Samakal:
2025-04-25@06:16:29 GMT

ঢাকার প্রস্তুতি প্রার্থনীয়

Published: 22nd, January 2025 GMT

ঢাকার প্রস্তুতি প্রার্থনীয়

সকল বিচারে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিপুল জয়লাভ করিয়া সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে শপথ গ্রহণ করিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের এই নেতা অবশ্যই আমাদের অভিবাদন প্রাপ্য।

আমরা জানি, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার নিদর্শনরূপে প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হইবার পূর্বেই তিনি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ নিশ্চিত করিয়াছেন। এই জন্যও ট্রাম্পকে আমরা শুভেচ্ছা জানাই। ক্ষমতায় আরোহণের পর তাঁহার অপর প্রতিশ্রুতি পূরণ তথা রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতিও স্বাক্ষরের আশ্বাস দিয়াছেন। আমাদের প্রত্যাশা, এই ক্ষেত্রেও তিনি সফল হইবেন। তবে এই সকল বিষয়ে উল্লাস প্রকাশ, তৎসহিত ইহাও বলা প্রয়োজন, প্রেসিডেন্টরূপে প্রথম দিনেই ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছেন যেইগুলি বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নকামী দেশে তো বটেই, খোদ যুক্তরাষ্ট্রেও গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিস্তার ঘটাইয়াছে। 

সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যাইতেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টিকারী সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রহিয়াছে মার্কিন নাগরিকত্বপ্রাপ্তি এবং তথায় অভিবাসনের পথ দুরূহকরণ পদক্ষেপ। তিনি ইতোমধ্যে এমন কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করিয়াছেন, যাহার কারণে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সমাপ্তি ঘটিতে পারে এবং দেশটিতে আশ্রয় ও শরণার্থী-বিষয়ক চলমান কর্মসূচি স্থগিত হইতে পারে। প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, কোনো বিদেশি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে গিয়া শিশু জন্ম দিলে, উক্ত শিশুর সহিত তাহার পিতা-মাতাও নাগরিকত্ব পাইতেন। ট্রাম্পের আদেশের ফলে এই নিয়মটি বন্ধ হইয়া যাইতেছে। যদিও বিশেষজ্ঞ অনেকের মত, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেশটির সংবিধানে ১৪তম সংশোধনী দ্বারা সুরক্ষিত। সংবিধানের ঐ ধারা বাতিলের ক্ষেত্রে যদিও আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করিতে হইবে ট্রাম্প প্রশাসনকে, আপাতত ইহাই সত্য, নাগরিকত্বপ্রাপ্তির পথ বন্ধের কুফল অন্য অনেক দেশের ন্যায় বাংলাদেশকেও ভোগ করিতে হইবে। ট্রাম্পের আদেশের কারণে দেশটিতে থাকা অনিবন্ধিত অভিবাসীদিগকেও বাহির করিয়া দেওয়া হইবে। তৎসহিত পরিবারের একজন নাগরিকত্ব লইয়া বাকিদের একাদিক্রমে যুক্তরাষ্ট্রে লইবার নিয়মও বাতিল হইবে। 

আমরা জানি, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের একক বৃহত্তম উৎস দেশ। ফলে আমাদের প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়িবার আশঙ্কা উড়াইয়া দিবার সুযোগ নাই। আর বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এবং আমদানিসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রবাসী আয়ের বিপুল ভূমিকার কথা স্মরণে রাখিলে ট্রাম্পের ঐ সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রভাব বহুমুখী হইবার শঙ্কাই বেশি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যদি যুক্তরাষ্ট্র শরণার্থী গ্রহণের বর্তমান ধারা বন্ধ করিয়া দেয় তাহা হইলেও বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশঙ্কা রহিয়াছে। বিশেষত রোহিঙ্গা শরণার্থী লইয়া বাংলাদেশ যখন জেরবার, তখন বিগত মার্কিন প্রশাসন রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের আশ্বাস দিয়াছিল। ইতোমধ্যে কয়েক সহস্র রোহিঙ্গার ব্যবস্থাও তাহারা করিয়াছে বলিয়া জানি। বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলরূপে হয়তো ভবিষ্যতে এই সংখ্যা বৃদ্ধিই পাইত। কিন্তু ট্রাম্পের শরণার্থী গ্রহণ বন্ধের পদক্ষেপ বিষয়টা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত করিয়া দিল। ট্রাম্পের অপর এক নির্বাহী আদেশের বলি হিসাবে অধ্যয়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গমনে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আরও যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখি হইলে, উহাও বাংলাদেশকে ভোগাইবে বলিয়া আমরা মনে করি।

ট্রাম্প এমন সময়ে উক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করিতেছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রই অভিবাসীদের ভূমিরূপে পরিচিতি পাইয়াছে। এমনকি খোদ ট্রাম্পের পূর্বপুরুষ ও তাঁহার স্ত্রীও অভিবাসীরূপে উক্ত দেশে আসন গাড়িয়াছিলেন। উন্নত জীবনের আশায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। আবার যুক্তরাষ্ট্র ও তাহার ইউরোপীয় মিত্রদের দেশে দেশে দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাস পর্যালোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার অভিবাসীদের এক প্রকার অধিকারও বটে। অতএব, বিশ্বব্যাপী মার্কিন প্রেসিডেন্টের এহেন অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনমত গড়িয়া তোলা সময়ের দাবি। এই সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি লইবার বিকল্প নাই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শরণ র থ কর য় ছ গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: পেঁপে ছাড়া ৫০ টাকার নিচে নেই কোনো সবজি

সরবরাহ কমের অজুহাতে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। অধিকাংশ সবজি কিনতে গুণতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সেই সঙ্গে দাম বেড়েছে মাছেরও। এতে অস্বস্তিতে পড়ছেন ক্রেতারা।

কয়েকজন ক্রেতা জানান, শীত মৌসুমের সবজি নিয়ে যে স্বস্তি ছিল, তা এখন আর নেই। বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম ৬০ টাকার ওপরে। কোনো কোনটির দাম একশো পেরিয়েছে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি পটল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর চেয়ে কমে শুধু পেঁপে পাওয়া যাচ্ছে, তাও ৫০ টাকা কেজিতে। এছাড়া, করলা, বেগুন, বরবটি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।

সবচেয়ে বেশি দাম দেখা গেছে কাঁকরোলের। গ্রীষ্মকালীন এই সবজিটি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। সজনে ডাঁটা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।

তবে ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি পণ্যের দাম আগের মতোই আছে। পেঁয়াজের দামও কয়েক সপ্তাহ বেড়ে এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় আটকে আছে।

এদিকে, মাছের বাজারেও বাড়তি দাম দেখা গেছে। মা ইলিশ সংরক্ষণে নদীতে মাছ ধরা বন্ধ ও চাষের মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। এর মধ্যে, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ইলিশ ও চিংড়ির দাম।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি পিস ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে। অন্যদিকে, প্রতিকেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, স্বাভাবিক সময়ে এসব মাছের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে। এছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা, চাষের রুই, তেলাপিয়া,পাঙাশ ও পুঁটি মাছও আগের চেয়ে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।

ঢাকা/সুকান্ত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ