মেডিকেলে চান্স পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত ইমার
Published: 22nd, January 2025 GMT
চলতি শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ফরিদপুরের মেয়ে ইমা আক্তার। তার মেধাক্রম ২০০৩। তবে ভর্তির টাকা যোগাড় নিয়ে পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। অভাবের সংসারে মেয়ে সুখের উপলক্ষ্য এনে দিলেও মা-বাবার কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। বুধবার দুপুরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌরসভার পূর্ব হাসামদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইমা আক্তারের পরিবারের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
এ সময় ইমা বলেন, যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম; বাড়ির সবার কষ্টের কথা শুনতাম। একবার আম্মুর চোখে সমস্যা ধরা পড়ে; ওষুধ লাগবে কিন্তু কেনা অর্থ নেই। এমন আরও গল্প আছে। ওই কষ্টের দিনগুলোতে তখন মনে মনে সংকল্প করি, মেডিকেলে চান্স পেতেই হবে। পড়াশোনা করেছি আর আল্লাহর কাছে অনেক কান্নাকাটি করেছি। মহান আল্লাহ আমাকে সাহায্য করেছেন। ইমা জানান, আগামী ২-৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেডিকেল ভর্তি হতে হবে। কিন্তু ভর্তির টাকা এখনো যোগাড় হয়নি।
ভাঙ্গা পৌরসভার পূর্ব হাসামদিয়া গ্রামের মেয়ে ইমা। তার বাবা বিল্লাল শেখ মুদি দোকানী এবং মা দোলেনা বেগম গৃহিণী। পরিবারের বড় সন্তান ইমা। তার ছোট দুই বোনের একজন নুসরাত জামিলা ষষ্ঠ শেণির ছাত্রী এবং অন্যজন তাইবা আক্তার মাদ্রাসাছাত্রী।
ইমার বাবা বিল্লাহ শেখ বলেন, আমি আগে বাসচালক ছিলাম, এখন ছোট্ট একটা মুদি দোকান করি। এ থেকে যে আয় হতো তা দিয়ে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছি। অনেক কষ্টে ইমাকে এ পর্যন্ত এনেছি। মেয়েটা ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। ওর নানা বলতো ইমা একদিন বড় ডাক্তার হবে, সে গরীব মানুষের সেবা করবে। আমারও বড় আশা মেয়েকে ডাক্তার বানাবো।
ইমার মা দোলেনা বেগম প্যারালাইসিস রোগী। তিনি বলেন, পরিবারে খোরপোষের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খেতে হয়। মেয়ের পড়াশোনার খরচ কীভাবে যোগাড় করবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
ভাঙ্গা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইকরাম আলী ফকির বলেন, ইমা আক্তার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করেছিল। সে খুবই ভদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থী। এ বছর মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় আমাদের স্কুলের পক্ষ থেকে তার জন্য দোয়া ও শুভকামনা জানাচ্ছি। সে যেন একজন ভালো ডাক্তার এবং মানুষ হিসেবে মানুষের সেবা করতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আমার শুনেছি ইমা দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছে। আমরা চেষ্টা করবো তার ভর্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে। এছাড়াও তার পারিবারিক ও পড়াশোনার ক্ষেত্রে আর্থিক সহযোগিতায় পাশে দাঁড়াবে উপজেলা প্রশাসন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
বাবার ঠিকাদারির লাইসেন্স ছিল, জানিয়ে ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে ‘বাবার ভুলের জন্য’ ক্ষমা চেয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি আজ বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে ক্ষমা চান।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকার বিষয়টি জানিয়ে গতকাল বুধবার রাতে ফেসবুকে পোস্ট দেন এক গণমাধ্যম কর্মী। তিনি বিষয়টির সত্যাসত্য জানতে চান আসিফ মাহমুদের কাছে। আসিফ মাহমুদ খোঁজ করে জানান যে, তাঁর বাবার লাইসেন্স নেওয়ার বিষয়টি সঠিক। আর বিষয়টি তাঁকে জানান বলেও ওই গণমাধ্যম কর্মী তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন। এরপরই আজকে আসিফ মাহমুদ বিষয়টি নিয়ে পোস্ট দিলেন। সেটি হুবুহু তুলে ধরা হলো:
‘প্রথমেই আমার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
গতকাল রাত ৯ টার দিকে একজন সাংবাদিক কল দিয়ে আমার বাবার নামে ইস্যুকৃত ঠিকাদারি লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলেন। বাবার সাথে কথা বলে নিশ্চিত হলাম তিনি জেলা পর্যায়ের (জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার এর কার্যালয় থেকে ইস্যুকৃত) একটি লাইসেন্স করেছেন। বিষয়টি উক্ত সাংবাদিককে নিশ্চিত করলাম। তিনি পোস্ট করলেন, নিউজও হলো গণমাধ্যমে। নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে তাই ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজনবোধ করলাম।
আমার বাবা একজন স্কুল শিক্ষক। আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুঁইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে বাবার পরিচয় ব্যবহার করার জন্য বাবাকে লাইসেন্স করার পরামর্শ দেন। বাবাও তার কথায় জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন। রাষ্ট্রের যেকোন ব্যক্তি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে যেকোন লাইসেন্স করতেই পারে। তবে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়ানো স্পষ্টভাবেই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। বিষয়টি বোঝানোর পর আজ বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে।
বাবা হয়তো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের বিষয়টি বুঝতে পারেন নি, সেজন্য বাবার পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
উল্লেখ্য, মধ্যবর্তী সময়ে উক্ত লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনো কাজের জন্য আবেদন করা হয়নি।’