ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার নিয়ে আবেদন খারিজ
Published: 22nd, January 2025 GMT
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে করা আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বুধবার এ আদেশ দেন।
ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, আবেদনটি অপরিপক্ব, তাই খারিজ করা হলো। তা ছাড়া ট্রাইব্যুনালে গুমের অপরাধের বিচার চলবে।
সম্প্রতি গুমের অভিযোগে গ্রেপ্তার ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.
আবেদন খারিজের পর চিফ প্রসিকিউটর বলেন, কোনো আইন যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় তাহলে সেটির বৈধতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ আছে শুধুই হাইকোর্টে। এই আইনে যাদের বিচার হচ্ছে তাদের মৌলিক অধিকার নিয়ে সাংবিধানিক কোনো চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন না।
এ সময় জিয়াউল আহসানের বোন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিরোধিতাকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্যই এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতার বিচারের জন্য নয়। তা ছাড়া জুলাই-আগস্টে কোনো যুদ্ধ হয়নি। জিয়াউল আহসান কোনো যুদ্ধাপরাধী নন।
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার না করার অনুরোধ
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন; সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন চিফ প্রসিকিউটর।
তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের রায়ে আছে হট স্পিচ গণমাধ্যমে প্রচার না করার জন্য। এর পরও কিছু গণমাধ্যম শেখ হাসিনার হট স্পিচ প্রচার করছে। আমরা অনুরোধ করব তার হট স্পিচ প্রচার না করার। ট্রাইব্যুনালের বিচারকে প্রভাবিত ও বাধাগ্রস্ত করে– শেখ হাসিনার এমন স্পিচ যদি প্রচার অব্যাহত রাখা হয় তাহলে আমরা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবব।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কাঠগড়ায় মেজাজ হারালেন হাজী সেলিম
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে সাজেদুর রহমান ওমর নামে এক ব্যক্তি নিহতের মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি.এম. ফারহান ইশতিয়াকের আদালত শুনানি শেষে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
এর আগে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত তার উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির তারিখ রাখেন। এদিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া, হাজির করা হয় আওয়ামী সরকারের সাবেক কয়েকজন মন্ত্রী, এমপিকেও। তাদেরও গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি ছিলো।
শুনানিকালে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা হাজী সেলিমের ওকালত নামায় স্বাক্ষর নিতে যান আইনজীবী। এসময় মেজাজ হারান তিনি। কিছুটা উচ্চবাচ্য করেন। ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে বোঝানোর পর তিনি স্বাক্ষর করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে হাজী সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ বলেন, “আমার মক্কেল কথা বলতে পারেন না। কারাগারে খাবার খেতে পারেন না। কাউকে কোনো কিছু বোঝাতে পারেন না। এই অভিমানে রেগে গিয়েছিলেন। এজন্য তিনি ওকালত নামায় স্বাক্ষর করতে চাচ্ছিলেন না। কিছুক্ষণ বোঝানোর পর স্বাক্ষর করেন। তাকে বলেছি, সিস্টেমের বাইরে তো কিছু করতে পারবো না।”
তিনি বলেন, “আমার মক্কেলকে ১৯ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এখনো ১০ দিনের রিমান্ড পেন্ডিং রয়েছে।”
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ২১ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্রজনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন সাজেদুর রহমান ওমর। বিকেলে আসামিদের আক্রমণে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ আগস্ট মারা যান। এ ঘটনায় গত ৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা হয়।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে পুরান ঢাকার বংশাল এলাকা থেকে হাজী সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
ঢাকা/মামুন/ইভা