ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কারাগারে
Published: 22nd, January 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতাকে পুরোনো দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম মেহেদী হাসান ওরফে লিটু (৫০)। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
লিটু স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিশু ও পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগি ইউনিয়নের পূর্ব আলগি গ্রামের আওয়াল মিয়ার ছেলে।
ভাঙ্গা থানার ওসি মোকছেদুর রহমান বলেন, গত মঙ্গলবার বিকেলে লিটুকে ভাঙ্গা পৌরসভার দাঁড়িয়ারমাঠ মহল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পুলিশের ওপর হামলা এবং ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর বিস্ফোরক আইনের মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ নভেম্বর ভাঙ্গা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ওরফে বিটু মুন্সী ভাঙ্গা থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। এই মামলায় ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৫৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়।
এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট ভাঙ্গা পৌরসভার কুমার নদের ওপর সেতুর দুই পাশের মহল্লার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা করেন। দুটি মামলার এহাজারে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে লিটুর নাম ছিল না। তাঁকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের ই-কমার্স: কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই
পর্ব–১
একসময় বাংলাদেশের ব্যবসা মানেই ছিল দোকানপাট আর মেলায় বিকিকিনি। কিন্তু ডিজিটাল যুগের হাতছানিতে আজ সেই বাণিজ্য এসেছে মোবাইলের পর্দায়, ল্যাপটপের ক্লিকে। ই-কমার্স এখন আর বিলাসিতা নয়, এটি মানুষের নিত্যব্যবহার্য। দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা এই পরিবর্তনের প্রধান চালিকা শক্তি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এত দূর এসেও আমরা কি যথেষ্ট প্রস্তুত? আমাদের বর্তমান অবস্থান কোথায়, আর সামনে যাওয়ার পথ কী?
বাংলাদেশে ই-কমার্সের অগ্রযাত্রা
বাংলাদেশে ই-কমার্সের সূচনা হয় মূলত ২০০৯-১০ সাল থেকে। প্রথম দিকে কিছু ওয়েবসাইট–নির্ভর ব্যবসা শুরু হলেও ফেসবুকের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম–নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসার জোয়ার আসে। বর্তমানে প্রায় ২ লাখের বেশি ই-কমার্স উদ্যোগ সক্রিয়, যার মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি ফেসবুকভিত্তিক। (সূত্র: ই–ক্যাব অ্যানুয়াল রিপোর্ট ২০২৩)
মোবাইল আর্থিক সেবার ভূমিকা
ই-কমার্সের প্রসারে বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো মোবাইল আর্থিক সেবার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ৫–৬ লাখ অনলাইন লেনদেন হয়, যার অধিকাংশই ই-কমার্স সম্পর্কিত। এই প্রবাহ গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ই-কমার্স বিস্তারের রাস্তা তৈরি করেছে।
কোভিড-১৯ এবং ই-কমার্স বিপ্লব
কোভিড-১৯ মহামারিকালে যখন মানুষ ঘরবন্দী ছিল, তখন ই-কমার্সই হয়ে ওঠে প্রধান কেনাকাটার মাধ্যম। খাদ্যপণ্য, ওষুধ, পোশাক, এমনকি গৃহস্থালিসামগ্রীর চাহিদা অনলাইনে দ্রুত বেড়ে যায়। লাইটক্যাসল পার্টনারসের গবেষণামতে, কোভিড–পূর্ব সময়ের তুলনায় ই-কমার্স লেনদেন তখন ৩০–৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
অর্জন এবং সম্ভাবনা
* কর্মসংস্থান: প্রায় ২০–২৫ লাখ মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত। (ই–ক্যাব, ২০২৩)
* নারী ক্ষমতায়ন: ৫০ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা অনলাইন ব্যবসায় সক্রিয়।
* এসএমই অন্তর্ভুক্তি: প্রায় ৪০ শতাংশ ই-কমার্স উদ্যোগ এসএমই মালিকানাধীন।
* ফিনটেক বিস্তার: ৯৫ শতাংশ লেনদেন এখন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। (বাংলাদেশ ব্যাংক রিপোর্ট ২০২৩)
* লজিস্টিকস উন্নয়ন: পেপারফ্লাই, রেডএক্স, পাঠাও কুরিয়ার সেবা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
মূল চ্যালেঞ্জ
* গ্রাহক আস্থা সংকট: অনিয়মিত পণ্য সরবরাহ, ভুয়া বিজ্ঞাপন ও টাকা ফেরত (রিফান্ড) জটিলতা এখনো বড় সমস্যা।
* ডিজিটাল নিরাপত্তাঝুঁকি: সাইবার নিরাপত্তার দুর্বলতার কারণে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি রয়েছে।
* রেজিস্ট্রেশন ও করের জটিলতা: এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায়িক লাইসেন্স ও ট্যাক্স রেজিম সহজ নয়।
* আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের বাধা: পেপ্যাল, স্ট্রাইপের মতো বৈশ্বিক লেনদেন অনুপস্থিতি।
* দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি: ই-কমার্স পরিচালন, ডিজিটাল বিপণন ও ডেটা অ্যানালিটিকসে দক্ষতা প্রয়োজন।
মোহাম্মদ নূরুজ্জামান