‘সেন্টমার্টিনে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার’
Published: 22nd, January 2025 GMT
সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ ও উন্নয়নে একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হবে। এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করা হবে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বন ভবনে ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপে কুকুরের সংখ্যা গণনা ও সচেতনতা জরিপ: অলিভ রিডলি কচ্ছপ সংরক্ষণ এবং জীববৈচিত্র্য নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.
মূল প্রবন্ধে রুবাইয়া আহমদ জানান, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে কুকুর ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি (ডগ পপুলেশন ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম) বাস্তবায়ন শুরু হবে। প্রথম ধাপে খাদ্য বিতরণ নিয়ন্ত্রণ, নতুন পোষা প্রাণী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং গৃহপালিত প্রাণীদের বন্ধ্যাকরণ নিশ্চিত করার জন্য নীতিমালা তৈরি করা হবে। পরে শিশুদের জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
পরবর্তী ধাপগুলোতে মে ২০২৫-এর মধ্যে ৫০ শতাংশ কুকুরের বন্ধ্যাকরণ, বর্ষাকালে নিবন্ধিত খাদ্য বিতরণ এবং নভেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে ৯০শতাংশ কুকুরের বন্ধ্যাকরণ নিশ্চিত করা হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে সব নারী কুকুরের বন্ধ্যাকরণ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০শতাংশ কুকুরের বন্ধ্যাকরণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই উদ্যোগগুলো সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এবং অলিভ রিডলি কচ্ছপের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গোপন সদকা
গভীর রাত। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কোথাও কোনো সাড়া-শব্দ নেই। রাতের দীর্ঘ নামাজ শেষ করলেন আলী (রহ.)। তিনি জান্নাতের সরদার হুসাইন (রা.)-এর ছেলে। চতুর্থ খলিফা আলী (রা.) তার দাদা। জায়নামাজ গুটালেন আলী। পা বাড়ালেন গুদামঘরের দিকে। খুব সাবধানে কদম ফেললেন। অনর্থক কোনো শব্দ করলেন না। গুদামঘরের তালা খুললেন। বড় বস্তায় পর্যাপ্ত আটা নিলেন। আরেক বস্তায় নিলেন খেজুর। বস্তা দুটি ভালোভাবে বাঁধলেন। নিজেই কাঁধে তুললেন। এবার রওনা হওয়ার পালা।
বাড়ির সদর দরজায় এলেন তিনি। কপাট খুলতেই রাতের নিস্তব্ধতায় চিড় ধরল। এ বাড়ির বিশ্বস্ত গোলাম সাবেরের ঘুম ভেঙে গেল। দ্রুত বিছানা ছাড়ল সে। তারপর যা দেখল, তাতে রীতিমতো ভড়কে গেল। এ কী, যা দেখছে, তা সত্যি নাকি স্বপ্ন? এ যে সত্যিই তার মনিব, পিঠে তার দুটি বড় বস্তা। চুপি চুপি দরজার বাইরে পা রাখছেন।
সাবের দ্রুত পা ফেলল। সামনে এগিয়ে এল। মনিবের সাহায্যে নিজেকে পেশ করল। বলল, ‘আমাকে ডাকলেই পারতেন হুজুর!’
আরও পড়ুনসহজে জাকাতের হিসাব কীভাবে করবেন১৩ মার্চ ২০২৫‘না। আমার কাজ আমাকেই করতে দাও।’ শান্ত গলায় মনিবের জবাব।
সাবের বারবার অনুরোধ করল। তবু মনিব রাজি হলেন না। বোঝাগুলো নিজেই বহন করলেন। এগুতে লাগলেন ধীর পায়ে।
মনিবকে একা যেতে দিতে সাবেরের মন সায় দিল না। আল্লাহ না করেন, পথে যদি কোনো বিপদ হয়। জীর্ণশীর্ণ একটি কুঠির দেখা গেল। এখানেই মনিব থামলেন। গায়ের চাদরে মুখ ঢাকলেন। আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে ভেতরে ঢুকলেন। নিঃশব্দে বস্তা দুটো নামালেন। এরপর দ্রুত বেরিয়ে পড়লেন। কিছুদূর এগোলেন। দেখা পেলেন সাবেরের।
কী সাবের, তুমি এখানে?
হুজুর, যদি আপনার কোনো প্রয়োজন হয়।
আচ্ছা, যাও। শোন, আজ যা দেখলে, তা কারও কাছে প্রকাশ করো না।
এরপর থেকে সাবের প্রায়ই দেখত, মনিব পিঠে বোঝা নিয়ে কোনো ফকির-মিসকিন, বিধবা কিংবা শহীদ পরিবারের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। পূর্বসূরিদের ইলম-আমল সবটুকুই তিনি বহন করেছিলেন। সবার নেক গুণগুলোর বাস্তব প্রতিচ্ছবি ছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগপর্যন্ত রাতের অন্ধকারে গোপন সদকার আমল করেছেন।
আরও পড়ুনআবু তালহার ইসলাম গ্রহণ২৫ মার্চ ২০২৫খাদ্যের বোঝা নিজেই বহন করতেন। সবার অজান্তে এ আমল করার জন্য খাদেম, গোলাম বা অন্য কারও সহযোগিতা নিতেন না। তার মৃত্যুর আগপর্যন্ত এসব পরিবারের কেউ জানতে পারেনি, তাদের ঘরে সদকার মাল কোত্থেকে আসে?
একদিন তার মৃত্যু হলো। শহরের লোকেরা বলাবলি করল, ‘আলী বিন হুসাইনের মৃত্যুর পর আমরা রাতের গোপন দান থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’ মৃত্যুর পর যিনি তাকে গোসল দিয়েছেন, তিনি বললেন, ‘তার ঘাড়ে আমি ভারী বোঝা বহনের দাগ দেখতে পেয়েছি।’
সূত্র: হিলয়াতুল আউলিয়া: ৩/১৩৬, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ৯/১১৪
আরও পড়ুনরাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে২৫ মার্চ ২০২৫