কথাটা শোনার পর একটু অবাক হওয়ার মতো বৈকি! চোখে আবার দুষ্টু পর্দা আছে নাকি? চোখের এই পর্দা চিকিৎসকের চিকিৎসা মানতে চায় না। আপন গতিতে, ধীরে ধীরে বা একটু তাড়াতাড়ি বাড়তে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে অপারেশন করে পর্দা কাটার পরও ফের ফিরে আসে। চোখের এই পর্দার নাম টেরিজিয়াম।
কী এই দুষ্টু পর্দা বা টেরিজিয়াম?
চোখের কনজাংটিভারের ওপর একটা তিনকোনা আকৃতির বিশেষ পর্দা, যা চোখের এক পাশ থেকে, বিশেষ করে ভেতরে কোনার দিক থেকে এগোতে থাকে। ধীরে ধীরে কর্নিয়ার দিকে বাড়তে থাকে এবং সময়ের ব্যবধানে এ পর্দা দৃষ্টি হারানোর কারণ হতে পারে। এই দুষ্টু পর্দা এক চোখ বা দু’চোখেই দেখা দিতে পারে।
টেরিজিয়াম পর্দার কারণ কী?
প্রাথমিক কারণ অজানা। ক্ষেত্রবিশেষে বংশগতভাবে এই পর্দা দেখা যায়। তবে যারা রোদে বা ধুলাবালির মধ্যে কাজ করেন, তাদের বেলায় এ পর্দা বেশি দেখা যায়। গরম আবহাওয়া, ধোঁয়াযুক্ত পরিবেশ, ড্রাই আইয়ের সমস্যা থাকলে এই পর্দা হতে পারে।
লক্ষণ কী?
এ রোগে আক্রান্তের চোখ খচখচ করে, লাল হয়, মাঝেমধ্যে বিশেষ করে গোসল করার পর বা সাবান-শ্যাম্পু ব্যবহারের পর চোখ ভীষণ লাল হয়, কখনও আবার চোখের এক পাশে একটা ছোট্ট গোটা বা চোখের ওপর পর্দা দেখতে পান রোগী। এটি বাড়তে থাকলে রোগী চোখে জ্বালার সঙ্গে সঙ্গে কম দেখার কথা বলেন।
কী করতে হবে?
অবশ্যই চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। খুব ছোট হলে বা চোখের পাশে ছোট্ট গোটা (পেঙ্গুইকুলা) হলে চিন্তার কারণ নেই। তবে সতর্ক থাকতে হবে। রোদ থেকে রক্ষা করার জন্য কালো চশমা ব্যবহার করার সঙ্গে সঙ্গে চোখ মসৃণ রাখার জন্য বিশেষ ফোঁটা ব্যবহার করতে হবে। গোটা একটু বড় হলে আর দৃষ্টি সামান্য ঝাপসা হলে পাওয়ার চশমা ব্যবহার লাগবে। যদি পর্দা অনেকটা বেড়ে কর্নিয়া ভেদ করে, তবে অপারেশনের চিন্তা করতে হবে।
সাধারণ অপারেশন করার পর এ সমস্যা আবার দেখা দিতে পারে। সে জন্য অনেক সময় অপারেশনের পর বেটা রেডিয়েশন ব্যবহার করা কিংবা ঠান্ডা সেঁক (ক্রাওথেরাপি) উপকারী হতে পারে। তবে অটোগ্রাফট অপারেশন পদ্ধতি ভালো। দেখা গেছে, অনেক রোগী সমস্যা উপশমের জন্য স্টেরয়েড জাতীয় ফোঁটা ব্যবহার করেন, যা মারাত্মক। অনেক দিন ব্যবহার করার ফলে চোখে লেন্সের ছানি, চোখের উচ্চচাপ (গ্লুকোমা) দেখা দিতে পারে, যা পরবর্তী সময়ে অন্ধত্ব বয়ে আনতে পারে।
লেখক : চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফেকো সার্জন এবং কনসালট্যান্ট, যশোর চক্ষু ক্লিনিক ও ফেকো সেন্টার
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টে পাসওয়ার্ড ব্যবহারের দিন কী শেষ হচ্ছে
ব্যবহারকারীদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইন-ইন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে মাইক্রোসফট। নতুন এ উদ্যোগের আওতায় এ মাস থেকেই মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টে লগইনের জন্য পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে ব্যবহার করতে হবে পাসকি। এর ফলে নতুন অ্যাকাউন্ট খুললেও আর পাসওয়ার্ড ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না। পাসওয়ার্ডবিহীন এই ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্টে পাসওয়ার্ড ব্যবহারের দিন শেষ হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, পাসওয়ার্ড দুর্বল একটি নিরাপত্তাব্যবস্থা, যা সহজেই ফিশিং বা সাইবার আক্রমণের শিকার হতে পারে। আর তাই পাসওয়ার্ড এখন আর যথেষ্ট নিরাপদ নয়। বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ৭ হাজার পাসওয়ার্ড-সংক্রান্ত সাইবার হামলা প্রতিহত করছে মাইক্রোসফট, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। নতুন নিরাপত্তাব্যবস্থায় অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত থাকবে পাসকির মাধ্যমে। এটি নির্দিষ্ট যন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় ব্যবহারকারীদের আঙুলের ছাপ ও চেহারা শনাক্ত করে আনলক করতে হবে। পাসওয়ার্ডের মতো এটি অনুমান করা যায় না বা চুরি হওয়ার আশঙ্কাও নেই।
আরও পড়ুনউইন্ডোজ ১০–এর সহায়তা সমর্থন শেষ হচ্ছে, যা বলছে মাইক্রোসফট২৩ মার্চ ২০২৫মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, পাসকি নিরাপদ এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহারের তুলনায় তিন গুণ দ্রুত কাজ করে। ফলে নতুন মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্ট খুলতে আর পাসওয়ার্ড নির্ধারণ করতে হবে না। শুধু ই–মেইল ভেরিফিকেশন করলেই হবে, এরপর ব্যবহারকারীদের পাসকি সেট করতে হবে।
আরও পড়ুনমাইক্রোসফটের তৈরি প্রথম সফটওয়্যারের সোর্স কোড উন্মুক্ত করলেন বিল গেটস০৪ এপ্রিল ২০২৫শুধু পাসকি ব্যবহার করলেই হবে না, পুরোনো পাসওয়ার্ডও মুছে দিতে হবে। পুরোনো পাসওয়ার্ডের কারণে সাইবার হামলার ঝুঁকি থেকে যাবে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। আর তাই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পুরোপুরি মুছে ফেলে শুধু পাসকি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র: বিজিআর ডটকম