লক্ষ্য মাত্র ১৩৩। উদ্বোধনী জুটিতে সঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা ৪.১ ওভারে ৪১ রান তুলে জয়ের ভিত গড়ে ফেলেন। এই রানে স্যামসন ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২৬ রান করে ফিরলেও ঝড় তোলেন অভিষেক। তিনি ৩৪ বলে ৫টি চার ও ৮ ছক্কায় ৭৯ রান করে যখন আউট হন তখন ভারতের সংগ্রহ ১১.৫ ওভারে ১২৫। জয়ের বাকি কাজটুকু করে আসেন তিলক ভার্মা। তিনি ৩ চারে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ৩ রানে অপরাজিত থাকেন হার্দিক পান্ডিয়া। ভারত ১২.
ইংল্যান্ডের জোফরা আর্চার ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। ২ ওভারে ২৭ রান দিয়ে অপর উইকেটটি নেন আদিল রশিদ। ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন ভারতের বরুণ চক্রবর্তী।
তার আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় সংগ্রহে কোনো রান যোগ করার আগেই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। আরশদীপ সিংয়ের বলে উইকেটের পেছনে সঞ্জু স্যামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফিল সল্ট। ১৭ রানের মাথায় আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান বেন ডাকেটকেও আউট করেন আরশদীপ।
আরো পড়ুন:
ভারতের বোলিং তোপে ইংল্যান্ডের মামুলি সংগ্রহ
অ্যান্ডারসনের কীর্তির দিনে ইনিংস ব্যবধানে হার ইংল্যান্ডের
সেখান থেকে অধিনায়ক জস বাটলার ও হ্যারি ব্রুক এগোতে থাকেন। ৬৫ রানের মাথায় বরুণ চক্রবর্তী ব্রুককে বোল্ড করে ভাঙেন এই জুটি। ১৪ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৭ রান করেন ব্রুক।
এরপর দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। একই রানে লিয়াম ভিলিংস্টনকেও শূন্যরানে বোল্ড করেন বরুণ। ৮৩ রানে গিয়ে জ্যাকব বেথেল আউট হন ব্যক্তিগত ৭ রানে। ৯৫ রানে জেমি ওভারটন ফেরেন অক্ষর প্যাটেলের শিকার হয়ে। ২টি রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। ১০৩ রানে গিয়ে আউট হন গাস অ্যাটকিনসন। তিনি ১৩ বলে করেন ২ রান।
এতোক্ষণ ক্রিজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখছিলেন জস বাটলার। ফাঁকে ফাঁকে দারুণ দারুণ সব শটে ভারতের বোলারদের জবাব দিচ্ছিলেন নিঃসঙ্গ শেরপা হয়ে। ৩৪ বলে বলে ৬টি চার ও ১ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ২৬তম ফিফটি তুলে নেন বাটলার। তিনি যতোক্ষণ ক্রিজে ছিলেন ততোক্ষণ ইংল্যান্ডের লড়াকু পুঁজি পাওয়ার আশা বেঁচে ছিল। কিন্তু ১০৯ রানের মাথায় ৪৪ বলে ৮টি চার ও ২ ছক্কায় ৬৮ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান তিনি। এরপর জোফরা আর্চারের ১২ ও আদিল রশিদের অপরাজিত ৮ রানের ইনিংসে ইংল্যান্ড সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩২ পর্যন্ত যেতে পারে।
বল হাতে ভারতের বরুণ ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। আরশদীপ ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ২টি, অক্ষর ৪ ওভারে এক মেডেনসহ ২২ রান দিয়ে ২টি ও হার্দিক পান্ডিয়া ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট হ র
এছাড়াও পড়ুন:
চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল, জিয়া-জলিলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি
১৯৭৫ সালের নভেম্বরে পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থানের মধ্যে নিহত কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রম হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর করা মামলার তদন্ত শেষ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাতে তৎকালীন সেনাপ্রধান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মেজর (অব.) মো. আবদুল জলিল ও মেজর (অব.) আসাদ উজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি জানিয়ে তাঁদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
তবে এ হত্যাকাণ্ডে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু তাহেরের (অব.) দায় পেলেও মৃত হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগপত্র দেননি তদন্ত কর্মকর্তা।
গত ৩০ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ঢাকা মেট্রোর পরিদর্শক সিকদার মহিতুল আলম। তাঁর এই প্রতিবেদন আদালতে গৃহীত হলে দৃশ্যত এ মামলার যবনিকাপাত হবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অস্থিরতার মধ্যে ৩ নভেম্বর সামরিক বাহিনীতে এক অভ্যুত্থান ঘটে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে। তখন বন্দী করা হয়েছিল তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। চার দিন পর ৭ নভেম্বর আবু তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে মুক্ত করা হয় জিয়াউর রহমানকে। সেদিনই দশম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অফিসে (বর্তমানে জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণ) নিহত হন খালেদ মোশাররফ, নাজমুল হুদা ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার।
কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর ২০২৩ সালে মামলা করেন তাঁর মেয়ে নাহিদ ইজাহার খান। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় মেজর জলিলকে। হুকুমের আসামি করা হয় জিয়াউর রহমান ও কর্নেল তাহেরকে।নাজমুল হুদা মুক্তিযুদ্ধে ৮ নম্বর সেক্টরে একটি সাবসেক্টরের অধিনায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের আগে ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করেছিল, সে মামলার আসামিদের একজন ছিলেন তিনি।
৪৭ বছর পর মামলা
নাজমুল হুদা হত্যাকাণ্ডের ৪৭ বছর পর ২০২৩ সালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তাঁর মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান। মামলায় মেজর (অব.) জলিলকে প্রধান আসামি করা হয়। হুকুমের আসামি করা হয় তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা আবু তাহেরকে।
মামলায় নাহিদ ইজাহার অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা (নাজমুল হুদা) নিহত হওয়ার সময় তিনি ও তাঁর ভাই ছোট ছিলেন। তাঁরা বড় হয়ে বাবার কোর্সমেট, সহকর্মী ও বিভিন্ন সূত্র থেকে অনুসন্ধানে জানতে পারেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সকালে দশম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অফিসে নাজমুল হুদার সঙ্গে অপর দুই সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ এবং এ টি এম হায়দার অবস্থান করছিলেন। নাজমুল হুদা সকালে নাশতা করার সময় দশম ইস্ট বেঙ্গলের সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল নওয়াজেশের কাছে দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারি থেকে একটি ফোন আসে। এরপর দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তারা নাজমুল হুদাসহ তিন কর্মকর্তাকে বাইরে নিয়ে যান।
গত ৩০ নভেম্বর মেজর নাজমুল হুদা হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। মামলার সঙ্গে তিনজনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাঁদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।সিকদার মহিতুল আলম, তদন্ত কর্মকর্তাএরপর তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ও জাসদ নেতা আবু তাহেরের নির্দেশে দশম ইস্ট বেঙ্গলের কর্মকর্তা, জেসিও ও সৈনিকেরা সংঘবদ্ধভাবে ঠান্ডা মাথায় নাজমুল হুদাসহ তিনজনকে হত্যা করেন বলে এজাহারে দাবি করা হয়।
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে আসামি করে এ মামলা করার সময় নাহিদ ইজাহার সংসদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদে সংরক্ষিত আসনের সদস্য ছিলেন। বিএনপি তখন মামলার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিল, এর পেছনে সরকারের কারসাজি থাকতে পারে।
মেজর এম এ জলিল ও জিয়াউর রহমান