তৈরি পোশাকে বিলিয়ন ডলারের নতুন বাজার
Published: 23rd, January 2025 GMT
তৈরি পোশাকের নতুন বা অপ্রচলিত বাজার হিসেবে পরিচিত দেশগুলোতে রপ্তানির গতি বেশ ধারাবাহিক। স্থানীয় কিংবা বৈশ্বিক সব প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই রপ্তানি বাড়ছে এসব দেশে। অন্তত তিনটি বাজারে পোশাক রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।
রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারা বলছেন, এ তিন বাজারে রপ্তানির পরিমাণ প্রধান বাজারগুলোর কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বর্তমানে এক বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি বাজার দাঁড়িয়েছে ১০টিতে।
দেশের রপ্তানি খাত একক পোশাকপণ্য নির্ভর। পণ্যের মতো প্রচলিত বাজারের প্রতি অতিনির্ভরতার ঝুঁকি রয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে অপ্রচলিত বাজার সম্প্রসারণে উদ্যোগ আছে উদ্যোক্তাদের। অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানিতে ৪ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, অপ্রচলিত বড় তিন বাজার হচ্ছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। সমাপ্ত ২০২৪ সালে জাপানে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১২ কোটি ডলার। দেশীয় মুদ্রায় এ পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা। উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, জাপানে নিট গেঞ্জিজাতীয় পোশাক এবং ওভেন শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাকের রপ্তানি প্রায় সমান। বড় বাজার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ওভেনের চাহিদা বেশি। অন্য দুই বাজারের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি হয়েছে ৮৩ কোটি ডলারের পোশাক। ভারতে রপ্তানির পরিমাণ ৬১ কোটি ডলার। এই দুই বাজারের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় নিট রপ্তানি এবং ভারতে ওভেন রপ্তানির পরিমাণ বেশি।
রপ্তানি প্রবণতা বলছে, খুব দ্রুত এই দুই বাজারও রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারাও একই কথা বলছেন। জানতে চাইলে বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্টের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সমকালকে বলেন, অতিমারি করোনার অভিঘাতে প্রচলিত পশ্চিমা দেশগুলোতে পোশাকের চাহিদা কমছিল। বিকল্প হিসেবে এশিয়ার উদীয়মান দেশগুলোর অর্থনীতি তুলনামূলক ভালো ছিল। এসব দেশে চাহিদা বেড়েছে। দরও তুলনায় কিছুটা ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আবার এশিয়ার দেশ হওয়ার লিড টাইমের সুবিধা অর্থাৎ রপ্তানি আদেশ পাওয়ার পর পণ্য প্রস্তুত করে ক্রেতার হাতে পৌঁছাতে কিছুটা কম সময় লাগে। সব মিলিয়ে নতুন বাজারে মনোযোগ বেড়েছে উদ্যোক্তাদের।
তিনি বলেন, নতুন বাজারের মধ্যে রাশিয়াও বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো বড় বাজার। এ রকম সম্ভাবনাময় দেশগুলোতে রপ্তানি বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ এবং দেশের পোশাক খাতের ব্র্যান্ড ইমেজ বাড়াতে কূটনৈতিক তৎপরতা থাকতে হবে। রোডশো, মেলা ও প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ধরনের দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাকের প্রচলিত এবং প্রধান বাজার হচ্ছে ২৭ জাতির জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। এসব দেশ দিয়েই রপ্তানি শুরু হয় পোশাকের। এখনও মোট পরিমাণের হিসাবে এসব দেশেই রপ্তানি বেশি হয়ে থাকে। এই তিন দেশের বাইরের বাকি দেশগুলোকে অপ্রচলিত বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে ১৮ দেশে বেশি রপ্তানি হয়ে থাকে। এর মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, চীন, রাশিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কোরিয়া ও ভারতে রপ্তানি সবচেয়ে বেশি। গত বছর তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানি আয়ে অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানির হিস্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ৬৩৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে এসব দেশে।
রপ্তানির তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে দেখা যায়, বর্তমানে এক বিলিয়ন ডলারের বাজারগুলোর মধ্যে একক দেশ হিসেবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যু্ক্তরাজ্য ও কানাডা। এ ছাড়া ইইউ জোটের দেশ হিসেবে এক বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি বাজার হচ্ছে ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, ডেনমার্ক, স্পেন ও পোল্যান্ড।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এসব দ শ
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’