পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের দুবাইয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাট ও একটি ভিলা জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন।

দুদকের পক্ষে থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত অর্থপাচার করে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন। তিনি দুবাইয়ে তিন বেডের (শয়নকক্ষ) একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এ ছাড়া পাঁচ বেডের একটি ভিলা কিনেছেন।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশে অর্থ পাঠানোর সুযোগ নেই। কিন্তু চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন না নিয়ে অর্থপাচার করেছেন। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের আয়কর বিবরণীতেও দুবাইয়ে থাকা সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা সম্পদ দিয়ে দুবাইয়ে সম্পদ কিনেছেন তিনি।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ঢাকায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, তাদের ২টি বাড়িসহ সব প্লট ও জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।

দুদকের তথ্য বলছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নামে রাজধানীর গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। গুলশান-২–এ রয়েছে ২০ তলা বাড়ি। এর বাইরে পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর ও বাড্ডায় তাঁর ২৫ কাঠা জমি রয়েছে।

চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে রাজধানীতে পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা একটি বাড়িও রয়েছে তাঁর। এর বাইরে তাঁর নামে আরও ১৩ কাঠা জমির সন্ধান পেয়েছে দুদক।

এ ছাড়া চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও আঞ্জুমান আরার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা সাতটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দেন আদালত।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ ছাড়া চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর–সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি অর্জন করা হয়েছে বলে দুদক জানতে পেরেছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন পপসম্রাট আজম খান

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চলতি বছর আট বিশিষ্টজনকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে সরকার। এ তালিকায় রয়েছেন ‘পপসম্রাট’ আজম খান। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।  

বাংলা পপ গান গেয়ে এ দেশের সাধারণ মানুষের মন জয় করেন আজম খান। শুধু তাই নয়, এ ঘরানার গান গেয়ে ‘পপ সম্রাট’ উপাধি লাভ করেন। সবাই তাকে গুরু বলেও সম্বোধন করতেন। আজম খান ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

আজম খান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আজম খান ক্লাস নাইনে পড়াকালীন অনুধাবন করতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি শাসকরা বিভিন্নভাবে দেশের মানুষকে অনেক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এমন অনুভব শক্তি আজম খানকে বিপ্লবী চিন্তার মানুষে পরিণত করে। সেই সময় তিনি জানতে পারেন ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর কথা। গণসংগীতের চর্চা করতেন এই শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা। বন্ধুদের সঙ্গে এই শিল্পীগোষ্ঠী সংগীত পরিবেশন করতে থাকেন আজম খান।

আরো পড়ুন:

ইসলামি রীতিতে দাফন চান কবীর সুমন

‘শয়তানের খপ্পর থেকে পাসপোর্ট উদ্ধার হয়েছে’

ধীরে ধীরে মানুষের প্রশংসা পাওয়ার পর এই শিল্পীগোষ্ঠী ঢাকার বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন। তাদের সাধারণ মানুষের জীবনের অভাব ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরা হতো গানে গানে। প্রতিবাদী গান গাওয়ার জন্য পুলিশের লাঠির বাড়িও খেয়েছেন আজম খান। গণ–আন্দোলনের সময়গুলোতেও গান করে গেছেন বরেণ্য এই শিল্পী।

আজম খানের গাওয়া অনেক জনপ্রিয় গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এত সুন্দর দুনিয়ায়’, ‘অভিমানী’, ‘অনামিকা’, ‘পাপড়ি’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘আসি আসি বলে তুমি আর এলে না’, ‘আমি যারে চাইরে’, ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ও চাঁদ সুন্দর’, ‘বাধা দিয়ো না’, ‘ও রে সালেকা ও রে মালেকা’ ও ‘জীবনে কিছু পাব না রে’।

২০১১ সালের ৫ জুন অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে অনন্তের পথে পাড়ি জমান পপ সম্রাট।

স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে প্রদান করে আসছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এই পদক প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র প্রদান হয়।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ