সড়ক পারাপার এবং যান চলাচলে পথচারী ও চালকদের জন্য বিশেষ বার্তা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বুধবার (২২ জানুয়ারি) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীতে চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা প্রায়ই অযাচিতভাবে বা অপ্রয়োজনীয় হর্ন ব্যবহার করেন। এছাড়া অনেকেই অননুমোদিত বিভিন্ন ধরনের উচ্চ মাত্রার হর্ন ব্যবহার করেন। ফলে পথচারী, যাত্রীসাধারণ, অন্যান্য গাড়ির চালক এবং বিশেষভাবে অসুস্থ জনসাধারণের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি হয়।

এসব সমস্যা রোধকল্পে মোটরযান চালকদের সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ধারা ৪৫ এর বিধান অনুসরণ করে অপ্রয়োজনীয় ও উচ্চমাত্রায় হর্ন ব্যবহার না করার অনুরোধ করা হলো। পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ইত্যাদির নিকটে এবং এয়ারপোর্ট ক্রসিং এলাকায় কোনোরকম হর্ন ব্যবহার না করার নির্দেশনা রয়েছে।
 
এছাড়া অ্যাম্বুলেন্সে রোগী না থাকা সত্ত্বেও এবং জরুরি সার্ভিসসমূহের গাড়িগুলো জরুরি কাজ ব্যতীত চলাচলের সময় হর্ন বা হুটার ব্যবহার করেন। এ অবস্থায় অপ্রয়োজনে এবং নিষিদ্ধ এলাকায় হর্ন বা হুটার না বাজানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
 
লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কতিপয় যানবাহনের গ্লাসে কালো পেপার লাগানো থাকে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ধারা ৪০ এর বিধান অনুসরণ করে গাড়িতে কালো পেপার লাগানো থেকে বিরত থাকার জন্য এবং কালো পেপার লাগানো থাকলে তা খুলে ফেলার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
 
প্রায় ক্ষেত্রে দেখা যায় পথচারীরা রাস্তা পারাপারে প্রায়ই জেব্রা ক্রসিং বা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে রাস্তা পারাপার হন। যত্রতত্র রাস্তা পারাপার হলে দুর্ঘটনা ঘটে, যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং যানজটের সৃষ্টি হয়। সুতরাং পথচারীদের ফুটওভার ব্রিজ ও জেব্রা ক্রসিং ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হলো।
 
কোনো মটরযান চালক বা পথচারী বিষয়গুলো পালনে ব্যর্থ হলে নিয়মিত অভিযান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চেয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য পথচ র

এছাড়াও পড়ুন:

এক সময়ের বনদস্যুর ‘বয়ানে’ সুন্দরবনে দস্যুতার দিনগুলো

সুন্দরবনে দস্যুতায় টাকা ছিল। কিন্তু সে অবৈধ টাকা নিজেরা উপভোগ করতে পারতেন না। বনের মধ্যে সব সময় মৃত্যুঝুঁকি তাড়িয়ে বেড়াত, এক ঘণ্টা শান্তির ঘুমও হতো না। মোটেও সুখ ছিল না। দস্যুতার জগতে গিয়ে নিজের প্রাপ্তি বলতে নামের সঙ্গে জুড়ে গেছে ডাকাত শব্দটি। স্ত্রী-সন্তানদেরও চলতে হতো মাথা নিচু করে। কথাগুলো একসময়ের বনদস্যু আল-আমীনের।

আল-আমীন বলেন, দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে তিনি ভালোই আছেন। আর কখনো ওই অন্ধকার পথে পা বাড়াতে চান না তিনি। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে দেখা হয় কয়রা উপজেলার সুন্দরবনঘেঁষা খোড়লকাঠি বাজারসংলগ্ন কয়রা নদীর তীরে। ছোট বাজারটিকে সুন্দরবন থেকে আলাদা করেছে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কয়রা নদী।

নদীর ওপারের সুন্দরবনের ত্রাস ছিলেন আল-আমীন। তিনি বলেন, তখন শরীফ বাহিনী ছিল বড় দস্যুদল। সেই দলে যোগ দিয়ে ডাকাত হয়েছিলেন। কিছুদিনের মধ্যে এলাকায় নাম ছড়িয়ে গেলে বাড়ি ফেরার পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তাঁরা সুন্দরবনের মধ্যে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বনজীবীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন। র‍্যাব আর কোস্টগার্ডের অভিযানের ভয়ে বনের মধ্যে প্রতিটি মুহূর্ত ভয় আর উৎকণ্ঠায় কাটত তাঁদের।

আল-আমীনের বলতে থাকেন, ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছিল তাঁর গণ্ডি। বাড়ি ফেরার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠত। অপরাধের জগৎ ছেড়ে ভালো হতে চাইতেন, তবে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। ২০১৮ সালের শেষের দিকে সুযোগ আসে। আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন। দস্যুনেতা শরীফ না চাইলেও তাঁকে কৌশলে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তাঁরা দলের ১৭ জন সদস্য ১৭টি অস্ত্র আর ২ হাজার ৫০০ গুলিসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।

দস্যুজীবন যাঁরা একবার দেখেছেন, তাঁরা না খেয়ে থাকলেও আর দস্যুতায় ফিরতে চান না—এমনটাই দাবি আল-আমীনের। নদীর তীরে দাঁড়িয়ে গল্প গল্পে তিনি বলেন, ডাঙায় থাকা মাছ ব্যবসায়ীরা ডাকাতদের বাজার, বন্দুক, গুলি সবই সাপ্লাই দিতেন। সব জিনিসের দাম নিতেন তিন থেকে চার গুণ বেশি।

বন বিভাগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে সুন্দরবন অঞ্চলের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন দস্যু ৪৬২টি অস্ত্র, ২২ হাজার ৫০৪টি গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সব শেষ দস্যুদল হিসেবে আত্মসমর্পণ করে শরীফ বাহিনী। সেদিনই প্রাণবৈচিত্র্যে ভরা সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়। তবে দস্যুনেতা শরীফ গত বছরের ৫ আগস্টের পর আবার সুন্দরবনে দস্যুতায় নেমেছেন বলে তাঁর একসময়ের সাথীদের ভাষ্য।
সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সাংবাদিক মোহসীন-উল হাকিম। তিনি বলেন, দলনেতা শরীফের পুরো নাম করিম শরীফ। কয়রার আল-আমীন ছিল বাহিনীর সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। শরীফ প্রথমে আত্মসমর্পণে রাজি থাকলেও পরে বেঁকে বসেন। অন্যরা আত্মসমর্পণ করেন। তবে শরীফ এখন পুনরায় সুন্দরবনে দস্যুতায় নেমেছেন।

কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম আবদুল মালেক বলেন, বনের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা কমে আসায় সুন্দরবনে আবারও দস্যুদের উৎপাত বেড়েছে। এভাবে দস্যুতা চলতে থাকলে বনজীবীদের জীবিকা, সুন্দরবন থেকে রাজস্ব আদায় ও পর্যটন হুমকির মুখে পড়বে; বিপন্ন হবে বন্য প্রাণী আর প্রাণবৈচিত্র্য। দস্যুতা দমনে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নাম বদলে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট করার অনুমোদন
  • এক সময়ের বনদস্যুর ‘বয়ানে’ সুন্দরবনে দস্যুতার দিনগুলো
  • খালেদা জিয়ার খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ৩ মার্চ
  • দেশে এখন মোট ভোটার ১২ কোটি ৩৭ লাখ: সিইসি
  • দেশের মোট ভোটার এখন ১২ কোটি ৩৭ লাখ
  • চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করলেন সিইসি
  • জাতীয় ভোটার দিবস আজ
  • এডিপি বাস্তবায়নে সুপারিশ উপেক্ষিত, ৩ বছরে ব্যয়ের লক্ষ্য ৯,০৮,৬০০ কোটি টাকা