বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সপ্তম সমাবর্তন আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ঢাকার আগারগাও এ অবস্থিত চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ সমাবর্তন হবে বলে জানা গেছে। 

এর আগে, ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। 

আগামী সমাবর্তনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। সপ্তম সমাবর্তনের জন্য ‘সামার ২০১৭’ সেমিস্টার থেকে ‘ফল ২০২৪’ সেমিস্টারের মধ্যে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

যেসব শিক্ষার্থী সব সনদ উত্তোলন করেছেন, তারা নিজ নিজ স্টুডেন্ট পোর্টালে লগ ইন করে সরাসরি রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন। কিন্তু যারা উত্তোলন করেননি, তাদের যাবতীয় বকেয়া (যদি থাকে) পরিশোধ করে সব সনদ উত্তোলনের পর স্টুডেন্ট পোর্টালে লগ ইন করে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।

রেজিস্ট্রেশনের সময় শিক্ষার্থীদের তাদের সচল মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল এড্রেস প্রদান করতে হবে। সঙ্গে একটি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি আপলোড করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ছবির সাইজ ২এমবি এর বেশি হওয়া যাবে না এবং অবশ্যই .

জেপিজি অথবা .জেপিইজি ফরম্যাটে হতে হবে।

সমাবর্তনের জন্য ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার টাকা (সনদ ফি’সহ)। তবে গাউন জামানত ১ হাজার টাকাসহ (ফেরতযোগ্য) মোট ৮ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। এছাড়া অতিথি (সর্বোচ্চ দুইজন, প্রাপ্তবয়স্ক) ফি  জনপ্রতি ২ হাজার টাকা করা হয়েছে।

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের টঙ্গী শাখার হিসাবের নাম AUB CONVOCATION এবং হিসাব নম্বর ১৩১১১২০০১৮৭৬৩ এর অনূকুলে ফি প্রদান করে জমা রশিদ আবেদনের সময় আপলোড করতে হবে। যেকোন প্রয়োজনে [email protected] ইমেইলে এবং ০১৯১৫২৭৭৭৩৩ ও ০১৭৫৫৯৫৯৪৭৭ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।

এ বিষয়ে এইউবি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মাদ জাফার সাদেক বলেন, “গত কনভোকেশন হয়েছিল ২০১৭ সালে। মাঝখানে ফ্যাসিস্ট সরকারের অসহযোগিতার কারণে কনভোকেশন আয়োজন করতে পারেনি এইউবি। এবারের কনভোকেশনের মাধ্যমে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি এগিয়ে যাবে তার স্ব-মহিমায়। বিগত সময়ের মত দেশকে উপহার দিবে সৎ দক্ষ, যোগ্য ও নৈতিকতা সম্পন্ন গ্র‍্যাজুয়েট।”

কনভোকেশনকে সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের আহ্বান জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. শাহজাহান খান।

ঢাকা/আরিফুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ন করত

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবন সুরক্ষায় বিলম্ব নহে

সুন্দরবনের চতুষ্পার্শ্বের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ইসিএর ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে নূতন শিল্প কাঠামো নিষিদ্ধের যেই সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করিয়াছে, উহাকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা জানি, প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ বিবিধ কারণে হুমকির সম্মুখীন। বস্তুত সুন্দরবন ঘিরিয়া পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ অনুসারে ১৯৯৯ সালে দেশের প্রথম ইসিএ ঘোষণা করা হইয়াছিল। এই বন সুরক্ষায় প্রতিবেশ অঞ্চলের চতুষ্পার্শ্বে এই প্রকার পরিবেশ গঠন করা জরুরি হইলেও উহা বাস্তবায়ন না হওয়া বিস্ময়কর। বিশ্বব্যাপী তো বটেই, এমনকি প্রতিবেশী ভারতেও বন ও বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ কৌশল হিসাবে যথায় এই সীমারেখা ১০ হইতে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হইয়া থাকে, তথায় দেশে উহা উপেক্ষিত হইয়াছিল কেন?

২০১৭ সালে আগস্টে ঘোষিত হাইকোর্টের এক রায়েও সুন্দরবনের চতুষ্পার্শ্বে ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে নূতন কোনো শিল্পকারখানা স্থাপন না করিবার নির্দেশনা দেওয়া হইয়াছিল। উক্ত রায়ে এই সীমানার মধ্যে থাকা শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করিতে বলা হইলেও উহা বাস্তবায়ন হয় নাই।

২০২১ সালের শেষ দিকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় যখন সুন্দরবনের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার সীমা হ্রাসের ‘পর্যালোচনা’ করিয়াছিল তখনও এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে আমরা ঐ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করিয়াছিলাম। আমাদের বক্তব্য ছিল, ইসিএর পর্যালোচনা হইতে পারে কেবল ইতোমধ্যে স্থাপিত কলকারখানা স্থানান্তরকরণ, নূতন স্থাপনা রোধকল্পে এবং উক্ত এলাকা হ্রাসকরণের অর্থ হইবে রাষ্ট্রের স্বঘোষিত আইন ও নীতির বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের অবস্থান।

স্বস্তির বিষয় হইল, সোমবার সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত জাতীয় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন কমিটির নির্বাহী সভায় সুন্দরবনের পরিবেশগত সুরক্ষায় ২০১৭ সালের জাতীয় পরিবেশ কমিটির ৩.৪.৪ নম্বর সিদ্ধান্ত এবং ২০২১ সালের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হইয়াছে। একই সঙ্গে নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ দ্বারা সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার ইসিএ এলাকার মধ্যে স্থাপিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ করিয়া তদনুযায়ী সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ বলিয়া আমরা মনে করি।

স্বয়ং বন বিভাগের ২০১৮ সালের প্রতিবেদনেই স্পষ্ট, সুন্দরবনের ইসিএ এলাকায় অন্তত দুইশত শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়িয়া উঠিয়াছে, যথায় উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ‘লাল’ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ এই সকল কারখানা ভয়াবহভাবে পানি, বায়ু ও মাটি দূষণ করিয়া থাকে। সেই সকল কারখানা বন্ধ হয় নাই। উপরন্তু এই প্রকার কারখানার সংখ্যা যে আরও বৃদ্ধি পাইয়াছে, বলিবার অপেক্ষা রাখে না। সুন্দরবনকে সর্বাপেক্ষা নাজুক করিয়াছে উহার ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র লইয়া পরিবেশকর্মীদের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও তৎকালীন সরকার উহা নির্মাণ করিয়াছিল। যাহার ফলে উন্মুক্তভাবে কয়লা পরিবহনে দূষিত হইতেছে সুন্দরবন এলাকার নদী ও বন। যাহার বিরূপ প্রভাব পড়িয়াছে জলজ ও বনজ জীববৈচিত্র্যের উপর।

আমরা বিশ্বাস করি, সুন্দরবন সুরক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ যথাযথরূপে প্রতিপালিত হইবে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাকৃতিক সম্পদের চতুষ্পার্শ্বের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার মধ্যে নূতন করিয়া শিল্পকারখানা যাহাতে গড়িয়া না উঠে, উহা নিশ্চিত করিতে হইবে। সুন্দরবন যদ্রূপ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ন্যায় দুর্যোগে আমাদের প্রাকৃতিক বর্মরূপে ভূমিকা পালন করিয়া থাকে, তদ্রূপ ইহার বনজ সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে বিপুল অবদান রাখে। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্যস্থল ও রামসার সাইটের মর্যাদাপ্রাপ্ত সুন্দরবনে ইতোপূর্বে যেই ক্ষতি সাধিত হইয়াছে, নূতন করিয়া মনষ্যসৃষ্ট এইরূপ অবিমৃষ্যকারিতা রোধ করিতে হইবে। ইসিএ সীমানার মাধ্যমেই ইহার সূচনা হইতে পারে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবন সুরক্ষায় বিলম্ব নহে