শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে নর্দান ইউনিভার্সিটির সিওএর পদত্যাগ
Published: 22nd, January 2025 GMT
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (এনইউবিটি) শিক্ষক অধ্যাপক এটিএম জহির উদ্দীন। তিনি প্রতিষ্ঠানটির সেন্টার অব এক্সিলেন্স (সিওএ) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন অধ্যাপক হয়েও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছিল।
এনইউবিটির দায়িত্ব থেকে অধ্যাপক এটিএম জহির উদ্দীনকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার তার পদত্যাগের দাবিতে শাট-ডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বিকালে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করেন জহির উদ্দিন। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এনইউবিটিকে) দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার ছিল না। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য রেখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড.
গত জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষকদের একটি অংশ ছাত্রদের পক্ষে মানববন্ধন করেন। তখন অধ্যাপক জহির উদ্দিন ওই শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানি করেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকেই তার পদত্যাগের দাবি শুরু হয়। কিন্তু ট্রাস্টি ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় দাবি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
সদ্য যোগ দেওয়া এনইউবিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক জোয়ারদার বলেন, পদত্যাগপত্র হাতে পেয়েছি। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী দ্রুত এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজউক চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল
আদালতের আদেশ অনুসরণ না করে ‘মিলেনিয়াম সিটি’ প্রকল্পের মাটি ভরাট অব্যাহত রাখায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন। অপর তিনজন হলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আদালত অবমাননার অভিযোগে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না।
আদেশের বিষয়ে পরে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না প্রথম আলোকে বলেন, মাটি ভরাটসহ মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকার জেলা প্রশাসকের। আদেশ অনুসারে তা প্রতিপালন না হওয়ায় চারজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনটি করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত রাজউক চেয়ারম্যানসহ চারজনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন।
এর আগে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত টোটাইল মৌজায় বিদ্যমান টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাটের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জনস্বার্থে গত বছর একটি রিট করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ জানুয়ারি হাইকোর্ট টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ে মাটি ভরাট কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেন। একই সঙ্গে টোটাইল খাল ভরাট করে গড়ে ওঠা মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেডের অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের সব কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
বেলা জানায়, হাইকোর্টের আদেশে টোটাইল খাল, খাল–সংলগ্ন নিচু কৃষিজমি ও জলাশয়ের বর্তমান অবস্থা তদন্ত, মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড কর্তৃক মাটি ভরাটের ফলে টোটাইল খালের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে, তা নিরূপণ এবং হাউজিং কোম্পানি কর্তৃক টোটাইল মৌজায় অবস্থিত জলাশয়, বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ও নিচু কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন প্রতিরোধ বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকার জেলা প্রশাসককে আদালতের আদেশ পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন ওই আদেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড আপিল বিভাগে আবেদন করে। বেলা জানায়, আপিল বিভাগ শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৯ এপ্রিল পক্ষগুলো মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মাটি ভরাটের সব কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। এর ফলে মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পে নতুন করে মাটি ভরাটসহ কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ নেই। আদালতের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তা লঙ্ঘন করে সম্প্রতি মিলেনিয়াম হাউজিং লিমিটেড কর্তৃক অননুমোদিত মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পে মাটি ভরাটসহ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলমান রেখেছে এবং প্লট তৈরি করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে চটকদার বিজ্ঞাপন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার আকারে প্রচার করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করে।
আরও পড়ুনখাল ভরাট ও মিলেনিয়াম সিটি প্রকল্পের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা২২ জানুয়ারি ২০২৪