Samakal:
2025-01-31@11:54:54 GMT

ঢাকার প্রস্তুতি প্রার্থনীয়

Published: 22nd, January 2025 GMT

ঢাকার প্রস্তুতি প্রার্থনীয়

সকল বিচারে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিপুল জয়লাভ করিয়া সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে শপথ গ্রহণ করিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের এই নেতা অবশ্যই আমাদের অভিবাদন প্রাপ্য।

আমরা জানি, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার নিদর্শনরূপে প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হইবার পূর্বেই তিনি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ নিশ্চিত করিয়াছেন। এই জন্যও ট্রাম্পকে আমরা শুভেচ্ছা জানাই। ক্ষমতায় আরোহণের পর তাঁহার অপর প্রতিশ্রুতি পূরণ তথা রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতিও স্বাক্ষরের আশ্বাস দিয়াছেন। আমাদের প্রত্যাশা, এই ক্ষেত্রেও তিনি সফল হইবেন। তবে এই সকল বিষয়ে উল্লাস প্রকাশ, তৎসহিত ইহাও বলা প্রয়োজন, প্রেসিডেন্টরূপে প্রথম দিনেই ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছেন যেইগুলি বাংলাদেশের ন্যায় উন্নয়নকামী দেশে তো বটেই, খোদ যুক্তরাষ্ট্রেও গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিস্তার ঘটাইয়াছে। 

সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যাইতেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টিকারী সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রহিয়াছে মার্কিন নাগরিকত্বপ্রাপ্তি এবং তথায় অভিবাসনের পথ দুরূহকরণ পদক্ষেপ। তিনি ইতোমধ্যে এমন কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করিয়াছেন, যাহার কারণে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সমাপ্তি ঘটিতে পারে এবং দেশটিতে আশ্রয় ও শরণার্থী-বিষয়ক চলমান কর্মসূচি স্থগিত হইতে পারে। প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, কোনো বিদেশি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে গিয়া শিশু জন্ম দিলে, উক্ত শিশুর সহিত তাহার পিতা-মাতাও নাগরিকত্ব পাইতেন। ট্রাম্পের আদেশের ফলে এই নিয়মটি বন্ধ হইয়া যাইতেছে। যদিও বিশেষজ্ঞ অনেকের মত, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেশটির সংবিধানে ১৪তম সংশোধনী দ্বারা সুরক্ষিত। সংবিধানের ঐ ধারা বাতিলের ক্ষেত্রে যদিও আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করিতে হইবে ট্রাম্প প্রশাসনকে, আপাতত ইহাই সত্য, নাগরিকত্বপ্রাপ্তির পথ বন্ধের কুফল অন্য অনেক দেশের ন্যায় বাংলাদেশকেও ভোগ করিতে হইবে। ট্রাম্পের আদেশের কারণে দেশটিতে থাকা অনিবন্ধিত অভিবাসীদিগকেও বাহির করিয়া দেওয়া হইবে। তৎসহিত পরিবারের একজন নাগরিকত্ব লইয়া বাকিদের একাদিক্রমে যুক্তরাষ্ট্রে লইবার নিয়মও বাতিল হইবে। 

আমরা জানি, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের একক বৃহত্তম উৎস দেশ। ফলে আমাদের প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়িবার আশঙ্কা উড়াইয়া দিবার সুযোগ নাই। আর বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এবং আমদানিসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রবাসী আয়ের বিপুল ভূমিকার কথা স্মরণে রাখিলে ট্রাম্পের ঐ সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রভাব বহুমুখী হইবার শঙ্কাই বেশি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যদি যুক্তরাষ্ট্র শরণার্থী গ্রহণের বর্তমান ধারা বন্ধ করিয়া দেয় তাহা হইলেও বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশঙ্কা রহিয়াছে। বিশেষত রোহিঙ্গা শরণার্থী লইয়া বাংলাদেশ যখন জেরবার, তখন বিগত মার্কিন প্রশাসন রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের আশ্বাস দিয়াছিল। ইতোমধ্যে কয়েক সহস্র রোহিঙ্গার ব্যবস্থাও তাহারা করিয়াছে বলিয়া জানি। বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলরূপে হয়তো ভবিষ্যতে এই সংখ্যা বৃদ্ধিই পাইত। কিন্তু ট্রাম্পের শরণার্থী গ্রহণ বন্ধের পদক্ষেপ বিষয়টা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত করিয়া দিল। ট্রাম্পের অপর এক নির্বাহী আদেশের বলি হিসাবে অধ্যয়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গমনে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আরও যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখি হইলে, উহাও বাংলাদেশকে ভোগাইবে বলিয়া আমরা মনে করি।

ট্রাম্প এমন সময়ে উক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করিতেছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রই অভিবাসীদের ভূমিরূপে পরিচিতি পাইয়াছে। এমনকি খোদ ট্রাম্পের পূর্বপুরুষ ও তাঁহার স্ত্রীও অভিবাসীরূপে উক্ত দেশে আসন গাড়িয়াছিলেন। উন্নত জীবনের আশায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। আবার যুক্তরাষ্ট্র ও তাহার ইউরোপীয় মিত্রদের দেশে দেশে দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাস পর্যালোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার অভিবাসীদের এক প্রকার অধিকারও বটে। অতএব, বিশ্বব্যাপী মার্কিন প্রেসিডেন্টের এহেন অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনমত গড়িয়া তোলা সময়ের দাবি। এই সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি লইবার বিকল্প নাই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শরণ র থ কর য় ছ গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

দেবীগঞ্জে দেয়ালে দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে লেখা হয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে পৌরসভার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে এই লেখা সাধারণ মানুষের নজরে আসে। তবে, কারা এই স্লোগান লিখেছেন, তা কেউ দেখেননি।

পৌরসভার শহীদ আব্দুল মান্নান সড়ক সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ চত্বর, নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দেয়ালে লাল, কালো ও নীল রঙের কালি দিয়ে ‘জয় বাংলা’, ‘জয় শেখ হাসিনা’ এবং ‘শেখ হাসিনা তুমি আস্থা’- এমন স্লোগান লেখা হয়েছে।

এদিকে, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অফিসিয়াল পেজ থেকে আজ দুপুর ১টায় দেবীগঞ্জের বিভিন্ন দেয়ালে লেখা স্লোগানের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করা হয়। এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

দেবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সুমন বলেন, ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাতের আঁধারে দেয়ালে দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ লিখছে তারা। উপজেলা ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সজাগ রয়েছে।"

প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলা সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বলেন, ‍“গত ৫ আগস্টের পর শুধু দেবীগঞ্জ নয়, পুরো পঞ্চগড়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেবীগঞ্জ, বোদা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে এসব দেওয়াল লিখন লক্ষ্য করা গেলেও প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা নেই। এসব লেখা ’২৪ বিপ্লবের চেতনাকে ম্লান করার চেষ্টা করছে। যা রুখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান- তাদের (ছাত্রলীগ নেতাকর্মী) দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। তাদের অপতৎপরতা রুখে দিতে পঞ্চগড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।”

দেবীগঞ্জ থানার ওসি সোয়েল রানা মোবাইলে বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে আসছে। এখনি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। বিষয়টি দেখছি আমরা।”

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ