সিরাজগঞ্জে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা জয়ী
Published: 22nd, January 2025 GMT
সিরাজগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার রফিক সরকার (বিএনপি) এবং রফিকুল ইসলাম সেলিম (জামায়াত) সমর্থিত আইনজীবী প্যানেল জয়ী হয়েছে। আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৭টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিএনপি ও জামায়াতপন্থি প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
এদিকে, নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা প্রদান ও ভয় দেখানোর অভিযোগ করেছেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজয়ী প্যানেলের সভাপতি রফিক সরকার ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সেলিম।
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট কায়ছার আহমেদ লিটন জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৩০ জানুয়ারি এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তফসিল অনুযায়ী ১৬ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে ১৭টি পদের বিপরীতে ৩টি পদ ছাড়া বাকি ১৪টি পদে একটি করে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়। ২২ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন সভাপতি পদে কামরুজ্জামান কামাল (জাপা), সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুল হামিদ (বিএনপি) ও আমিনুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ) এবং ক্রীড়া ও সাস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুজাহিদ বিন রহমান মিঠুন (জাপা) মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করে নেন। এ অবস্থায় ১৭টি পদে সবাই একক প্রার্থী হওয়ায় সভাপতি শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার রফিক সরকার (বিএনপি) ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সেলিম (জামায়াত) সমর্থিত প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন বাবর
চিন্ময়কাণ্ডে আসামি হওয়া ৬৩ আইনজীবীর জামিন
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামীপন্থি কয়েকজন আইনজীবী বলেন, ‘‘নির্বাচনে অংশ নিতে আমরা প্রস্তুত ছিলাম। এ অবস্থায় আদালত প্রাঙ্গণে বহিরাগত লোকজন এসে আমাদের প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী গোলাম হায়দারকে লাঞ্চিত করে এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের নির্বাচনে অংশ না নিতে প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। এছাড়া গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তের পর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অপসারিত পিপি আব্দুর রহমান ও অপসারিত জিপি রাখালের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করায় তারা জেলহাজতে রয়েছেন। যে কারণে ঝামেলা এড়াতে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়নি।’’
নবনির্বাচিত সভাপতি রফিক সরকার বলেন, সমিতির ১৭টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ ১২টিতে বিএনপি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ ৫টি পদে জামায়াত সমর্থক আইনজীবীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের আইনজীবীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘দলীয়ভাবে কাউকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়নি। বহিরাগত লোকজনের ভয়ে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি— এমন বাধা আমরাও অতীতে অনেক পেয়েছি কিন্তু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়নি।’’
ঢাকা/রাসেল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব আইনজ ব র ল ইসল ম সমর থ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সালমান এফ রহমানের আইনজীবীদের তোপের মুখে সাংবাদিকরা
আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের আইনজীবীদের তোপের মুখে পড়েছেন সাংবাদিকেরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ড শুনানির জন্য সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ঢাকা উত্তরের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের এমডি দিলীপ কুমার আগারওয়াল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ কয়েকজনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
সকাল ১০ টার দিকে আসামিদের হাজতখানা থেকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে তোলা হয়। সালমান এফ রহমান ও অন্য আসামিদের আইনজীবীরা কাঠগড়ার পাশে গিয়ে ঘিরে ধরেন। সালমান এফ রহমানসহ সব আসামি তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। বিচারক ১০টা ১২ মিনিটে এজলাসে ওঠেন।
এ সময় নিম্ন আদালতে পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকরা সালমান এফ রহমানের আইনজীবীদের তোপের মুখে পড়েন। সাংবাদিকরা কেন এজলাস কক্ষে আছেন, এ প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা। এরপর ছবি ও ভিডিও করার অভিযোগ তুলে সাংবাদিকদের হেনস্তা করে এজলাস কক্ষে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা বলেছেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকতা করছি। দুই দিন আগে আইনজীবীদের কাছে সালমান এফ রহমানসহ বিভিন্ন আসামির বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাতের বার্তা দেওয়ার নিউজ করেন সাংবাদিকরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ সব সাংবাদিককে নজরে রাখেন সালমান এফ রহমানের আইনজীবীরা। এজলাস কক্ষে সাংবাদিক আছে কেন, প্রশ্ন তোলাসহ ছবি ও ভিডিও করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে আদালত প্রাঙ্গণ অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।”
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেছেন, “সাংবাদিকরা এখানে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন। আইনজীবীরা কেন বাধা দেবেন? আজকের ঘটনা কী হয়েছে, দেখিনি। সামনের দিন থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কেউ যেন এ ধরনের আচরণ না করেন, এ বিয়ষটি দেখব।”
ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেছেন, “ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। যেসব আইনজীবী সাংবাদিকদেরকে হেনস্তা করেছেন, তাদের নাম দিলে আমরা ঢাকা আইনজীবী সমিতি থেকে ন্যায়বিচার করব। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যা যা করার দরকার, আমরা করব। সেই আইনজীবীদের নাম্বার আমাদের কাছে দেন।”
ঢাকা/মামুন/রফিক