১৪৪ ধারার মধ্যেই বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ২২
Published: 22nd, January 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। বুধবার প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারার মধ্যেই উপজেলার ইসমাইলপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহদের মধ্যে রয়েছেন– শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দেহরক্ষী আনছার সদস্য সাইফুল ইসলাম, পথচারী মেহেদী, বিএনপির কর্মী আব্দুর রশিদ, আব্দুল মজিদ, আব্দুর রাজ্জাক, সবুর, মফিজুর, সোহাগ, সাইফুল, আব্দুল্লাহ ও হাবিবুর।
জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটির নেতারা গতকাল সদরে শান্তি সমাবেশ আয়োজন করেন। এই খবরে দুপুরের দিক থেকে বিলুপ্ত কমিটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিতে থাকে। দু’পক্ষের উত্তেজনা ঘিরে সহিংসতার শঙ্কায় বিকেল পৌনে চারটায় শ্যামনগর সদর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান কবীরের নেতৃত্বে একটি মিছিল শ্যামনগর সদরে যাচ্ছিল। উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশেক-ই এলাহী মুন্নার বাড়ির সামনে মিছিল পৌঁছালে অজ্ঞাত স্থান থেকে একটি লাঠি ছুড়ে মারা হয়। সঙ্গে সঙ্গে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে তাদের থামানো চেষ্টা চালান ইউএনও রনী খাতুন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত। একপর্যায়ে ওসিসহ অন্তত ২২ জন আহত হন।
সোলায়মান কবীরের অভিযোগ, গত ১৯ ও ২০ জানুয়ারি তার কর্মীদের ওপর হামলা হয়। এর প্রতিবাদে বুধবার সদরে আয়োজিত শান্তি সমাবেশ যাচ্ছিলেন তিনি ও তার নেতকর্মীরা। পথে আলিম, শাহআলম ও মফুসহ কিছু আওয়ামী লীগ কর্মীকে নিয়ে উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির নেতারা হামলা করে। এতে তাদের ১২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সবুর, মফিজুর, সোহাগ, সাইফুল, আব্দুল্লাহ ও হাবিবুরের অবস্থা গুরুতর। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল আলিমের উসকানিতে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ সোলায়মানের। তিনি বিএনপির শ্যামনগর সংসদীয় আসনের সাংগঠনিক টিমের প্রধান আব্দুল আলিমকে উপজেলা অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন।
আশেক-এলাহী মুন্নার অভিযোগ, গতকাল বিকেলে শ্যামনগর সদরে ছাত্রদলের উদ্যোগে বিএনপির ৩১ দফা শীর্ষক সভা চলছিল। সভায় হামলার উদ্দেশ্যে লোকজন নিয়ে রওনা হন সোলায়মান। পথিমধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইফতেখার আলীর নির্দেশে সোলায়মান, লিয়াকত আলী বাবু, সফিকুল ইসলাম দুলু ও আব্দুল ওহাবের নেতৃত্বে তার বাড়িতে হামলা হয়। এই হামলায় আওয়ামী লীগের সাদেকুর রহমানের সন্ত্রাসী বাহিনী ঢাল, রামদা, লাঠি, হকস্টিক ও ককটেল নিয়ে অংশ নেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার তদন্তপূর্বক প্রতিকার দাবি করছি।
ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আমি আহত হয়েছি। এ ছাড়া দু’পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। রাত আটটা পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।
ইউএনও রনী খাতুন জানান, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে। আহত আনসার সদস্যকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ শ য মনগর ব ল প ত কম ট র ব এনপ র র সদস য স ঘর ষ র সদর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ঘরবাড়ি ভাংচুর, লুটপাট : যুবদল নেতাসহ আহত ১০
বন্দরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় হামলাকারিদের বাধা দিতে গিয়ে বন্দরে ২৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি সফর আলী (৫০) সহ কমপক্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন রক্তাক্ত জখম হয়েছে।
আহতদের মধ্যে ইছাক (৪০) রশিদ (৪০) জহিরুল (৩২) শফিকুল (৪৫) মামুন (৩৫) ও বেলায়েত (১৬) এর নাম জানাগেলেও অন্য আহতদের নাম পরিচয় তাৎক্ষনিক ভাবে জানা যায়নি । স্থানীয়রা তাদের মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বন্দর থানার ২৬ নং ওয়ার্ডের রামনগর ইস্পাহানী এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। ওই সময় হামলাকারি রাসেল, আল আমিন, আমানত, জিসান, মনির ও মামুন ডাকাতসহ অজ্ঞাত নামা ৫/৭ জন বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর চালিয়ে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় আহত সাবেক যুবদল নেতার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বাদী হয়ে শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে উল্লেখিতদের আসামি করে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ২৬নং ওয়ার্ড সোনাচড়া এলাকার মৃত মো. আলী বেশ কিছু দিন পূর্বে তালতলা রোলিং মেইলে প্লেট পরে দুর্ঘটনা বসত মৃত্যুবরন করেন। পরবর্তীতে বাদিনী স্বামী সফর আলী ও এড. বিল্লাল হোসেন মধ্যস্থতায় মৃত ব্যাক্তি মো. আলীর স্ত্রীকে দশ লাখ টাকা রোলিং মেইলের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে নিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে বেশ কিছু দিন ধরে সকল বিবাদীরা মৃত মো. আলীর স্ত্রী কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল । চাঁদা দাবির ঘটনা জানতে পেরে বাদিনী স্বামী যুবদল নেতা সফর আলী এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে চাঁদাবাজ রাসেল ও আলামিন গংদের সাথে বাকবিতন্ড ও তর্কাতর্কী হয়।
এর ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় রামনগর ইস্পাহানী এলাকার মতি মিয়ার ছেলে চাঁদাবাজ রাসেল একই এলাকার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে আল আমিন, মৃত আল ইউনুছ মিয়ার ছেলে আমানত ও একই এলাকার আকবর ডাকাতের ২ ছেলে মনির ও মামুন ডাকাতসহ অজ্ঞাত নামা ৫/৭ জন সন্ত্রাসী ধারালো দেশীয় অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যুবদল নেতা সফর আলী বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বসত বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
ওই সময় হামলাকারিরা বেশ কয়েকটি বসত ঘর ব্যাপক ভাংচুর করে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ওই সময় হামলাকারিদের বাধা দিতে গিয়ে সাবেক যুবদল নেতাসহ ৭ জন রক্তাক্ত জখম হয়।
সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে । এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ গুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।