছরের অন্য সময়ে গোল বেগুনের দর বেশি থাকলেও এখন স্বাভাবিক। প্রতি কেজি কেনা যাবে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইয়াকুব আলী বলেন, এখনও শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর। লম্বা বেগুনের চাহিদা বেশি। এ কারণে কেউ কেউ দর বেশি নিচ্ছে। তবে অন্য জায়গায় দর বাড়লেও কারওয়ান বাজারে বাড়েনি বলে দাবি করেন এই বিক্রেতা।

গাজরের সরবরাহ রয়েছে বেশ ভালো। ফলে দর বাড়ার তালিকায় উঠতে পারেনি মিষ্টি জাতীয় সবজিটি। প্রতি কেজি গাজর কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর কম দরে মিলছে পেঁয়াজ। মানভেদে দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।

রমজানে কাঁচামরিচের চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবার ঝালজাতীয় পণ্যটির দর নাগালের মধ্যেই রয়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাস দুই-তিনেক ধরে এ দরের আশপাশেই বিক্রি হচ্ছে মরিচ।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বিকাশ চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, রোজা উপলক্ষে রোববার থেকে ঢাকা মহানগরে ১০টি বিশেষ তদারকি দল মাঠে নামবে। তারা বিভিন্ন বাজারে তদারকি করবে। রমজানজুড়ে চলবে এ তদারকি কার্যক্রম। রোববার সকালে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কারওয়ান বাজারে এ তদারকি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রেমিকার সাবেক স্বামীর ফাঁদে প্রাণ গেছে তাজকীরের
  • সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি: রিজভী
  • কাজ না করে আবহাওয়ার দিকে তাকিয়ে কর্মকর্তারা
  • বিজিএমইএ নির্বাচনে ৬৯০ ভুয়া ভোটার
  • ভারতের কারণে অস্ট্রেলিয়ার পর দ. আফ্রিকাও গেল দুবাইতে
  • কখনও বলিনি আমি আর অভিনয় করব না: নাঈম
  • রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ