শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, “দেশের শিক্ষা খাত ও শিক্ষাব্যবস্থার অবস্থা খুবই নাজুক। স্বল্প সময়ে এ খাতে তেমন সংস্কার করা সম্ভব নয়। আর তিন মাস কাজ করে কিছুই করা সম্ভব নয়। এজন্য সংস্কার কমিশন করেও খুব একটা লাভ নেই। এটা আমার অভিমত। আমি এটা বলেছিও।”

বুধবার (২২ জানুয়ারি) শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ইরাব) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনে এ মতবিনিময় হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “শিক্ষাব্যবস্থা একটা দেশে নষ্ট হতে অনেক সময় লাগে। এটা একটা সাইকেল (চক্র)। প্রাইমারি স্কুল খারাপ হলে, মাধ্যমিকেও খারাপ হবে। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে তারাই তো আবার শিক্ষক হবে, পড়াবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।”

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশে শিক্ষাব্যবস্থা প্রথম খারাপ হয় ১৯৭২ সালে। বঙ্গবন্ধুর সময়ে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ইউসুফ আলী। তার একটা প্রচণ্ড ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। সেটা হলো—ভালো যে কলেজগুলো ছিল, নামকরা কলেজ যাকে বলে; বিএম কলেজ, ঢাকা কলেজ, মুরারীচাঁদ কলেজ, রাজশাহী কলেজ; প্রথমে এগুলোকে ইউনিভার্সিটি কলেজ বানিয়ে দিয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “এরপর পলিটিক্যালি সব কলেজকে জাতীয়করণ করা হলো। জাতীয়করণ না করলেও ব্যক্তি উদ্যোগে গ্রামে গ্রামে কলেজ গড়ে তোলা হলো, অনুমোদন নেওয়া হলো। এভাবে গড়ে উঠল আজকের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এখন এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি বেকার।”

ঢাকা/হাসান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষা সংস্কার কমিশন চায় অভিভাবক ফোরাম

শিক্ষা খাতে সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। সারাদেশে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য মহামারি আকার ধারণ করেছে জানিয়ে কোচিং বাণিজ্য নিষিদ্ধের দাবি ও একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতিমুক্ত পরিচালনা পর্ষদ চান তারা। গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু।

সংগঠন সভাপতি শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও অনিয়ম, দুর্নীতি রোধকল্পে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ– এই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের প্রেষণে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের দাবি জানান। সিভিল প্রশাসকের চেয়ে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করলে দুর্নীতি, ভর্তি বাণিজ্য কমবে বলে মনে করেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি স্থগিত করে অ্যাডহক কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটিতে আগের মতোই রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রভাব বিস্তার করছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে পরিচালনা পর্ষদ থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।

জিয়াউল কবির দুলু বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কমিশন গঠন করছে। কিন্তু শিক্ষার ভয়াবহ অবনতি হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠিত হয়নি। দেশের জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তি, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকের সমন্বয়ে পরামর্শক কমিটি গঠন করে কিছু সুপারিশ নিয়ে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করার দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে শিক্ষার বিভিন্ন অধিদপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে তাদের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শক্তিশালী জবাবদিহিমূলক মনিটরিং সেল গঠন করে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক কর্মকাণ্ড ও অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণেরও  দাবি জানান তিনি। শিক্ষাকে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা জাতীয়করণ হলে শিক্ষকদের বিদ্যমান সমস্যা ৯৫ শতাংশ থাকবে না। ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিতে গ্র্যাজুয়েটের নিচে কোনো সদস্য থাকতে পারবেন না– এমন প্রজ্ঞাপন জারি এবং কমিটির নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো প্রচার করতে না পারার বিধান করারও দাবি জানান অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি।

এসব দাবি আদায়ে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে– শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান, জনমত গঠনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাবি-দাওয়া সংবলিত লিফলেট বিতরণ ও আগামী ৩ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম উদ্দিন আহমেদ, আহছান উল্লাহ মানিক, দিলারা আক্তার প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষা সংস্কার কমিশন চায় অভিভাবক ফোরাম