ফাঁকা চেকে জোর করে সই নেওয়ার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
Published: 22nd, January 2025 GMT
চারঘাটে চাঁদা না পেয়ে ইউসুফপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আমিনকে লাঞ্ছিত করে কলেজের চেকবই ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে পৌর বিএনপির ৩নং ওয়ার্ডের সভাপতি মো. রোকনুজ্জামানসহ তিনজনকে আসামি থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে ভ্যানে চারঘাট বাজারে ফিরছিলেন অধ্যক্ষ নুরুল আমিন। মুক্তারপুর এলাকায় পৌঁছালে তার ভ্যানের গতি রোধ করেন বিএনপি নেতা রোকনুজ্জামান, আব্দুর রাজ্জাক ও তিতাস। তারা অধ্যক্ষের শার্টের কলার ধরে ভ্যান থেকে নামিয়ে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ব্যাগে থাকা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের তিনটি চেকবই এবং রেজুলেশন ও নোটিশ খাতা ছিল। সোনালী ব্যাংকের ফাঁকা চেকে জোর করে সই নিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়াও পকেটে থাকা দুইটি মোবাইল ফোন ও ১০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয়।
অধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন, পাঁচ আগস্টের পর বিএনপি নেতা রোকনুজ্জামান দলবল নিয়ে কলেজে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন। তালা খুলতে বললে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই টাকা না দেওয়ায় ভয়ভীতি দেখায়। মঙ্গলবার পথরোধ করে জনসম্মুখে হেনস্তা করে সবকিছু কেড়ে নেয়। আমি এখনও কলেজে যেতে পারিনি।
কলেজের সভাপতি ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান বিপ্লব বলেন, কলেজের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে রোকনুজ্জামান মামলা করেছেন। বিষয়টি আদালতে সমাধান হবে। কিন্তু দলবল নিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পথে। এছাড়া প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করাও দুঃখজনক।
এ বিষয়ে মো.
চারঘাট মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত চেক ও মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়নি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি ছাড়া সব পদেই আ.লীগের জয়জয়কার
মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থিরা ১৪টিতে জয় পেয়েছেন। সভাপতি পদ ছাড়া অন্য সব পদে তারা জয়ী হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী এমদাদুল হক খান। তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়াকে ৭৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
এদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে ১৫৬ ভোটে পরাজিত করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সদর উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মাহাবুব হোসেন (শাকিল)। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৩০ ভোট ও জালালুর রহমান পেয়েছেন ১৩০ ভোট। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম মিয়া পেয়েছেন ২৯ ভোট (নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় পুনরায় গণনা অথবা লটারি করে বিজয়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে)। সহ-সভাপতি পদে মাহবুব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ পদে শাকিলা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ পদে মশিউর রহমান পারভেজ, কোষাধ্যক্ষ পদে সুজন ভৌমিক, সম্পাদক (লাইব্রেরি) পদে মুনীর হাসান, সম্পাদক (মহরার) পদে এ কে এম আজিজুল হক মুকুল নির্বাচিত হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী ৫টি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিজয়ী ৫ জন হলেন সৈয়দা তাহমিনা খানম, এনামুল হক, আবদুস সালাম, ইকবাল হোসেন ও আবু সুফিয়ান। এ ছাড়া সম্পাদক (অ্যাপায়ন ও বিনোদন) পদে বদরুন নাহার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক গোলাম মাওলা আকন্দ মুঠোফোনে জানিয়েছেন, মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ছাড়া ১৪টি পদেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী কিংবা সমর্থক বিজয়ী হয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে সরাসরি আওয়ামী লীগের পদে থাকা কোনো নেতা অংশগ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগের কোনো আইনজীবী নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তিনিও অন্য সবার মতন বিজয়ী হতেন বলে আমি মনে করি। যারা নির্বাচিত হয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন।
তবে এমদাদুল হক খান সভাপতি পদে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের সমর্থন নিয়েই বিজয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের কেউ প্রার্থী না হওয়ায় তাদের সমর্থক আইনজীবীরা নির্বাচনে মূলত এমদাদুল হক খানকেই ভোট দিয়েছেন। সেকারণেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়া পরাজিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমান বলেন, এমদাদুল হক খানকে নির্বাচিত করায় সব আইনজীবীদের ধন্যবাদ। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তার বিজয়ে আমরা আনন্দিত।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য মাদারীপুর আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন জানান, সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুজন সমান ভোট পাওয়ায় তাদের ছয়মাস করে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।